বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে নির্মিত হয় শহীদ মিনার। দেশের বিভিন্ন স্থানে নির্মিত শহীদ মিনারের আকার-আকৃতিতে রয়েছে ভিন্নতা। নিজেদের ইচ্ছামতো শহীদ মিনারগুলো তৈরি করা হয়েছে যা ভাষা আন্দোলনের ৬৯ বছর পরও একই আদল পায়নি।
একই ধরনের শহীদ মিনারের আকৃতি দাবি জানিয়ে আসছে নওগাঁর সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘একুশে পরিষদ’। ২০১৬ সাল থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ, সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ ও পবিত্রতা রক্ষার দাবিতে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটি।
তাদের দাবি, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আদলে- মার তার সন্তানদের আগলে রাখছে। মা মাঝখানে পিঠে হাত দিয়ে ধরে রাখছে। একটু বাঁকানো হবে মিনারগুলো। পেছনে সূর্য হবে। দুই পাশে দুটো স্তম্ভ থাকবে।
একুশে পরিষদ নওগাঁর সভাপতি অ্যাডভোকেট ডিএম আব্দুল বারী বলেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনারের আকৃতি বিভিন্ন রকম। শহীদ মিনারে একজন মা মাথা হেলে তার সন্তানকে আদর সোহাগ করছে এমন আকৃতি দিতে হবে। গোল লাল বৃত্ত থাকবে পেছনে। কিন্তু কোথাও লাল বৃত্ত শহীদ মিনারের সামনে, কোথাও পেছনে আবার কোথাও একেবারেই নেই।
তিনি আরও বলেন, সারাদেশে শহীদ মিনারের আকার ও অবয়ব যেন একই রকম থাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে এ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এখন থেকে যে শহীদ মিনার হবে তা যেন ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আদলে তৈরি করা হয়।
নওগাঁ সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামসুল আলম বলেন, সরকারি বরাদ্দে যখন কোনো কিছু তৈরি করা হয় তখন সারাদেশে একই ডিজাইনে হয়। যখন আমরা নিজেরাই শহীদ মিনার তৈরি করি তখন বিভিন্ন ডিজাইনের হয়ে থাকে। তাই যদি কেউ স্বতঃস্ফূর্তভাবে স্বপ্রণোদিত হয়ে শহীদ মিনার তৈরি করেন তাদের সম্মান জানানো উচিত। তবে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে তৈরি করা হলে সেটা খুবই ভালো।
১৯৯৪ সালে ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী নওগাঁর কিছু প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবী, অধ্যাপক, আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, চিকিৎসক, সরকারি কর্মকর্তা, ছাত্রনেতা ও বেশ কিছু মানুষের সম্মিলিত প্রয়াসে ‘একুশে পরিষদ’ গঠন করা হয়। অসাম্প্রাদিয়ক চেতনা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে এ সংগঠনটি।