উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার অভাবে উল্লাপাড়া উপজেলার পৌর শহরের পাটবন্দর থেকে বেতবাড়ী পূর্ব সাতবাড়ীয়া খেয়াঘাট পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তাটির বেহাল দশা। খানাখন্দে আর কাদামাটিতে ভরা এই রাস্তাটি যানবাহন ও মানুষ চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে বর্ষা, বৃষ্টির দিনে রাস্তার মাঝে অসংখ্য স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়। ভেঙ্গে যায় রাস্তার পাশের মাটি। অনেক স্থানে বড় খালের সৃষ্টি হয়ে সেখানে দিনের পর দিন পানি জমে থাকে। এক হাঁটু কাঁদা হয়ে যায় পুরো পথ। ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় এলাকাবাসীদেরকে। এই রাস্তা দিয়ে এলাকার ১০ গ্রামের মানুষ চলাচল করে থাকে।
উপজেলার পঞ্চক্রোশী ইউনিয়নের বেতবাড়ী, পূর্ব সাতবাড়ীয়া, চর সাতবাড়িয়া, রামকান্তপুর, বেতকান্দি ও লক্ষীপুর গ্রামবাসীদের পক্ষে এনামুল হক, শফিকুল ইসলাম, আমিরুল ইসলাম সরকার, সাইফুল ইসলাম, শামীম হোসেন, আনোয়ার হোসেন জানান, এলাকার ১০ গ্রামের নারী-পুরুষ পাটবন্দর-বেতবাড়ী পূর্ব সাতবাড়িয়া খেয়াঘাট পর্যন্ত এই কাঁচা সড়ক দিয়ে প্রতিদিন উপজেলা সদরের বিভিন্ন অফিস, পৌরসভা ও হাট বাজারে যাতায়াত করে থাকেন।
এই পথ দিয়ে উপজেলা সদরের উল্লাপাড়া বিজ্ঞান কলেজ, সরকারি আকবর আলী কলেজ, এইচ.টি. ইমাম গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ, মোমেনা আলী বিজ্ঞান স্কুল, উল্লাপাড়া মার্চেন্টস সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, উলাপাড়া কামিল মাদ্রাসা ও উলাপাড়া সানফ্লাওয়ার স্কুলে এসব গ্রামের প্রায় ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী যাতায়াত করে থাকে। একটু বৃষ্টি নামলেই রাস্তায় পানি জমে সৃষ্টি হয় কাঁদায়। শিক্ষার্থীরা এই কাঁদা উপেক্ষা করে যেতে হয় তাদের বিদ্যালয়ে। বর্ষা মৌসুম ছাড়া এই কাঁচা রাস্তায় কোনভাবে ভ্যান-রিক্সা চলাচল করে। কিন্তু একটু বৃষ্টি হলেও সৃষ্টি হয় কাঁদার। আর বন্ধ হয়ে যায় ভ্যান-রিক্সা চলাচল।
এছাড়া শিক্ষার্থীরা বর্ষা মৌসুমে এই রাস্তা অতিক্রম করতে গিয়ে খানাখন্দে পড়ে তাদের কাপড়-চোপর এবং বই খাতা নষ্ট করে ফেলে। অন্যদিকে বর্ষা মৌসুমে রাস্তাটি পানি পূর্ণ হয়ে যায়। উলিখিত ব্যক্তিগণ আরো জানান, গ্রামের কেউ অসুস্থ হলে সেখানে এ্যাম্বুলেন্স নেবার মত কোন অবস্থা নেই। অনেক সময় রোগীদেরকে বাইরের হাসপাতালে নিতে বিলম্ব হলে রাস্তাতেই তাদের মৃত্যু হয়। রাস্তাটি সংস্কার এবং পাকাকরণের জন্য পঞ্চক্রোশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে সংশ্লিষ্ট গ্রামবাসীরা অনেকবার আবেদন করেছেন। কিন্তু তাতে কোন কাজ হয়নি। বরং সংস্কার অভাবে রাস্তার অবস্থা আরো খারাপ হয়ে যাচ্ছে। দুর্ভোগ বাড়ছে এই পথে চলাচলকারী মানুষের।
এ ব্যাপারে পঞ্চক্রোশী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম ফিরোজের সঙ্গে কথা হলে তিনি উক্ত রাস্তায় এলাকার লোকজনের চলাচলের দূর্ভোগের কথা স্বীকার করে বলেন, পরিষদের তহবিলে প্রয়োজনীয় অর্থ না থাকায় রাস্তাটি পাকা করা সম্ভব হয়নি। তবে দ্রুত ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সরকারের সৃজন কর্মসূচীর আওতায় এই রাস্তাটি আপাততঃ মাটি ফেলে মানুষের চলাচলের উপযোগী করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।