পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) আজ শনিবার। ইসলাম ধর্মের সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী এবং রাসুল হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও মৃত্যুর দিন। গোটা মানবজাতির জন্য শান্তির বার্তা ও আল্লাহর অসীম রহমত নিয়ে ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দে হিজরি রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখের এই দিনে সৌদি আরবের মক্কা নগরীতে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দে একই দিনে তিনি ইন্তেকালও করেন। বিশ্বনবীর এই স্মৃতিময় দিনটি পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) নামে পরিচিত।
ঈদে মিলাদুন্নবী মুসলিম বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব। আজ সারা দেশে যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদায় দিবসটি পালন করা হবে। দিনটি উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ব্যাপক কর্মসূচি নিয়েছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষকালব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করা হয়েছে গতকাল শুক্রবার। এ উপলক্ষে আজ রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে জশনে জুলুস, শোভাযাত্রাসহ নানা কর্মসূচি পালন করা হবে।
ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ বিভিন্ন দলের নেতারা বাণী দিয়েছেন।
ড. ইউনূস তার বাণীতে বলেছেন, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর অনুপম জীবনাদর্শ, সর্বজনীন শিক্ষা ও সুন্নাহর অনুসরণ আজকের এ দ্বন্দ্ব-সংঘাতময় বিশ্বে শান্তি, ন্যায় এবং কল্যাণ নিশ্চিত করতে পারে।
তিনি বলেন, ধর্মীয় ও পার্থিব জীবনে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর সুমহান আদর্শ ও সুন্নাহ বিশ্ববাসীর জন্য উৎকৃষ্টতম অনুসরণীয় ও অনুকরণীয় এবং এর মধ্যেই মুসলমানদের জন্য অফুরন্ত কল্যাণ, সফলতা ও শান্তি নিহিত রয়েছে।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ তার বাণীতে বলেন, আমাদের ধর্মীয় ও পার্থিব উভয় জীবনে বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (স.) -এর শিক্ষা ও জীবনাদর্শ অনুসরণীয়। মহানবী ছিলেন মহানুভবতা, সহনশীলতা, সততা, নিষ্ঠাসহ নানা মানবিক গুণে গুণান্বিত একজন মহামানব, মানবজাতির পথপ্রদর্শক। মহানবী (সা.) মানবতার মুক্তি, সাম্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার যে মহৎ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, তা আজও আমাদের জন্য অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।
তারেক রহমান তার বাণীতে বলেন, হজরত মুহম্মদ (সা.)-এর আবির্ভাব ছিল একটি আলোকিত বিস্ময়। তিনি এই পবিত্র দিন উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের মুসলিম সব মুসলমানকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, মানবজাতি বিশ্ব নবীর আগমনে নিজেদের কল্যাণ ও শান্তির নিশ্চয়তা লাভসহ জগতের সব অন্যায়-অবিচার, কুসংস্কার, নিপীড়ন-নির্যাতন এবং বৈষম্যের ঘোর অন্ধকার যুগ থেকে নিষ্কৃতি লাভের সন্ধান পায়। সেজন্যই তিনি হয়েছেন মানবতার মুক্তির দিশারি।
বছরজুড়ে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর পবিত্র জীবন ও আদর্শ নিয়ে আলোচনা ও চর্চা অব্যাহত রাখার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রতিটি ক্ষেত্রে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আদর্শ অনুসরণ ছাড়া মানবজাতির কল্যাণ সম্ভব নয়। তাকে খণ্ডিতভাবে অনুসরণ করলে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা যাবে না। আর আল্লাহর সন্তুষ্টি ছাড়া কারো জান্নাতে প্রবেশের সুযোগ নেই।
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) পালনের জন্য সরকার, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে মহানবী (সা.)-এর ওপর আলোচনা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল। এ উপলক্ষ্যে বায়তুল মোকাররমে মাসব্যাপী ইসলামী বইমেলার আয়োজনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশও নানা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। দিবসটি উপলক্ষ্যে আজ সরকারি ছুটি।