ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি,পাবনা : হজ্ব ২০২৫/১৪৪৬ হিজরিতে মক্কা-মদিনায় গমনকারি হাজীদের সাথে প্রতারণা ,অসদাচরণ ও অতিরিক্ত অর্থ গ্রহনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবরে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয় এ বছর SB PARADISE TRAVELS & TOURS( ভায়া DBM Travels & Tours) এর মাধ্যমে হজ্বে গমনকারি হাজীদের সাথে অসদাচরণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রতারণা ও অধিক অর্থ গ্রহনের অভিযোগ করা হয়েছে।
জানাগেছে, ঐ এজেন্সির পক্ষে মো.রবিউল করিম PID NO. 07269003 (রবি সরকার) নামের নির্ধারিত হজ্ব গাইড হাজী সংগ্রহ করেন। পাবনার ফরিদপুর থানার কাশিপুর গ্রামে তার বাড়ি এবং আওয়ামীলীগের একনিষ্ঠ কর্মী। রবি সরকার এসবি প্যারাডাইস ট্রাভেলস এনড টুরস এর প্রোপাইটার ও আওয়ামীলীগ নেতা মো.আমিনুর রহমান ওরফে মুকুল সরকারের ভাতিজা।
রবি সরকার হজ্ব ২০২৫/১৪৪৬ হিজরিতে পাবনা জেলার ভাঙ্গুড়া উপজেলা থেকে হাজী সংগ্রহ করেন। সরকারের প্যাকেজ অনুযায়ী মক্কার হারাম শরীফ থেকে পায়ে হেঁটে দশ মিনিটের দূরুত্বে অবাসন ব্যবস্থার প্রতিশ্রুতি দিয়ে উচ্চ প্যাকেজের হাজীদের অনেক দূর জারওয়াল এলাকায় প্রায় আধা ঘন্টার পাহাড়ি পথের একটি হোটেলে রাখেন। অথচ নিকটবর্তী আবাসনের জন্য এ সব হাজীরা ৬,২০,০০০(ছয় লক্ষ বিশ হাজার)টাকার প্যাকেজে টাকা পরিশোধ করেন।
অপরদিকে নিম্ন প্যাকেজে ৫,৩৪,০০০(পাঁচ লক্ষ চৌত্রিশ হাজার)টাকা পরিশোধ করে ঐ এজেন্সির সাথে গমনকারি হাজীরা একই হোটেলে অবস্থান করেন এবং একই খাবার গ্রহন করেন। অথচ অভিযোগকারীদের নিকট থেকে ছয় লক্ষের অধিক টাকা নিয়ে থাকা-খাওয়ায় একই সুবিধা প্রদান করা হয়। যা নিয়ম বহির্ভূত।
কোরবানির পশু ক্রয়ের ক্ষেত্রেও রবি সরকার অসৎ পথ অনুসরণ করেন। তিনি তার কাফেলার কাউকেই সৌদি সরকারের ব্যাংকে টাকা জমা দিতে দেননি। তিনি প্রত্যেক হাজীর নিকট থেকে ৭শ রিয়েল উত্তোলন করেন। তারপর পশু কোরবানির সময় হাজীদের দু’জন প্রতিনিধি উপস্থিত রাখার প্রতিশ্রুতি দিলেও তিনি সেখানে কাউকে না নিয়ে পরে জানান কোরবানি হয়ে গেছে। কোথায় কোরবানি করা হয়েছে তাও কেউ জানতে পারেনি। এছাড়া তিনি পশু ক্রয়ের রশিদ বা ব্যাংকে টাকা জমার ম্লিপ কোনো কিছু প্রদর্শন করতে পারেননি। তার প্রতিটি কথা মিথ্যার ঝুলিতে ভরা।
হজ্ব গাইড রবি সরকার কাফেলার অসুন্থ্য হাজীদের কোনো প্রকার সেবা বা সহযোগিতা করেননি। এমনকি তিনি খোঁজ খবর পর্যন্ত নেননি। ভুক্তভোগী হাজীরা এসব ব্যাপারে কথা বললে তাদের সাথে রীতিমত দুর্ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া ইসলামের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ দর্শনীয় স্থান সমূহে ভ্রমনের সময় তিনি হাজীদের সাথে যাননি। তিনি গাইড অথচ আরবী অক্ষর জ্ঞানও তার নেই। আ্যরাবিয়ানদের সাথে কথা বলা তো দূরের কথা তিনি একটা আরবী /ইংরেজি ওয়ার্ডও বলতে পারেননা। অথচ এই মূর্খ ব্যক্তিকে হজ্ব গাইড হিসাবে সৌদিতে পাঠানো হয় ! যা পুরোপরি অবৈধ।
রবি সরকারের সাথে হজ্ব কাফেলায় গমনকারি ভাঙ্গুড়ার মো. তৈয়ব আলী ও আব্দুল হান্নান জানান, তারা হাজবেন্ড-ওয়াইফ হজ্বে গিয়েছিলেন। তাদের নিম্ন প্যাকেজের হাজীদের সাথে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয় । হারাম শরীফের কাছের হোটেলে রাখার কথা বলে দূরের আহমেদ আল তুর্কি ২২৪৪৮ হোটেল রাখা হয়। তারা বলেন,রবি সরকারের অসদাচরণে তারা ক্ষুব্দ। তাদের দাবি যেহেতু উচ্চ প্যাকেজের হাজী ছিলেন তারা কিন্তু নিম্ন প্যাকেজের সাথে থেকে একই সুযোগ সুবিধা ভোগ করেছেন ! এজন্য অতিরিক্ত ৭৬ হাজার টাকা তারা ফেরত প্রদানের দাবি করেছেন।
অভিযোগ পত্রে স্বাক্ষরকারি মো.আব্দুর রশিদ ও মাহবুব উল আলমসহ অন্য হাজীরাও একই সূরে রবি সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উথ্থাপন করেন। সেই সঙ্গে ভবিষ্যতে রবি সরকারকে হজ্ব কাফেলা থেকে অব্যাহতি প্রদান ও তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহনের আবেদন জানানো হয়েছে।।