নড়াইল জেলা শহর থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরে সদর উপজেলার শেখহাটি ইউনিয়নের আফরা গ্রাম। গ্রামটির পাশ দিয়ে বয়ে গেছে বুড়ি ভৈরব নদ। নদের পূর্ব পাড়ে নড়াইলের শেখহাটি ইউনিয়নের ৮টি ও পশ্চিম পাড়ে যশোর সদর উপজেলার বসুন্দিয়া ইউনিয়নের ৮টি গ্রাম। নদ পারাপারের একমাত্র ভরসা একটি জরাজীর্ণ বাঁশ ও কাঠের সাঁকো। প্রায় ১৩ বছর আগে স্থানীয়দের স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত এ সাঁকো দিয়েই প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন প্রায় ৫০ হাজার মানুষ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সাঁকোটির অনেক জায়গায় পাটাতন ভেঙে গেছে। কাঠের তক্তাগুলো ঢিলে হয়ে পড়েছে, কোথাও আবার খুলে গেছে। ভ্যান, মোটরসাইকেলসহ হালকা যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে সাঁকোর দুই পাশে ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। তবে বিকল্প পথ না থাকায় বাধ্য হয়ে অনেকেই ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো পার হচ্ছেন।
সাঁকোটি প্রথম নির্মাণ করা হয় ২০১২ সালে, শেখহাটি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সেলিম রেজার নেতৃত্বে স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্যোগে। তখন থেকে আজ পর্যন্ত কোনো ধরনের সংস্কার বা নতুন সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। অথচ নদীর দুই পাড়ের হাজারো শিক্ষার্থী, শ্রমিক, কৃষক ও সাধারণ মানুষ এই পথ দিয়েই প্রতিদিন যাতায়াত করে থাকেন।
আফরা গ্রামের বাসিন্দা ইদ্রিস আলি বলেন, “বর্ষাকালে সাঁকোর দুই পাশে কাঁদা হয়ে যায়। পানি জমে থাকে। গাড়ি নিয়ে ওঠানামা করা যায় না। সাত কিলোমিটার ঘুরে বিকল্প পথ ধরতে হয়। মহিলারা চলাচল করতে পারে না, অনেকেই পড়ে যায়।”
তুলারামপুর গ্রামের বাপ্পী সরদার বলেন, “রাতে টর্চ লাইট নিয়ে পা টিপে টিপে চলতে হয়। এত বছর ধরে এই অবস্থায় আছি। কৃষিপণ্যের বাজারজাত, শিক্ষার্থীদের যাতায়াত সব কিছুতেই সমস্যা হচ্ছে।”
শেখহাটি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বুলবুল আহমেদ বলেন, “বুড়ি ভৈরব নদীর ওপরে একটি সেতু হলে দুই জেলার মানুষের চলাচলে বিপুল উপকার হতো। কৃষক, শিক্ষার্থী, শ্রমিকসহ সবাই উপকৃত হতেন।”
নড়াইল এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী বিশ্বজিৎ কুমার কুন্ডু জানান, “বুড়ি ভৈরব নদের ওপর একটি সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে জরিপ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সেতুর ডিজাইনের কাজ চলমান রয়েছে।”
সূত্র : ঢাকা পোস্ট