বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, দেশের গণতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখতে হলে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন জরুরি। আমরা এমন একটি নির্বাচন চাই যেখানে কোনো বিদেশি শক্তির হস্তক্ষেপ থাকবে না। দেশের জনগণের অধিকার ও স্বার্থ রক্ষা করতেই এ রকম একটি নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
শনিবার বেলা ১১টায় যশোর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জেলা রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।তিনি বলেন, বিগত সময়ে যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে এসেছে, তারাই সেই চেতনার নামে ফ্যাসিবাদকে প্রশ্রয় দিয়েছে, গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে এবং জনগণের ভোটাধিকার হরণ করেছে।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন যশোর জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক গোলাম রসুল।বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আজীজুর রহমান ও মাওলানা আবুল কালাম আজাদ।
অধ্যাপক পরওয়ার ভারতের ভূমিকাকে বাংলাদেশের জন্য হুমকি উল্লেখ করে বলেন, ভারত বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারা এক স্বীকৃত খুনিকে আশ্রয় দিয়ে নতুন করে ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করছে। এ বিষয়ে দেশের জনগণকে সতর্ক থাকতে হবে। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আমাদের সর্বস্তরের মানুষকে সচেতন করতে হবে।
তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। কোনো বিদেশি কিংবা স্বার্থান্বেষী শক্তি যদি আগামী নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে, তাহলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আরেকটি গণ-অভ্যুত্থান গড়ে তুলতে হবে। প্রয়োজনে বুকের তাজা রক্ত দিয়েও সে প্রতিরোধ বাস্তবায়ন করতে হবে।
জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে জামায়াতের অবস্থান তুলে ধরে অধ্যাপক পরওয়ার বলেন, আমরা সব সময় সবার অংশগ্রহণে একটি স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চেয়ে এসেছি। এখনো তাই চাই। তবে এই মুহূর্তে দিনক্ষণ চূড়ান্ত করে কিছু বলতে চাই না। তবে এটা নিশ্চিতভাবে বলছি—যতক্ষণ না খুনিদের বিচার এবং প্রয়োজনীয় সাংবিধানিক ও প্রশাসনিক সংস্কার সম্পন্ন হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত দেশে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, এই সংস্কার ও বিচার প্রক্রিয়া পরিচালনার দায়িত্ব অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের। তারা যেন দ্রুত এই কাজ সম্পন্ন করে একটি নির্দিষ্ট নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণা করে—তাহলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে তাতে কোনো আপত্তি থাকবে না।
‘স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও জাতি হিসেবে আমরা কেন এখনো ঐক্যবদ্ধ হতে পারিনি, সে প্রশ্ন তুলে অধ্যাপক পরওয়ার বলেন, কিছু মীমাংসিত বিষয়কে আবার সামনে এনে জাতিকে বিভক্ত করার চেষ্টা চলছে। এটা সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। এ ধরনের ষড়যন্ত্রকারীদের রুখে দিতে হবে। জাতিকে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ রক্ষার আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে হবে।
সূত্র: আমার দেশ।