শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ১২:১৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
ভাঙ্গুড়ায় পশু-পাখির হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে চিকিৎসকরা মাঠে ভাঙ্গুড়ায় ভুমি অফিসের অনলাইন কার্যক্রমে হযরানি কমেছে,নামজারি নিষ্পত্তি তরান্বিত ভাঙ্গুড়ায় অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের পাশে ইউএনও ভাঙ্গুড়ায় অগ্নিকান্ডে ক্রীড়া শিক্ষকের বাড়ি ভষ্মিভুত! ৩০ লাখ টাকার ক্ষতি ভাঙ্গুড়ায় প্রচন্ড গরম উপেক্ষা করে ক্লাস করছে প্রাথমিক শিক্ষার্থীরা ! অস্বস্তিতে ছাত্র-শিক্ষক প্রশংসনীয় উদ্যোগ- ভাঙ্গুড়ায় তাপদাহে পিপাসার্ত মানুষকে আনসার কমান্ডারের পানীয় সেবা অস্বাভাবিক গরমেও খুলছে প্রাথমিক বিদ্যালয়, বন্ধ থাকবে প্রাক-প্রাথমিক ভাঙ্গুড়ায় দাদন ব্যবসার ফাঁদে পড়ে নি:স্ব হচ্ছে ক্ষুদ্র কৃষক ও ব্যবসায়ী সর্বজনীন পেনশন স্কিম- ভাঙ্গুড়ায় ৪ মাসে একাউন্ট ওপেন হয়েছে মাত্র ১৪২ ভাঙ্গুড়ায় প্রাণি সম্পদ বিভাগের জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সমাপনী ঘটলো সেবা সপ্তাহের

যারা ধর্ষকের ফাঁসি চায়; তারাও বিশ্বাস করে ধর্ষণের কারণ মেয়েরাই : তসলিমা

অনলাইন ডেস্ক:
  • আপডেটের সময় : শুক্রবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২০
  • ৩৮৭ সময় দর্শন
  • Print This Post Print This Post

বাংলাদেশের ছেলেমেয়েরা গত দু’দিন ধরে ধর্ষণের প্রতিবাদ করছে। ধর্ষণটা সারা বছর চলে। প্রতিবাদটা কিন্তু বরাবরই সিজনাল। অভিনেতা অনন্ত জলিল নাকি ধর্ষণের জন্য ধর্ষককে নয়, মেয়েদের দোষ দিয়েছেন। এ কি নতুন কিছু? ছেলেমেয়েরা অবশ্য অনন্ত জলিলের ওপর ক্ষেপেছে। অনন্ত জলিলের মতটাই, মানি বা না-মানি, প্রায় সকলেরই মত। অনন্ত জলিল চাপে পড়ে ক্ষমা চেয়েছেন। ওই ক্ষমা তিনি অন্তর থেকে চাননি।

তার স্বতস্ফূর্ত প্রথম বক্তব্যই তার অন্তরের কথা, যা তিনি বিশ্বাস করেন। ক্ষমা চাওয়ার পরও বিশ্বাস করেন। স্রোতের অনুকূলেই যেতে হয় বলে গিয়েছেন। অভিনেতা মোশারফ করিমকে ঠিক এর উলটো কথা বলার অপরাধে ক্ষমা চাইতে হয়েছিল। উনি বলেছিলেন পোশাকের কারণে ধর্ষণ ঘটে না। ওই মন্তব্য করার পর মোশারফ করিমকেও চাপের মুখে ক্ষমা চাইতে হয়েছিল। হ্যাঁ, সত্য বলার জন্য তিনি ক্ষমা চেয়েছিলেন। সংশোধন করে মোশারফ করিম যা বলেছিলেন তা হলো পোশাকের কারণেই ধর্ষণ ঘটে।

ঘটনাটি কবে ঘটেছিল? দু বছর/ তিন বছর আগে? এই ক’দিনে দেশ কি এত ভালো হয়ে গেল যে অনন্ত জলিলকে ক্ষমা চাইতে হয় মেয়েদের পোশাকের কারণে ধর্ষণ ঘটে বলার জন্য? না, দেশ আগের মতো নষ্টই আছে, আগের মতোই নারীবিদ্বেষী। শুধু কিছু লোকের প্রতিবাদের বাই উঠেছে বলে মনে হচ্ছে দেশ বদলে গেছে। দেশের কিছু বদলায়নি, কাল থেকেই আবার পুরোদমে ধর্ষণ শুরু হবে।

এখনও হচ্ছে ধর্ষণ, আমরা খবর পাচ্ছি না। ঘরে ঘরে স্বামীরা কি স্ত্রীদের আজ ধর্ষণ করছেন না? নিশ্চয়ই করছেন। ধর্ষণ করার অধিকার, স্বামীরা বিশ্বাস করেন, তাদের আছে। সব বুদ্ধিজীবী, রাজনীতিক, মন্ত্রী, মহামন্ত্রী, সমাজপতি প্রমুখও বিশ্বাস করেন আছে। আছে মনে করেন বলেই তো জোর জবরদস্তি স্ত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করা আইনের চোখে আজও ধর্ষণ বলে গণ্য হয় না।

যারা ধর্ষককে ফাঁসি দেওয়া, ধর্ষকের ধর্ষদণ্ড কর্তন করা, ধর্ষককে ক্রশফায়ারে মেরে ফেলা ইত্যাদির জন্য চিৎকার করছে, তাদের অধিকাংশই খুব গোপনে বিশ্বাস করে ধর্ষণের কারণ মেয়েরাই। মেয়েরা যদি সংযত হয়ে চলাফেরা করতো, যদি ঠিকঠাক পোশাক পরতো, রাতে একা না বেরোতো, তাহলে ধর্ষণ হতো না। তাদের কেউ কেউ যে সুযোগ পেলে ধর্ষণ করবে না এ ব্যাপারে আমি নিশ্চিত নই।

বাংলাদেশের বড় বড় বুদ্ধিজীবীই বিশ্বাস করেন ধর্ষণে। বিশ্বাস করেন মেয়েদের না মানে হ্যাঁ, বিশ্বাস করেন একটু জোর না করলে যৌন সঙ্গমে আনন্দ নেই। সাধারণ মানুষ ব্যতিক্রম হলে কতটাই বা হবে! তবু হোক প্রতিবাদ। এইসব প্রতিবাদের ফলে, মুশকিলটা হলো, ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড জারি করে সরকার তড়িঘড়ি দায়মুক্ত হবে। ধর্ষণের মূল কারণগুলোর চর্চা চলতেই থাকবে সমাজে। তাতে সরকারের কিচ্ছু যাবে আসবে না।

-তসলিমা নাসরিনের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজ থেকে

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
২০২০© এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ*
ডিজাইন - রায়তা-হোস্ট সহযোগিতায় : SmartiTHost
smartit-ddnnewsbd