অভিনেত্রী পরীমণিকে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগে সাভার থানায় দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার হওয়া আসামি ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমির বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৫ জুন) তাদের ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাদের দশ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম নিভানা খায়ের জেসি প্রত্যেকের ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন- (নাসির উদ্দিন মাহমুদ) (৬৫), তুহিন সিদ্দিকী অমি (৩৩), লিপি আক্তার (১৮), সুমি আক্তার (১৯) এবং নাজমা আমিন স্নিগ্ধা (২৪)।
মঙ্গলবার (১৫ জুন) সকালে বিমানবন্দর থানায় মামলার বাদী গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) গুলশান জোনাল টিমের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মানিক কুমার সিকদার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এর আগে ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে সাভার থানায় মামলা দায়ের করা হয়। সোমবার (১৪ জুন) সকালে মামলাটি দায়ের করা হয়। এতে নাসিরসহ দুইজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও আরও ৪ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
পরে এর আগে সোমবার (১৪ জুন) দুপুরে রাজধানীর উত্তরা-১ নম্বর সেক্টরের-১২ নম্বর রোডের বাসা থেকে ওই ৫ জনকে গ্রেফতার করে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
অভিযান শেষে ডিবির যুগ্ম কমিশনার হারুন-অর-রশীদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা (যেখান থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে) পরীমনির কস্টিউম ডিজাইনার অমির বাসা। পরীমনির সংবাদ সম্মেলনের পর থেকে নাসির ওই তিন নারীকে নিয়ে এ বাসায় পালিয়ে ছিলেন। মাদক রাখার অভিযোগে সেই তিন নারীকেও আমরা গ্রেফতার করেছি।’
নাসির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নাসিরের বিরুদ্ধে আগেও মাদক এবং নারী নির্যাতনের মামলা হয়েছে। নানা অভিযোগে তাকে উত্তরা ক্লাব থেকে বহিষ্কারও করা হয়েছে বলে জেনেছি। কেউ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে আমরা সেগুলোর তদন্ত করব।’
এর আগে রোববার রাত ৮টার দিকে ফেসবুকে দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়ে অভিযোগ তোলার পর রাতে সাংবাদিকদের বনানীর বাসায় ডেকে ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরেন তিনি।
পরীমনির স্ট্যাটাস সম্পর্কে জানতে চাইলে পুলিশ সদরদফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স) মো. সোহেল রানা বলেছিলেন, ‘তিনি অবশ্যই ন্যায়বিচার পাবেন। আমরা তার ন্যায়বিচারের জন্য কাজ করব। কেন তিনি আইজিপি স্যারের নাম উল্লেখ করেছেন তা আমি বুঝতে পারছি না। আমরা নিশ্চিত, তিনি মোটেই আইজিপি স্যারের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। আইজিপি স্যার সর্বদা নারী ও শিশুদের অধিকারের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল।’
এরপর রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার বনানীর বাসায় সাংবাদিকদের কাছে ‘নির্যাতনকারীদের’ নাম-পরিচয় প্রকাশ করেন পরীমনি।
সংবাদ সম্মেলনে পরীমনি বলেন, ‘গত বুধবার (৯ জুন) রাত ১২টায় আমাকে বিরুলিয়ায় নাসির উদ্দিন মাহমুদের কাছে নিয়ে যায় অমি। ওই সময় নাসির নিজেকে ঢাকা বোট ক্লাবের সভাপতি হিসেবে পরিচয় দেন। সেখানে নাসির আমাকে মদ খেতে অফার করেন। আমি রাজি না হলে আমাকে জোর করে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে আমাকে চড়-থাপ্পড় মারেন। তারপর আমাকে নির্যাতন ও হত্যার চেষ্টা করেন। অমিও এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত।’