মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, বীর-উত্তম খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিবাহিনীর ডেপুটি চিফ অব স্টাফ এবং স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আবদুল করিম খন্দকার (এ. কে. খন্দকার) আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছে শেকড় পাবনা ফাউন্ডেশন।
এক শোকবার্তায় ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, এ. কে. খন্দকারের মৃত্যুতে জাতি হারালো মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের এক কিংবদন্তি সৈনিককে। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি বাংলাদেশ বাহিনীর ডেপুটি চিফ অব স্টাফ হিসেবে অসামান্য ভূমিকা পালন করেন। যুদ্ধকালীন কৌশলগত সিদ্ধান্ত, সাংগঠনিক দক্ষতা ও দৃঢ় নেতৃত্বে তিনি স্বাধীনতার সংগ্রামকে সুসংহত করতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।
শোকবার্তায় আরও উল্লেখ করা হয়, পরাজিত পাকিস্তানি সেনাদের আত্মসমর্পণের ঐতিহাসিক মুহূর্তে বাংলাদেশের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন এ. কে. খন্দকার। স্বাধীনতার পর তিনিই প্রথম বাংলাদেশ বিমান বাহিনী প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং বিমান বাহিনীকে একটি সুসংগঠিত ও কার্যকর বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।
রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের ধারাবাহিকতায় তিনি রাষ্ট্রদূত, মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং পাবনা-২ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। একই সঙ্গে তিনি একজন চিন্তাশীল লেখক হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরেন। তাঁর লেখা গ্রন্থ ‘১৯৭১: ভেতরে বাইরে’ দেশের ইতিহাসচর্চায় একটি অমূল্য সংযোজন হিসেবে বিবেচিত।
শেকড় পাবনা ফাউন্ডেশন জানায়, মুক্তিযুদ্ধের একজন সম্মুখসারির যোদ্ধা হয়েও প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরার কারণে তিনি বিভিন্ন সময়ে সমালোচনা ও প্রতিকূলতার মুখে পড়েছেন। তবে দেশপ্রেম, সত্যনিষ্ঠা ও আদর্শে তিনি ছিলেন আপসহীন।
শোকবার্তায় ফাউন্ডেশনের সভাপতি খান হাবিব মোস্তফা এবং সেক্রেটারি ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান খান মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজন, সহযোদ্ধা ও স্বজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
বলা হয়, এ. কে. খন্দকারের কর্ম, চিন্তা ও আদর্শ নতুন প্রজন্মের জন্য আজীবন অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। জাতির ইতিহাসে তাঁর নাম চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।