২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় সংঘটিত বিডিআর বিদ্রোহে নিহত সেনা কর্মকর্তা ও সদস্যদের শহীদের মর্যাদা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। মঙ্গলবার (৪ মার্চ) উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এক প্রজ্ঞাপনে প্রতিবছর ২৫ ফেব্রুয়ারিকে ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। এই দিবসটি ‘গ’ শ্রেণির দিবস হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হবে, তবে এ দিন সরকারি ছুটি থাকবে না।
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পিলখানায় তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর) সদরদপ্তরে সংঘটিত বিদ্রোহ ও হত্যাযজ্ঞে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ জন নিহত হন। এই ঘটনা দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল।
পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের সূচনা হয় দরবার হল থেকে। বিদ্রোহের সময় সেনা কর্মকর্তাদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এই বিদ্রোহ শুধু পিলখানায় সীমাবদ্ধ থাকেনি, দেশের বিভিন্ন স্থানে বিডিআর জওয়ানরাও বিদ্রোহে যোগ দেয়।
বিদ্রোহের পর সীমান্ত রক্ষা বাহিনী বিডিআরের নাম পরিবর্তন করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) করা হয়। এছাড়া বাহিনীর পোশাক ও অন্যান্য নীতিমালায়ও পরিবর্তন আনা হয়।
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচার সম্পন্ন হলেও ক্ষমতার পালাবদলের পর পুনরায় তদন্তের দাবি ওঠে। এই প্রেক্ষাপটে গত ডিসেম্বরে অন্তর্বর্তী সরকার সাত সদস্যের একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করে।
এছাড়া, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক সেনাপ্রধান মইন ইউ আহমেদসহ ৫৮ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
সরকারের এই সিদ্ধান্তে পিলখানা হত্যাকাণ্ডে নিহত সেনা কর্মকর্তা ও সদস্যদের আত্মত্যাগকে জাতীয়ভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হলো। শহীদের মর্যাদা প্রদান এবং ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ পালনের মাধ্যমে তাদের স্মরণ ও সম্মান জানানো হবে।
সূত্র: এফএনএস