জাল-জালিয়াতি, কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্যসহ সীমাহীন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠা সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার দৈবজ্ঞগাঁতী এস কে মডেল কারিগরি হাইস্কুল এন্ড বিএম কলেজের প্রতিষ্ঠাতা মো. শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সিরাজগঞ্জের সহকারী কমিশনার মুরাদ হোসেন এর স্বাক্ষরিত একটি স্মারকে রায়গঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে এই নির্দেশনা দেয়া হয়।
উল্লেখ্য যে, এ বিষয়ে (৩ সেপ্টেম্বর) ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর রেহেন্নুমা তারান্নুম নামক এক ভুক্তভোগী লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। একই সঙ্গে অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন- দুদক, র্যাব সদর দফতর, কারিগরি শিক্ষাবোর্ড ও জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর অনুলিপি প্রেরণ করা হয়।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সদ্য এমপিও ভুক্ত হওয়া দৈবজ্ঞগাঁতী এস কে মডেল কারিগরি হাইস্কুল এন্ড বিএম কলেজে (কোড নং- ২৫১৩৩) ভুয়া শিক্ষক নিয়োগে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে অত্র প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা মো. শহিদুল ইসলাম। ২৩ অক্টোবর ২০১৯ প্রতিষ্ঠানটি এমপিও ভুক্তির পরে পুরানো শিক্ষকদের নিকট নতুন করে মোটা অঙ্কের অর্থ দাবি করে নিজ পরিবার ও বেশী অর্থ দেয়া লোকদের নিয়োগ চূড়ান্ত করার পায়তারা করছেন শহিদুল ইসলাম। আর এই তালিকায় রয়েছে তার মেয়ের জামাই, ছেলে, ভাতিজা ও খালাতো ভাইসহ নিকট আত্নীয়রা।
সরেজমিনে গেলে জানা যায়, ২০১৫ সালে নিজ গ্রামের আঙিনায় বিএম কলেজটি প্রতিষ্ঠা করলেও কাগজ কলমে দেখানো হচ্ছে ২০১০ সালে স্থাপিত করা হয়েছে। এরপর চলতি বছরে কলেজটি এমপিওভুক্ত হওয়ায় রমরমা বাণিজ্যে মেতে উঠেন তিনি। এ অবৈধ অর্থে ইতিমধ্যে তিনি উপজেলার অফিস পাড়ায় এক কোটি টাকা মূল্যের জায়গা ক্রয় করেছেন। শুধু তাই নয় সিরাজগঞ্জ ও বগুড়া শহরেও প্রায় দু’কোটি টাকা মূল্যের জায়গা কিনেছে বলে গুঞ্জন রয়েছে। নিয়োগ বাণিজ্যের জন্যই মূলত তিনি একই স্থানে ৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। উপজেলা থেকে ব্রহ্মগাছা রোডের মোড়ে মোড়ে শহিদুল কামর“ন্নাহার কলেজের পোস্টার দেখা গেলেও দেখা মেলেনি সেই প্রতিষ্ঠানের স্থাপনা। এযেন নিয়োগ বাণিজ্যের ফাদ পেতে বসেছেন তিনি।
এদিকে এলাকাবাসী বলছেন, নিয়োগের নামে যে ভাবে শহিদুল বাণিজ্য করেছে তা মুখে বলার ভাষা নেই। প্রতিটি পদের জন্য প্রকাশ্যে কে কত টাকা দিতে পারবেন তা জানিয়ে দেয়া হয়। যে বেশি টাকা দিতে পারবেন তার নিয়োগ হবে। দুটি পদের জন্য দৈবজ্ঞগাঁতী গ্রামের দু’জন প্রায় ৪ বিগা জমিই লিখে দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা মো. শহিদুল ইসলাম পরিদর্শনে আসা কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে এক ঘরেই একাধিক প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড টানিয়ে পরিদর্শকগণকে দেখান বলেও সূত্রে জানা গেছে। জাল-জালিয়াতি ও ভূয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে এমপিও ভুক্ত “দৈবজ্ঞগাঁতী এস কে মডেল কারিগরি হাই স্কুল এন্ড বিএম কলেজের যাবতীয় বিষয়াদি ও অনৈতিক পন্থায় পূণরায় শিক্ষক নিয়োগের পায়াতার সহ সকল বিষয় তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোডের্র চেয়ারম্যানের জর“রি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সচেতন এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা মো. শহিদুল ইসলামকে তার মুঠোফোনে বার বার চেষ্টা করা হলেও তার ফোনটি বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
এবিষয়ে রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, আমি একটি নির্দেশনা পেয়েছি, আমরা এখন দুই পক্ষকেই নোটিশ করে ডাকবো। এবং ঘটনার তদন্ত করবো। তদন্ত পূর্বক আসল ঘটনা চিহ্নিত করে কতৃপক্ষের নিকট প্রতিবেদন জমা দিবো।