রাজশাহীর পুঠিয়ায় শিলমাড়িয়া ইউনিয়নের দিয়ারপাড়া গ্রামে ৬০ বছরের বৃদ্ধা স্ত্রীর পরকীয়ার সন্দেহে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে তার মানসিক ভারসাম্যহীন স্বামী হাবিবুর রহমান (৬৫)।
শুক্রবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে নিজ শোবার ঘরে হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন হত্যাকারী স্বামী হাবিবুর রহমান।
নিহতের নাম মাছুরা বেগম (৬০)।এ ঘটনায় নিহতের ভাই মহসিন আলী শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে বাদী হয়ে হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে পুঠিয়া থানায় মামলা করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত মাছুরা বেগম পাঁচ সন্তানের জননী। এরমধ্যে দুই ছেলে এবং তিন মেয়ে রয়েছে। এরমধ্যে বড় ছেলে তাদের সঙ্গেই থাকতেন।
এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পুঠিয়া থানার ভারপাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল ইসলাম।তিনি জানান, খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের স্বামী হাবিবুরকে আটক করা হয়েছে।
ঘটনার বিবরণ সম্পর্কে ওসি জানান, শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার সময় এই ঘটনাটি ঘটেছে। আসামি নিজেই ব্যাপারটি স্বীকার করেছে।
তিনি আরও বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে আসামি জানায়, রাতের খাবার খেয়ে সবাই ঘুমিয়ে পড়ে। সাহাবিবুরের ঘরের পাশেই থাকেন তার বড় ছেলে। বড় ছেলের দরজার শিকল দিয়ে লাগিয়ে দেন হাবিবুর। তারপর ঘুমন্ত স্ত্রীকে এলোপাথারিভাবে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেন হাবিবুর।
এসময় চিৎকার শুনে পাশের ঘর থেকে ছেলে বের না হতে পেরে পিছনের গ্রিল ভেঙে পরবর্তীতে তার মায়ের ঘরের দিকে যান। কিন্তু সেটিও বন্ধ ছিল। দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকলেও ততক্ষণে তার মা মারা যান।
তিনি জানান, পরিবারের লোকজন জানিয়েছে হাবিবুর রহমানের মানসিক সমস্যা আছে। এছাড়াও তিনি প্রায়ই স্ত্রীর সাথে ঝগড়া করতেন। ১৫-২০ বছর ধরে এই একই সন্দেহ ছিল তার স্ত্রীর ওপর।
আসামির অভিযোগ, তিনি বাসা থেকে বের হলেই বাড়ির আশেপাশে কিছু যুবক ঘোরাফেরা করে। অথচ বাস্তবে এমন কোনো ঘটনায় নেই বলে জানিয়েছে পরিবার ও তার আশপাশের বাসিন্দারা।
শিলমাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন মুকুল বলছেন, পারিবারিক কলহের ঘটনা প্রায়ই শোনা যেতো হাবিবুর ও তার বাড়ির লোকজনের কাছ থেকে। কিন্তু হাবিবুর এতোটা উন্মাদ আচরণ করবেন তা জানা ছিল না।
লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রামেক মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি সব স্বীকার করেছেন। তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে বলে জানান ওসি রেজাউল ইসলাম।