অন্তর্বর্তী সরকার দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত শিক্ষক নিয়োগের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা সংশোধন করে বাধ্যতামূলকভাবে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে সর্বদলীয় ইসলামী শিক্ষা রক্ষা জাতীয় কমিটি। সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়, অবিলম্বে দাবি মেনে নিয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে দেশজুড়ে আন্দোলন করা হবে।
গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ইসলামী শিক্ষা রক্ষা জাতীয় কমিটির আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, আমাদের সমাজে দুর্নীতি, অন্যায়, অবিচার, মাদক, নৈতিক অবক্ষয় দিন দিন বেড়েই চলছে। এর প্রধান কারণ হলো ধর্মীয় শিক্ষার ঘাটতি। যদি প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একজন ধর্মীয় শিক্ষক থাকতেন, যিনি শিক্ষার্থীদের ঈমান, আকিদা ও নৈতিকতা শিক্ষা দিতেন, তবে তারা সৎ, আল্লাহভীরু ও চরিত্রবান মানুষ হতো।
তিনি বলেন, গানের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের নাচ গানের মাধ্যমে সাময়িক আনন্দ দিতে পারেন, কিন্তু নৈতিকতার সঙ্গে তাদের চরিত্র গড়ে তুলতে পারবেন না। বিজ্ঞান শিক্ষক প্রযুক্তি শেখাতে পারেন, কিন্তু ঈমান শেখাতে পারেন না। অথচ ধর্মীয় শিক্ষক একজন শিক্ষার্থীকে জ্ঞানী করার পাশাপাশি তাকওয়াবান ও সৎ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন।
অধ্যাপক মুজিব বলেন, ছাত্ররা ধার্মিক হয়ে গড়ে উঠলে তাদের হৃদয়ে তাকওয়া ও নৈতিকতা প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর অন্যান্য শিক্ষক তাদের বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, সাহিত্য ও কলা শেখাবেন। ইঞ্জিনিয়ার ও ডাক্তার গড়ে তুলতে পারবেন। সৎ ও যোগ্য আইনজীবী, সাংবাদিক ও সুনাগরিক গড়ে তুলতে পারবেন। এভাবেই একটি প্রকৃত শিক্ষিত, নৈতিক ও আদর্শবান জাতি গড়ে তোলা সম্ভব।
সংগঠনটির পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একজন যোগ্য ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ, ধর্মীয় শিক্ষকের যোগ্যতা নির্ধারণ, ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের একটি স্বতন্ত্র নিয়োগ প্রক্রিয়া তৈরি করা, কওমি মাদরাসা থেকে দাওরায়ে হাদিস এবং আলিয়া মাদরাসা থেকে ফাজিল পাস করা ব্যক্তিদের এই পদে নিয়োগ দেওয়া, ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা-২০২৫’ গেজেট সংশোধন করে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের বিধান অন্তর্ভুক্ত করা এবং অন্য ধর্মাবলম্বীদের জন্য তাদের ধর্ম অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন- ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, খেলাফত আন্দোলনের আমির আবু জাফর কাসেমী, জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নায়েবে আমির ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ড. হেলাল উদ্দিন, খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব আতাউল্লাহ আমিন, বাংলাদেশ মসজিদ মিশনের জেনারেল সেক্রেটারি খলিলুর রহমান মাদানী প্রমুখ।
সূত্র: আমার দেশ।