ঢাকা–পাবনা সরাসরি ট্রেন সার্ভিস চালু সহ পূর্ব ঘোষিত চারটি প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে শেকড় পাবনা ফাউন্ডেশনের নির্বাহি কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার ( ৯ ডিসেম্বর )বিকালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সভাপতি খান হাবিব মোস্তফা। সভা থেকে সর্বসম্মতভাবে দাবি করা যে, ২০২৩ সালের মে মাসে মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন পাবনায় এসে ওই বছরের সেপ্টেম্বর থেকে ঢাকা–পাবনা সরাসরি ট্রেন চালুর ঘোষণা দিয়েছিলেন। রাজনৈতিক সংকীর্ণতা এবং সুবিধাভোগী মহলের চক্রান্তে ট্রেন সার্ভিস চালু করা সম্ভব হয় নাই। এরপর ২০২৪ এর গণবিপ্লবের পর রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব বিভিন্ন সময়ে “দ্রুততম সময়ের মধ্যে” ট্রেন চালুর আশ্বাস দিয়েছেন। এভাবে এক বছর অতিবাহিত হলেও ট্রেন সার্ভিস চালুর বিষয়ে কার্যকর কোন অগ্রগতি এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান হয়নি। যা,পাবনা বাসীর সাথে এক ধরনের বৈষম্য ও প্রতারণার শামিল।
পাবনাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রানের দাবি ঢাকা-পাবনা সরাসরি এক্সপ্রেস ট্রেন সার্ভিস। শেকড় পাবনা ফাউন্ডেশন এই দাবি বাস্তবায়নের পক্ষে জনমত গঠন, সাধারণ সভা,মানববন্ধন,গণস্বাক্ষর কর্মসূচি,বারবার সংবাদ সম্মেলন সহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে। সর্বশেষ,চলতি বছরের ১৮ অক্টোবর পাবনা প্রেসক্লাবে জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ট্রেন সার্ভিস চালুর দাবি জানায়। কিন্তু, প্রধান উপদেষ্টার সড়ক, সেতু ও রেল যোগাযোগ বিষয়ক বিশেষ সহকারী শেখ মইনুদ্দিন মঙ্গলবার ঈশ্বরদীতে এসে ২০২৬ সালের মার্চ মাসে ট্রেন চালুর ঘোষণা দিয়েছেন। তার এই বিলম্বিত ঘোষণায় আমরা শুধু হতবাক হইনি,এটি সম্পূর্ণ অগ্রহনযোগ্য ও গণ প্রত্যাখ্যাত। আমাদের প্রশ্ন হলো,এই সরকার কি ওই সময় পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবে? নাকি, উনারা কোন রাজনৈতিক দলকে বিশেষ সুবিধা দিতে চাচ্ছেন? নাকি, এই বিলম্বিত ঘোষণার মাঝে অন্য কোন দুর্ভিসন্ধি আছে?
বারবার ঘোষণা দেওয়ার পরেও ট্রেন সার্ভিস চালু না হওয়ায় পাবনাবাসীর মনে আজ গভীর সন্দেহ তৈরি করেছে। আমরা আশঙ্কা করছি, কোনো অদৃশ্য মহল কৌশলে এ প্রকল্প বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি করছে।
রেলকে শুধু যাত্রী পরিবহনের মাধ্যম হিসেবেই নয়, বরং মালামাল পরিবহন ও আঞ্চলিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হিসেবে গড়ে তুলতে পাবনা–ঢাকা রুট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই,কোন অজুহাতেই ট্রেন সার্ভিস চালু বিলম্বিত করার সুযোগ নেই।
শেকড় পাবনা ফাউন্ডেশন মনে করে পাবনার মানুষ বিপ্লব পরবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে তাদের অধিকার চেয়েছে। এই সরকারের মেয়াদ কালেই আমাদের দাবি পূরণ করতে হবে। প্রধান উপদেষ্টার সড়ক, সেতু ও রেল যোগাযোগ বিষয়ক বিশেষ সহকারীকে তার ঘোষণা পুনর্বিবেচনা করে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যেই ঢাকা–পাবনা সরাসরি এক্সপ্রেস ট্রেন সার্ভিস চালুর ঘোষণা দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। এ সময়সীমার মধ্যে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে শেকড় পাবনা ফাউন্ডেশন পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী পাবনাবাসীকে সাথে নিয়ে পরবর্তী কর্মসূচি গ্রহণ করবে। সেক্ষেত্রে, ঢাকার রেল ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনসহ রেলপথ অবরোধের মতো কর্মসূচিও ঘোষণা করা হতে পারে।
শেকড় পাবনা ফাউন্ডেশন আবারও সংশ্লিষ্ট সকল নীতি-নির্ধারকদের কাছে আহ্বান জানাচ্ছে—প্রতিশ্রুতির পর প্রতিশ্রুতি না দিয়ে দ্রুত বাস্তবায়নের মাধ্যমে পাবনাবাসীর দীর্ঘদিনের কাঙ্খিত দাবিটি পূরণ করুন।