জুলাই গণহত্যাকে কেন্দ্র করে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া আমৃত্যু কারাদণ্ডের শাস্তি মৃত্যুদণ্ডে পরিবর্তনের জন্য আজ আপিল বিভাগে আপিল দায়ের করবে প্রসিকিউশন।
প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, “আপিল দাখিলের পর বিস্তারিত তথ্য সংবাদ মাধ্যমে জানানো হবে।”
গত ১৭ নভেম্বর ট্রাইব্যুনাল-১ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে দুটি রায় ঘোষণা করে। এক অভিযোগে তাদের আমৃত্যু কারাদণ্ড এবং অন্য একটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি প্রদান করা হয়। সেই রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি সম্প্রতি প্রসিকিউশন হাতে পেয়েছে। এরপর থেকে শাস্তি বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ডে রূপান্তর করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ট্রাইব্যুনাল-১-এর ৩ সদস্যের বিচারিক প্যানেল, যার নেতৃত্ব দেন চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার, ওই রায় দেন। একইসঙ্গে, দেশের সব সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়া মামলায় রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মামলায় ৩ আসামির বিরুদ্ধে ৫টি অভিযোগ আনা হয়েছিল, কিন্তু ট্রাইব্যুনাল রায়ে দুটি অভিযোগের ছয়টি ঘটনার ওপর ভিত্তি করে শাস্তি প্রদান করে। প্রথম অভিযোগে উল্লেখ থাকে ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকার’ বলে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়া এবং সেই রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মাকসুদ কামালের সঙ্গে কথোপকথনে ফাঁসির নির্দেশ দেওয়া। একই সঙ্গে রংপুরে আবু সাঈদকে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় শেখ হাসিনা ও কামালের জন্য আমৃত্যু কারাদণ্ড ঘোষণা করা হয়।
দ্বিতীয় অভিযোগে তিনটি ঘটনা উল্লেখ করা হয়। ২০২৪ সালের ১৮ জুলাই শেখ হাসিনার সঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ফজলে নূর তাপস ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর ফোনালাপে আন্দোলনকারীদের অবস্থান শনাক্ত ও হেলিকপ্টার ও অন্যান্য মারাত্মক অস্ত্র ব্যবহার করে হত্যা নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে ৫ আগস্ট চানখারপুলে ছয়জন আন্দোলনকারী নিহত হন এবং একই দিনে সাভারের আশুলিয়ায় তাদের লাশ পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনার জন্য হাসিনা ও কামালকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হয় এবং তাদের সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
প্রসিকিউশন ইতোমধ্যেই ২৭ নভেম্বর আপিলের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রায়ের ঘোষণার ৩০ দিনের মধ্যে আপিল সম্পন্ন করতে হবে। প্রসিকিউশন আজ সেই আপিল কার্যক্রম শুরু করবে।