বাংলাদেশের চলমান গণতান্ত্রিক উত্তরণ ও সংস্কার কর্মসূচির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ প্রতিশ্রুতি দেন।
বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল উপস্থিত ছিল। তাঁদের মধ্যে ছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া এবং এসডিজি সমন্বয়ক লামিয়া মোর্শেদ। বৈঠকে রাজনৈতিক সংস্কার, আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন, ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানে সংঘটিত গণহত্যার দায় নিরূপণ, বৈশ্বিক বাণিজ্যে সুরক্ষামূলক শুল্কনীতির প্রভাব এবং ৩০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় আন্তর্জাতিক রোহিঙ্গা সম্মেলনসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হয়।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস মহাসচিবকে জানান, অন্তর্বর্তী সরকার ইতোমধ্যে সংস্কারমুখী পদক্ষেপ নিয়েছে, যার লক্ষ্য একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজন করা। তিনি বলেন, “আগামী কয়েক মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে জাতিসংঘের সহযোগিতা প্রয়োজন।” ইউনূস অভিযোগ করেন, ক্ষমতাচ্যুত সরকার ও তাদের সহযোগীরা পাচার করা অর্থ ব্যবহার করে দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে এবং ফেব্রুয়ারির নির্বাচনকে বানচাল করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
এর জবাবে মহাসচিব গুতেরেস বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ প্রক্রিয়া ও সংস্কার কর্মসূচিতে জাতিসংঘের দৃঢ় সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি রোহিঙ্গা সংকটের দীর্ঘমেয়াদি সমাধানে জাতিসংঘের অঙ্গীকারও তুলে ধরেন।
প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বের প্রশংসা করে গুতেরেস বলেন, “গত ১৪ মাসে বাংলাদেশের এই কঠিন উত্তরণ প্রক্রিয়ায় আপনার নেতৃত্ব আমি শ্রদ্ধা করি ও প্রশংসা করি।”
বৈঠকে অধ্যাপক ইউনূস ৩০ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক রোহিঙ্গা সম্মেলন আয়োজনের জন্য মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, এই সম্মেলন রোহিঙ্গা সংকটকে বৈশ্বিক আলোচনায় অগ্রাধিকার দেবে এবং শরণার্থী শিবিরে মানবিক সহায়তার জন্য তহবিল সংগ্রহে ভূমিকা রাখবে। মহাসচিব প্রতিশ্রুতি দেন, রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানের পথে জাতিসংঘ বাংলাদেশের পাশে থাকবে।
সূত্র: এফএনএস।