অনলাইন ডেস্কঃ
‘নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে হিন্দুদের বাড়িঘর, মন্দির কিংবা পূজামণ্ডপে হামলার ঘটনায় আমার সংশ্লিষ্টতা বিন্দুমাত্র প্রমাণ করতে পারলে রাজনীতিই ছেড়ে দেবো। আমার ৫০ বছরের রাজনৈতিক, সামাজিক ও পারিবারিক জীবনকে হেয় প্রতিপন্ন করতেই এ ধরনের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।’
গতকাল সোমবার নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে বিভিন্ন মন্দিরে হামলা ও সহিংসতার ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পুলিশ জানায়, জবানবন্দিতে এ ঘটনায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলুসহ বিএনপি-জামায়াতের ১৫ নেতার সম্পৃক্ততার বিষয়ে তথ্য দিয়েছেন। এরপর আজ বিকেলে গণমাধ্যমের সঙ্গে মুঠোফোনে এসব কথা বলেন সাবেক মন্ত্রী বরকত উল্লাহ বুলু।
তিনি বলেন, ‘যারা এ ধরনের ষড়যন্ত্র করছেন, অবিলম্বে তাদের বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। একজন মুসলমান হিসেবে কোরআন শপথ করে বলছি, এ ঘটনায় বিন্দুমাত্র সংশ্লিষ্টতা থাকলে আমি রাজনীতি করব না, দেশ ত্যাগ করব। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছেন, তাদের দুনিয়ায় বিচার না হলেও আল্লাহর কাছে দায়ী থাকবেন। বেগমগঞ্জবাসীসহ পুরো দেশবাসীর কাছে তারা দায়ী থাকবেন।’
বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ‘বেগমগঞ্জে হিন্দুদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, মন্দির ও বাড়িতে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় নোয়াখালীতে প্রশাসনিকভাবে সংবাদ সম্মেলনে আমার নাম আনা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতাকে থানায় না রেখে পুলিশ লাইনে আটকে রেখে ১৬৪ ধারায় তার জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনার পরপরই আমি গণমাধ্যমে বক্তব্য দিয়েছি। ভারতে যখন বাবরি মসজিদ ভাঙা হয়, তখন আমি হিন্দুদের পাশে কীভাবে ছিলাম তা বেগমগঞ্জবাসী জানে। আমি বিশেষভাবে অনুরোধ করব, ১০৫ বছর বয়সী শ্রীকৃষ্ণ মিস্টান্ন ভান্ডারের মালিক বাবুর সম্পত্তি দখল হয়ে যাওয়া সম্পদ কীভাবে উদ্ধার করেছি তাকে জিজ্ঞাসা করলেই পাওয়া যাবে।’
বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, ‘রামঠাকুর আশ্রমের সাধারণ সম্পাদক গৌতম ঠাকুর, ইসকনের সভাপতি, লোকনাথ মন্দির বা রামমাধব মন্দিরের সভাপতিকেও আমার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে। হিন্দু ব্যবসায়ী বা তাদের সম্প্রদায়ের নেতাদের জিজ্ঞাসা করলেই আমার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবে। আমি আবারও হিন্দুদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, মন্দির ও বাড়িতে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্ত দাবি করছি।’
সাবেক মন্ত্রী বরকত উল্লাহ বুলু আরও বলেন, ‘বিএনপি একটি অসম্প্রদায়িক দল। আমরা সব সময় সম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাস করি। এই সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সৃষ্টি করেছেন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। অবিলম্বে দোষীদের শাস্তি দিতে হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে দেখতে পেলাম বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। অবিলম্বে এটা বন্ধ করতে হবে। আটক হওয়া বিএনপি নেতা-কর্মীদের ছেড়ে দিতে হবে।’