1. admin@ddnnewsbd.com : admin : ddn newsbd
  2. mamahbubulalom@gmail.com : mahbubul alom : mahbubul alom
বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:৪৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :

সোশ্যাল মিডিয়া ফেস করতে সততা ও সাহসের জোর থাকা প্রয়োজন !

প্রতিবেদকের নাম :
  • আপডেটের সময় : বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ৩১ সময় দর্শন

মাহবুব উল আলম : A digital platform is an online infrastructure that enables different users or groups to share information, communicate, conduct business, or perform other activities through software and technology.  ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম হল একটি অনলাইন অবকাঠামো যা বিভিন্ন ব্যবহারকারী বা গোষ্ঠীকে সফ্টওয়্যার এবং প্রযুক্তির মাধ্যমে তথ্য ভাগাভাগি করতে, যোগাযোগ করতে, ব্যবসা পরিচালনা করতে বা অন্যান্য কার্যকলাপ সম্পাদন করতে সক্ষম করে। সোশ্যাল মিডিয়া ডিজিটাল প্লাটফরমের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।  আধুনিক যুগে টিকে থাকতে সোশ্যাল মিডিয়াকে ভয় পেলে চলবে না। যদিও এখানে অনলাইন প্রতারণা ব্যাপক বেড়েছে এবং নিবন্ধনহীন সীমের ব্যবহার সবাইকে ভাবিয়ে তুলেছে। সাইবার ক্রাইম বেড়েছে বহুমাত্রায়। তারপরও ক্রাইম দমনে পিছু হওয়া যাবেনা।  সততা ও সাহসের সাথে মোকাবেলা করতে হবে। সাহসের জন্য ব্যক্তিকে সৎ হওয়াও প্রয়োজন।

আদিম যুগের কথা একবার ভাবুন তো ! মানুষের জীবন তখন কেমন ছিল ?  মানুষ নিরাপদ জীবনের জন্য বড় বড় গাছের ডাল আর গুহায় আশ্রয় নিত । ঝড়,বৃষ্টিসহ প্রাকৃতিক দূর্যোগের সময় বাঘ- সিংহসহ ভয়ংকর প্রাণিরাও তো সেখানেই আশ্রয় খুঁজতো ! তখন আবার ছুটতে হতো অন্য কোথাও। এভাবেই মানুষের অনন্ত যাত্রা । এখানে ভয়-ভীতি উপেক্ষা করে সততা ও সাহসের সাথে যাত্রা করতে না পারলে ছিটকে পড়তে হবে।

অতীতে মানুষ হিংস্র প্রাণিকে ভয় পেত কিন্তু এখন ভয় পায় সোশ্যাল মিডিয়াকে। এখানে সহজে মানুষের চরিত্র হনন করা যায়! মান্ধাতার যুগে একটি মেয়ের বিয়ের আগে পাড়ার দুষ্ট-বখাটে ছেলেরা কাগজে আবোল-তাবোল লিখে ঘরের বেড়ার সাথে লাগিয়ে দিত,যাতে মেয়েটার বিয়ে ভেঙ্গে যায়। আবার বিভিন্ন ব্যক্তির ঠিকানায় পোস্ট করেও তারা তাদের স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করতো। একইভাবে তারা সমাজের গুণিব্যক্তিদের বিরুদ্ধেও লেগে থাকে হীনস্বার্থে। সময়ের পরিবর্তনে দুষ্ট লোকেরা ফেসবুকে জায়গা করে নিয়েছে। বলাই বাহুল্য, তাদের নেতিবাচক শিক্ষা গতিশীল হতে হতে ডিজিটালে রুপ নিয়েছে। তবে এদর সংখ্যা খুবই নগন্য। পৃথিবীতে ভালো মানুষের সংখ্যা অনেক অনেক বেশি। তারা ভালো কাজের মধ্য দিয়ে সৃষ্টিকর্তার সন্তোষ্টি ও মানুষের কল্যাণ করে চেলেছেন।

এমন প্রশ্ন জাগতেই পারে যে, একজন মানুষের বিপক্ষে আরেকজন কখন লাগে ? কারণ খুব সিম্পলও হতে পারে।

জার্মান ধর্মতত্ত্ববিদ, অধ্যাপক এবং গির্জা সংস্কারক মার্টিন লুথার বলেছেন, “কিছু মানুষ তোমাকে পছন্দ করেনা। ব্যাপারটা এমন নয় যে তুমি তার কোনো ক্ষতি করেছো। তবুও তুমি তার কাছে অপন্দের মানুষ। কেউ হয়তো তোমাকে অপছন্দ করে কারণ তুমি তার চেয়ে ভালো কাজ জানো।

তুমি জনপ্রিয় ,তোমাকে লোকে পছন্দ করে সেটাও অপছন্দনীয় হওয়ার কারণ। কেবল কারো ক্ষতি করলেই তুমি তার অপছন্দের হবে তা নয়। অপছন্দের ব্যাপরটা আসে ঈর্ষাকাতরতা থেকে। মানুষের সহজাত চরিত্রেই এই অনুভুতির প্রভাব আছে।”

এই প্রভাব থেকে আমরা কেউ মুক্ত নই। এজন্য আত্মার পরিশুদ্ধি দরকার। ধর্ম এমন শিক্ষাই মানুষকে দিয়েছে। মানুষের ভালো কাজের অভ্যাস,নীতি-নৈতিকতা ও চরিদ্রবান হওয়া ছাড়া সহজাত প্রবৃত্তি এড়ানো কঠিন। ব্যক্তি শিষ্ঠাচার ছাড়া সমাজ পরিবর্তন সম্ভব নয়।

এ প্রসঙ্গে মার্টিন লুথার এর আরো একটি উক্তি রয়েছে  , “Darkness cannot drive out darkness, only light can do that. Hate cannot drive out hate, only love can do that.”- অর্থাৎ অন্ধকার, অন্ধকার দূর করতে পারে না, কেবল আলোই তা করতে পারে। ঘৃণা ঘৃণাকে তাড়িয়ে দিতে পারে না, কেবল প্রেমই তা করতে পারে।”

এখন যদি প্রশ্ন করি,তাহলে প্রেমে মানুষ আত্মহনন করে কেন ? খুবই স্বাভাবিক এর উত্তর-হতাশা ! প্রকৃতপক্ষে প্রেমের অর্থ যারা জানেনা তারাই সম্ভবত এমনটি করেন।  শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বলেছেন,”বড় প্রেম শুধু কাছেই টানে না দূরেও ঠেলিয়া দেয়” । ভালোবাসা শুধু আকর্ষণই করে না, বরং কখনও কখনও séparation বা বিচ্ছেদের কারণও হতে পারে।

কাজী নজরুল ইসলাম তার প্রিয়তমা নার্গিসকে ছেড়ে পাওয়ার চেয়ে বেশি পেয়েছেন তাঁর সৃষ্টিশীল কাজ ও আত্মিক শান্তি, যা তাঁর “নার্গিস” নামক গীতি-কবিতা ও “শেষ প্রার্থনা”র মতো কবিতার মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। নজরুল তাঁর এই বিচ্ছেদকে কেন্দ্র করে এমন সব সৃষ্টিশীল কাজ করেন যা তাঁর শিল্প সত্তাকে আরও শক্তিশালী করে।

জাতি হিসাবে আমাদের যে ত্যাগ, সাহস ও আকাংখা বাংলাদেশিতে পরিণত করেছে তা এক ভয়াবহ যুদ্ধের ফসল। অথচ ভীরু ও কাপুরুষেরা তাদের ষড়যন্ত্র থেকে সরে আসেনি। আমরা এখনো খারাপ কাজকে না বলতে শিখিনি। যারা এসব অপছন্দ করে তারাও মনে মনে প্রকাশ করে ! তাই সাহস আর সততা নিয়ে এগুতে না পারলে আমাদের  বিপর্যয় নিশ্চিত বলা যায়।

দ্বিজেন্দ্রলাল রায় তার নন্দলাল কবিতায় নন্দের অনেক স্বপ্নের কথা বলেছেন কিন্তু শেষে কি হলো !—

নন্দ বাড়ির হ’ত না বাহির, কোথা কি ঘটে কি জানি,
চড়িত না গাড়ি, কি জানি কখন উল্টায় গাড়িখানি।
নৌকা ফি-সন ডুবিছে ভীষণ, রেলে ‘কলিসন’ হয়,
হাঁটতে সর্প, কুকুর আর গাড়ি-চাপা পড়া ভয়।
তাই শুয়ে শুয়ে কষ্টে বাঁচিয়া রহিল নন্দলাল !

সমাজে নন্দলাল হয়ে বসে থাকলে চলবেনা। মাঠে থেকে সত্যের জন্য লড়াই করতে হবে,মিথ্যার বিরুদ্ধে। সবকিছু উন্মোচন করতে হবে জনসমক্ষে। এটাই গণতন্ত্রের শিক্ষা।  সম্প্রতি ভাঙ্গুড়ার সাবেক ইউএনও নাজমুন নাহার সম্পর্কে একটি দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ হয়। সেটি ইউএনও উপজেলা প্রশাসনের পেজে শেয়ার করলেন এবং তীব্র প্রতিবাদ জানালেন। সেইসঙ্গে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে তদন্ত করে দেখে মিথ্যা প্রচারকারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের অনুরাধ জানালেন। হাতে গোনা ১/২জন ছাড়া ৯৯.৯৯% পাঠক ইউএনওকে সাপোর্ট করে ঐ সংবাদের নিন্দা জানান।

কারো প্রলোভনে কথিত বিএনপি ভাঙ্গুড়া পেজ থেকে ইউএনও’র ওপর ব্যক্তিগত (অশ্লীল ভাষায়) আক্রমণ  করে পোস্ট দেওয়া ছেলেটি আড়ালে থেকে ডেভিলের হাসি হেসেছিল !  কিন্তু ছেলেটি জানেনা যে মহান আল্লাহ ছাড় দেন কিন্তু কাউকে ছেড়ে দেননা। বিএনপির বেনামী পেজ খুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেলেটি অসংখ্য মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে চরিত্র হনন করেছে। নি:সন্দেহে  এটা ছিল জঘন্য,ঘৃণিত ও নিন্দনীয় কাজ।

সেই ছেলেটি ধরা পড়ে মানুষের কিল ঘুষি খেয়ে লাল দালানে বসে আছে ! যারা ছেলেটিকে প্রলোভন দিয়েছিল তাদের কি হবে ? নিশ্চয় হবে অনেক কিছু। এখন ইউএনও এবং ব্যাংকার তানিয়াসহ অনেকের বিষয়টি লোকের কাছে পরিষ্কার হয়েছে।  মিথ্যাচার বেশি সময় টিকে থাকতে পারেনা। ভুল মানুষেরই হয়। আবার সংশোধনের সুযোগও থাকে।

ইউএনও নাজমুন নাহারকে ধন্যবাদ এই জন্য যে, তিনি সততা ও সাহস দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ফেস করেছেন। উন্নয়ন কাজের মাধ্যমে তার পরিচয়ও মেলে। কাজ দিয়েই তিনি নিজেকে সত্য প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছেন। প্রশাসনের ভীত আরো শক্ত ও মজবুত করেছেন। সেইসঙ্গে স্কুল কলেজে শিক্ষার্থীদের সামনে নৈতিক শিক্ষার বয়ান দিয়ে তাদের অনুপ্রাণিত করেছেন। সেসব তিনি ফেসবুকে আপলোড করেছেন। যার ফলাফল সুদূরপ্রসারী এবং ইতিবাচক।

প্রত্যেকটি উপজেলা প্রশাসনের ফেসবুক পেজ রয়েছে। সিরাজগঞ্জের খামারখন্দ উপজেলায় ইউএনও হিসাবে যোগদান করেই বিপাশা হোসাইন আপডেট করে তার আগমন জানান দিয়েছেন। তিনি একজন স্বনামধন্য লেখক ও কবি। প্রশাসক হিসাবে তার যোগ্যতা ও দক্ষতা দু’টোই সমানে সমান।

এ ক্ষেত্রে পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলা প্রশাসন পিছিয়ে থাকবে কেন ? নতুন ইউএনও তাপস পাল ৭ সেপ্টেম্বর ‘২৫ যোগদান করলেও ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসনের পেজ আপডেট করা হয়নি। কারণ কি তাহলে সোশ্যাল মিডিয়াকে এভোয়েড করা ! নাকি ব্যস্ততায় ভুলে যাওয়া ! কারণ যেটাই হোক না কেন তিনি পুর্বে অন্য কোথাও ইউএনও ছিলেন এবং এখানে যোগদানের পর যতদুর শোনা যায় তিনি কাজের প্রতি খুব আগ্রহী এবং আন্তরিক। তারও সাহস এবং সততা দুটোই রয়েছে বলে আস্থা রাখতে চাই। তার কর্ম তৎপরতা জনগণকে অবশ্যই জানার সুযোগ করে দিতে হবে।

মানুষ শ্রেষ্ঠ জীব হিসাবে প্রতিটি কাজের জন্য হিসাব দিতে হবে। আল্লাহর ইবাদতের পাশাপাশি মানুষের সেবা অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ। ইসলাম ধর্মে পবিত্র কোরানের পরেই হাদিসের অবস্থান। হাদিসে এমন বর্ণনা এসেছে যে,একজন মানুষ অন্য মানুষের জন্য যা যা করবে,আল্লাহ তায়ালা তার জন্য হুবহু তাই করবেন। রাসুল(সা:) বলেছেন,বান্দা আল্লাহর দিকে এক বিগত এগিয়ে গেলে তিনি এক হাত এগিয়ে আসেন। যখন মানুষ এক হাত এগিয়ে যায় তখন আল্লাহপাক তার দিকে দৌড়িয়ে যান-বোখারী ।

শয়তান ইবলিশকেও আল্লাহ তায়ালা মাফ করতে চেয়েছিলেন কিন্তু  ইবলিশ আসলে মাফ নিতে রাজি নয়। শয়তান ইবলিসের অনুরোধে একবার মুসা (আঃ) সুপারিশ করলেন্।  আল্লাহ তাআলা শয়তানকে আদমের কবরে সিজদা করে তওবা করতে বলেন। শয়তান এই তওবার শর্ত পূরণ করতে অস্বীকার করে এবং ক্ষমা না চেয়েই পলায়ন করে। এবারও শয়তান তার পূর্বের অহংকার প্রদর্শন করে, ফলে সে ক্ষমা থেকে বঞ্চিত হয়।

এই ঘটনা থেকে বোঝা যায়, শয়তান কখনো আন্তরিকভাবে অনুতপ্ত হয় না এবং তার অহংকারের কারণে সে কখনো ক্ষমা পায় না। কারণ সে আদমের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দাবি করে। মানুষ তো শয়তান নয়,শয়তানের প্রলোভনে বিপথগামী মাত্র। সেজন্য মানুষের সাহস এবং সততা দিয়ে খারাপের মোকাবেলা করা উচিত। মৃত্যুর আগপর্যন্ত অনুতপ্ত ও ভুল স্বীকারের মাধ্যমে ক্ষমা পাওয়ার যোগ্যতাও মানুষের রয়েছে।

সোশ্যাল মিডিয়া এমন এক প্লাটফরম যেখানে মানুষের কল্যাণ-অকল্যাণ দু’টোই গতিশীল। তবে ভালো মন্দ বিচারের ক্ষমতা মানুষের রয়েছে।  মানুষ যখন নেশায় জরিয়ে যায় তখন সে বার বার সে কাজটি-ই কেবল করতে থাকে ,আর মনে করতে থাকে এটিই একমাত্র কাজ যা তাকে প্রশান্তি দেবে। এই ভ্রম থেকে বের হতে পরিবারে নৈতিক শিক্ষার প্রাকটিস বাড়াতে হবে। নৈতিকতা মানুষের মধ্যে সততার জাগরণ ঘটায় এবং সাহস স্ঞ্চার করে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
২০২০© এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ*
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Smart iT Host