সিরাজগঞ্জের যমুনাবেষ্টিত কাজীপুরের যমুনার চরে নাটুয়াপাড়ায় জমে উঠেছে ভাসমান পাটের হাট। এই হাট থেকে সহজেই পাট পরিবহন করতে পারায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে হাটটি। ফলে কাজীপুর ছাড়াও পার্শ্ববর্তী জামালপুর, বগুড়া ও টাঙ্গাইল জেলা থেকে চাষি ও ব্যাপারীরা এসে পাট বেচাকেনা করছেন এই হাটে।
কাজীপুর কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৫ হাজার ৫৫৫ হেক্টর জমিতে পাটের চাষ হয়েছে। উৎপাদন হয়েছে প্রায় ১২ হাজার ৭২৮ টন পাট। জমি থেকে পাট কাটা ও ধোয়ার পর শুরু হয়েছে বাজারজাতকরণ।
জানা যায়, কাজীপুর উপজেলার চরাঞ্চলের ছয়টি ইউনিয়নের জমিতে উৎপাদিত পাট বিক্রি করতে এবং আশপাশের বিভিন্ন উপজেলা থেকে পাট বিক্রির জন্য এই হাটে নিয়ে আসেন চাষিরা। বর্তমানে বাজারে পাটের ভালো দাম থাকায় উৎপাদন খরচ পুষিয়ে লাভবান হচ্ছেন তারা। যমুনা নদীর পাড়ে উপজেলার চরাঞ্চলে একমাত্র নাটুয়াপাড়ায় সপ্তাহে দুই দিন শনি ও বুধবার ভোরে পাটের হাট বসে। যমুনার চরে পাটের উৎপাদন ও মান ভালো হওয়ায় ব্যাপারী ও ক্রেতাদের হাঁকডাকে জমে উঠেছে বেচাকেনা। প্রতি মণ পাট ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকায় বেচাকেনা হচ্ছে।
সরিষাবাড়ী উপজেলার পাটের পাইকার সাহেদ আলী জানান, পাট কিনে এক নৌকা থেকে অন্য নৌকায় তোলা সহজ হয়। যোগাযোগের সুবিধা হয় এবং পরিবহন খরচ কম পড়ে। প্রতি হাটে তিনি ৪০ থেকে ৬০ মণ পাট নৌকা থেকে কিনে থাকেন।
চরগিরিশের পাটের ব্যাপারী হাদিউল ইসলাম বলেন, ‘অন্য হাট থেকে কিনে নৌকায় তুলতে অসুবিধা হয়। তাই নৌকা থেকে পাট কিনি।’ তিনি প্রতি হাটে ৬৯-৭০ মণ পাট কেনেন।
চর নাটুয়াপাড়ার কৃষক আব্দুর রশিদ মণ্ডল বলেন, ‘আমি তিন বিঘা জমিতে পাটের চাষ করেছিলাম। ফলন ভালো হয়েছে। বিক্রিও করতে পারছি বেশি দামে।’
হাট কমিটির সদস্য আব্দুর রহিম মাস্টার বলেন, পাট কিনতে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর, কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী ও জামালপুরের মাদারগঞ্জ থেকে অনেক পাইকার পাট কিনতে আসেন। প্রতি হাটে ১-২ হাজার মণ পাট কেনাবেচা হয়।
হাট ইজারাদার ও নাটুয়াপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান চান বলেন, এই হাটে কাজীপুরের বাইরে বিভিন্ন উপজেলা থেকে পাট কিনতে পাইকাররা আসেন। এবার পাটের দাম ভালো থাকায় কৃষকেরা খুশি।
কাজীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রেজাউল করিম জানান, এ বছর বন্যায় পাটের তেমন ক্ষতি হয়নি। ফলে কৃষকেরা সময়মতো পাট কাটতে পেরেছেন। তিনি আরও জানান, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া ও জামালপুর জেলার লোকজন কাজীপুর হাটে পাট বেচাকেনা করতে আসেন।