ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় করা মামলাটিতে দণ্ডবিধি ৩০২ ধারা (হত্যা) সংযোজনের আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সিদ্দিক আজাদ এ আদেশ দেন।
আজ রোববার পল্টন থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক রোকনুজ্জামান বাসস’কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে শনিবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ মামলাটিতে ৩০২ ধারা সংযোজন করার জন্য ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করেন।
আবেদনে উল্লেখ করা হয়, শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় করা মামলার এজাহারনামীয় পলাতক আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ রাহুল দাউদ (৩৭) ও অজ্ঞাতনামা সহযোগী আসামিরা গত ১১ ডিসেম্বর ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করা, জনমনে আতঙ্ক ও ভীতি তৈরি করা, সর্বোপরি আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন-২০২৬ কে বাধা প্রদান এবং আগ্রহী প্রার্থীদের মনোবলে আঘাত হানার মধ্য দিয়ে নির্বাচনকে নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। এরই অংশ হিসেবে মতিঝিল মসজিদ (ওয়াপদা মসজিদ) হতে জুমার নামাজ শেষে নির্বাচনী প্রচারণা সমাপ্ত করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যাওয়ার পথে গত ১২ ডিসেম্বর অনুমানিক দুপুর ২ টা ২০ মিনিটের দিকে শরিফ ওসমান হাদিকে বহনকারী অটোরিক্সা পল্টন মডেল থানাধীন বক্স কালভার্ট রোডস্থ ডিআর টাওয়ারের সামনে বিজয়নগর পানির ট্যাংকের অভিমুখী পাকা রাস্তার উপর পৌঁছালে তার (শরিফ ওসমান হাদি) পিছন হতে অনুসরণ করে আসা মোটরসাইকেলে থাকা আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ রাহুল দাউদ ও তার সহযোগী অজ্ঞাতনামা আসামি শরীফ ওসমান হাদিকে চলন্ত অবস্থায় হত্যার উদ্দেশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা গুলি করে পালিয়ে যায়।
এতে আরও বলা হয়, শরিফ ওসমান হাদিকে গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নিয়ে যাওয়া হয়। তার অবস্থা আরো আশঙ্কাজনক হলে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে হাদির শারীরিক অবস্থা আরো আশঙ্কাজনক হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুর নেওয়া হয়। ১৮ ডিসেম্বর তিনি সিঙ্গাপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরন করেন। ১৯ ডিসেম্বর শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ বাংলাদেশে আনা হয়। মামলাটি একটি চাঞ্চল্যকর হত্যার ঘটনা। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে মামলায় দায়েরকৃত ধারার সাথে ৩০২ পেনাল কোড ধারা সংযোজনের আদেশদান প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, শরিফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর গত ১৪ ডিসেম্বর ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের বাদী হয়ে পল্টন থানায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে ১২০(বি)/৩২৬/৩০৭/১০৯/৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।