বিশেষ প্রতিনিধি: পাবনা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এড.মাসুদ খন্দকার ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন। সোমবার রাতে পাবনা শহরস্থ দক্ষিণ রাঘবপুর মহল্লার নিজ বাসভবন থেকে ডিবি পুলিশ তাকে তুলে নিয়ে যায়। পুলিশ সুপার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে নিয়ে আসা হয়েছে। পরবর্তী কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে।
এদিকে তার গ্রেফতারের খবর ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। তারা অবিলম্বে তাদের নেতা মাসুদ খন্দকারের নি:শর্ত মুক্তি দাবি করেছেন।
মাসুদ খন্দকারের সহধর্মিনী কেয়া মাসুদ জানান,রাত সাড়ে নয়টার সময় ডিবি পুলিশ এসে তাকে নিয়ে গেছে। মাসুদ খন্দকার হৃদরোগের পেসেন্ট। তার হার্টে চারটি রিং পড়ানো। ঢাকায় ডাক্তার দেখানোর কথা ছিল কিন্তু পাবনা জেলা বিএনপির বিশেষ করে পাবনা-৩ (ভাঙ্গুড়া,চাটমোহর,ফরিদপুর) এলাকার বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের খবরে তিনি সোমবার পাবনা চলে আসেন। অতপর তাদের জামিনের জন্য কাগজপত্র সংগ্রহ করে পরদিন আদালতে বিচারকের এজলাসে দাঁড়ানোর জন্য প্রস্তুতি নেন। এর পুবের্ই তাকে আটক করা হয়।
জাতীয়তাবাদী রাজনীতিতে একজন পরিচ্ছন্ন মানুষ হিসাবে মাসুদ খন্দকারের ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে বলে দলীয় কর্মীরা জানান। ছাত্রদল নেতা লিখন সরকার জানান,মাসুদ খন্দকার দলের জন্য নিবেদিত প্রাণ। যুবদল নেতা সোহেল বলেন,মাসুদ ভাইয়ের ইমেজ যখন তুঙ্গে তখন তাকে আটক করা হলো। মিল্টন বলেন,বিএনপির সকল কর্মসূচী তিনি অত্যন্ত জাঁকজমকের সাথে পালন করেছেন।
মাসুদ খন্দকার পাবনা জেলা ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারী ছিলেন। পরবর্তীতে রাজশাহী বিশ্বিবিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে সম্মান শেণিতে ভর্তি হন। সেখানে ছাত্র দলের প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে সক্রিয় হন ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখেন। রাকসুর যুগ্ন সম্পাদকের প্রার্থী ছিলেন তিনি। পরে তিনি হবিবুর রহমান হল ছাত্র সংসদের জিএস নির্বাচিত হন ও ছাত্রদলের অন্যতম কান্ডারী হিসাবে রাজনীতির হাল ধরেন।
পড়ালেখা শেষে পাবনা জর্জকোর্টে আইন পেশা শুরু করেন। পাশাপাশি বিএনপির মুল সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত হন। ভাঙ্গুড়া উপজেলার বাসিন্দা হিসাবে তিনি এখানে উপজেলা বিএনপির দু’বার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরে জেলা বিএনপির রাজনীতিতে যুগ্ন সম্পাদকের দায়িত্ব পান। একজন আইনজীবী হিসাবে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের যে সব নেতাকর্মী পুলিশি হামলা-মামলা ও নির্যাতনের শিকার হন তাদের পাশে জগদ্দল পাথরের মত দাঁড়িয়ে যান তিনি। এ সময় ব্যাপক পরিচিত তৈরি হয় তার।
পাবনা আইনজীবী সমিতির কয়েকবার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। বিএনপি যখন খুবই ক্রান্তিকাল পার করছিল ! দলের নেত্রী খালেদা জিয়া জেলে,নেতাকর্মীরা যখন কোনঠাসা । সমিতির নিয়ন্ত্রন যখন আওয়ামী সমর্থকদের হাতে,ঠিক তখন পাবনা বারের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠে যান এডভোকেট মাসুদ। আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে যতবার তিনি প্রার্থী হয়েছেন,ততবারই তিনি জয় লাভ করেন। এড.মাসুদ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামেরও একজন কেন্দ্রীয় নেতা। পরে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্দেশে তিনি দায়িত্ব পান পাবনা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব পদে।
এডভোটে মাসুদ খন্দকারের ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে পাবনা -৩ এলাকায়। তার সমর্থক ও নেতাকর্মীরা এখানে দীর্ঘদিন ধরে পোষ্টার-ব্যানার সেঁটে এই সংসদীয় আসনের দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে তৎপর রয়েছেন। জেল-জুলুম উপেক্ষা করে তিনি অত্র এলাকায় ব্যাপক সভা-সমাবেশ করেছেন। সবাইকে এক কাতারে এনে দলকে সুসংগঠিত করেছেন।।