অনলাইন ডেস্কঃ
রংপুরের পীরগঞ্জে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের অন্যতম হোতা বহিস্কৃত ছাত্রলীগ নেতা সৈকত মন্ডল ও মসজিদের ঈমাম রবিউল ইসলাম ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ঘটনার দায় স্বীকার করেছেন। আজ রোববার সন্ধ্যায় রংপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিচারক দেলোয়ার হোসেনের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন তারা।
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে সৈকত মন্ডল ও রবিউল ইসলামের ঘটনার দায় স্বীকারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরেস চন্দ্র। তিনি জানান, কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে বিকেলে রংপুর কারমাইকেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের দর্শন বিভাগ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত সৈকত মন্ডল ও তার সহযোগী বটেরহাট মসজিদের ঈমাম রবিউল ইসলামকে রংপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে নেওয়া হয়। সেখানে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ শেষে বিচারক তাদের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
ওসি বলেন, সৈকত মন্ডল ও রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে র্যাব-১৩ এর ডিএডি আবদুল আজিজ বাদী হয়ে পীরগঞ্জ থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছেন। পীরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুদীপ্ত শাহীনকে ওই মামলা তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনায় পুলিশি রিমান্ডে থাকা ৩৭ জন আসামির রিমান্ড শেষে তাদেরও আদালতে তোলা হয়। শুনানি শেষে বিচারক তাদের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
তিনি আরও বলেন, পীরগঞ্জের সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আজ রোববারের একটিসহ মোট ৩টি মামলা হয়েছে। এ ছাড়া বাড়িঘরে হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনায় পৃথক আরেকটি মামলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৭ অক্টোবর রাতে ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে পীরগঞ্জে রামনাথপুর ইউনিয়নের জেলেপাড়ার হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ ঘটনায় ১৫টি পরিবারের বাড়িঘর ও গবাদিপশুসহ সবকিছু আগুনে পুড়ে যায়। প্রায় ৫০টি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়। এ সময় গরু-ছাগল, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা-পয়সা লুটপাট করা হয়। এ ঘটনায় পীরগঞ্জ থানার এসআই ইসমাইল হোসেন বাদী হয়ে বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনায় ১টি এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরেকটি মামলা দায়ের করেন। এ ছাড়া পীরগঞ্জ থানার এসআই সাদ্দাম হোসেন বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরেকটি মামলা দায়ের করেন। দায়েরকৃত পৃথক ৪টি মামলায় এ পর্যন্ত ৬৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।