অন্যের বসতঘর নিমেষেই ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো। এরপর তা উদযাপনে সন্ত্রাসীদের ভুঁড়িভোজ করালেন স্কুলশিক্ষক মোফাক্কার হোসেন মুকুল। এমনই অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। তবে ওই শিক্ষক বিষয়টি অস্বীকার করে বলেছেন, ঘরটি ছিল আমার নিজের। বিষয়টি নিয়ে আদালত পর্যন্ত মামলা গড়িয়েছে। ঘরটি ছিল উপজেলার চরকাদাই গ্রামের রফিকুল ইসলাম মৃদুলের। মৃদুলের বড় ভাই ইসরাইল হোসেন নিজে বাদী হয়ে মুকুল মাস্টারসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। ঘটনাটি ঘটেছে গত ১৪ সেপ্টম্বর সোমবার উপজেলার চরকাদাই গ্রামে।
জানা গেছে , ইসরাইল পাবনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পাস করে চাকরি নিয়ে সিঙ্গাপুর চলে যান। এর মধ্যে পৈতৃক সূত্রে পাওয়া সম্পত্তির পাশাপাশি নিজের উপার্জিত অর্থ দিয়ে কিছু জায়গা-জমি ক্রয় করেন। দেশে ফিরে নিজের প্রয়োজনে ছোট ভাই ইসমাইল হোসেন দুলাল ও ইসরাইল নিজে উপজেলার ফরিদ পাঙ্গাসী মৌজার আরএস ৭২ দাগের ১৭ শতাংশের ১০ শতাংশ জায়গা জনৈক চানউল্লার কাছে বিক্রি করে দেন। বাকি সাত শতাংশ জায়গার ওপর ইসরাইলের ভাই রফিকুল ইসলাম মৃদুল টিনের ঘর নির্মাণ করেন। বিপত্তি ঘটে চানউল্লা তাঁর জায়গা স্কুলমাস্টার মোফাক্কার হোসেন মুকুলের কাছে বিক্রির পর।
অভিযোগ উঠেছে , মুকুল মাস্টার চানউল্লার কাছ থেকে জায়গা কেনার পর রফিকুলের বসতঘর ভেঙে দিয়ে নিজের জায়গা সম্প্রসারণের জন্য উঠেপড়ে লাগেন। সম্প্রতি মুকুল মাস্টার লোকজন দিয়ে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতার সহযোগিতায় ঘরটি ভেঙে নিয়ে যান। ঘর ভাঙার কাজ শেষ হতেই সেখানে তিনি ভুঁড়িভোজেরও আয়োজন করেন। এমন পরিস্থিতে ইসরাইল শাহজাদপুর থানায় মামলা করতে না এলে থানা থেকে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়। ইসরাইল নিজেই বাদী হয়ে শাহজাদপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে গত ১৬ সেপ্টেম্বর স্কুলশিক্ষক মোফাক্কার হোসেন মুকুলকে ১ নম্বর আসামি করে মামলা করেন। মামলা করে বাদী ইসরাইল ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। গত মঙ্গলবার ইসরাইল জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে শাহজাদপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
তবে শাহজাদপুর থানায় সদ্য যোগদানকারী ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি ) শাহিদুল মাসুদ খান জানান, দুই পক্ষের সমস্যা রয়েছে। তবে মুকুল মাস্টার বসতঘর ভেঙে ঠিক করেননি। তবে ওই দিন খিচুড়ি রান্না করে ভুঁড়িভোজ হয়েছে কি না তা আমার জানা নেই।
শাহজাদপুর থানার এসআই আসাদুর রহমান জানান, ঘটনার দিন খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে ঘরটি আর দেখিনি। তবে মুকুল মাস্টারের উপস্থিতিতে খিচুড়ির আয়োজন দেখেছি।
এদিকে মুকুল মাস্টার জানান, সিমেন্টের শক্তপোক্ত টিনের ঘরটি আমি একাই (নিজে) তৈরি করেছিলাম। লোক দিয়ে সে ঘর আমি ভেঙে দেইনি। আমার জায়গা আমি নিজেই দখলে নিয়েছি।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মোক্তার হোসেন জানান, ঘর ভাঙার সময় আমি নিজেও উপস্থিত ছিলাম। ঘরটি মুকুল মাস্টারের।
ভুক্তভোগী রফিকুল ইসলাম মৃদুলের অভিযোগ, ঘরটি তার জায়গায় ছিল। মুকুল মাস্টার কতিপয় সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে তা ভেঙে নিয়ে গেছেন।
#DDN/মাহবুব-উল-আলম