বহুল আলোচিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া–২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে নামার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। দলীয় মনোনয়ন না পেলেও সরাইল, আশুগঞ্জ ও বিজয়নগরের একাংশ নিয়ে গঠিত এই আসনেই নির্বাচনী লড়াই চালিয়ে যাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন তিনি।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি দুই দফায় ২৭২টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করলেও শুরুতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া–২ আসনটি ফাঁকা রাখা হয়। দলীয় সূত্রে তখন ধারণা ছিল, শেষ পর্যন্ত এই আসনেই রুমিন ফারহানার নাম আসতে পারে। তবে আসন সমঝোতার কারণে শেষ পর্যন্ত সেই প্রত্যাশা পূরণ হয়নি।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি জানায়, আন্দোলনের শরিকদের সঙ্গে সমঝোতার অংশ হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া–২ আসনে তারা নিজস্ব কোনো প্রার্থী দেবে না। একই সঙ্গে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের প্রার্থী হিসেবে মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিবের নাম ঘোষণা করা হয়। এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে কার্যত বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ পড়েন রুমিন ফারহানা।
দলীয় মনোনয়ন না পেলেও নির্বাচনে থাকার সিদ্ধান্তের কথা নিশ্চিত করেছেন রুমিন ফারহানা। তিনি বলেন, “দল থেকে মনোনয়ন না পেলেও আমি ব্রাহ্মণবাড়িয়া–২ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করব।” তিনি আরও জানান, মনোনয়নপত্র কেনার আগেই সম্মানের সঙ্গে দলীয় পদ থেকে পদত্যাগ করবেন এবং দু’একদিনের মধ্যেই মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করবেন।
দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে কোনো সাংগঠনিক শাস্তির মুখে পড়তে হবে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে রুমিন ফারহানা বলেন, “আশা করি সেটা আমার সঙ্গে হবে না।” একই সঙ্গে তিনি এলাকার ভোটারদের প্রতি আস্থার কথা তুলে ধরে বলেন, “আশা করি এই এলাকার মানুষের ভালোবাসা এখনো আমার সঙ্গে আছে। তারা এর জবাব ভোটের মাধ্যমেই দেবে।”
এর আগেও এলাকায় এক কর্মসূচিতে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছিলেন রুমিন ফারহানা। সেখানে তিনি বলেছিলেন, “আমি যা বলি, আমি তা–ই করি। ভালো হইলে বা মন্দ হইলে, সেটা আমার দায়িত্ব। আপনারা যদি আমার পাশে থাকেন, মার্কা যা–ই হোক, নির্বাচন করব আমি সরাইল–আশুগঞ্জ থেকেই।”
এদিকে একই সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, আসন সমঝোতার মাধ্যমে কোনো শরিক দলকে আসন ছেড়ে দেওয়ার পর যদি বিএনপির কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হন, তাহলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই বক্তব্যের পরও রুমিন ফারহানার স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া–২ আসনের রাজনীতিকে নতুন করে আলোচনায় এনেছে।