নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ, আনন্দমুখর এবং সবার অংশগ্রহণমূলক একটি উৎসব হিসেবে দেখতে চান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি মনে করেন, এই লক্ষ্য অর্জনে সেনাবাহিনীর সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বুধবার ১৯ নভেম্বর মিরপুর সেনানিবাসে ডিফেন্স সার্ভিস কমান্ড ও স্টাফ কলেজের কোর্স ২০২৫ এর গ্র্যাজুয়েশন সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২৪টি দেশের ৩১১ জন তরুণ সামরিক কর্মকর্তা অংশ নেন। তাদের মধ্যে সনদ বিতরণ করেন প্রধান উপদেষ্টা। বক্তৃতায় তিনি ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, দেশবাসীর দীর্ঘদিনের কাঙ্ক্ষিত এই নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ উৎসবে রূপ দিতে সেনাবাহিনীর সহায়তা অপরিহার্য। তিনি বলেন, নির্বাচনকে সত্যিকার অর্থে আনন্দমুখর করতে সামরিক বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
ড. ইউনূস জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সেনাবাহিনীর ভূমিকার কথা স্মরণ করে প্রশংসা করেন। তার ভাষায়, সেনাবাহিনী সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এই কারণেই পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখা সম্ভব হয়েছিল। তিনি বলেন, দেশের সংকটময় মুহূর্তে সেনাবাহিনীর দায়িত্বশীল ভূমিকা জাতি সবসময়ই শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে।
অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া বিভিন্ন দেশের তরুণ সামরিক কর্মকর্তারাও তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। বাংলাদেশি একজন কর্মকর্তা বলেন, ডিএসসিএসসিতে পাওয়া নেতৃত্ব, কৌশল এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক জ্ঞান ভবিষ্যতে যে কোনো জাতীয় সংকটে প্রয়োগ করা যাবে। তিনি বলেন, অর্জিত অভিজ্ঞতা প্রয়োজনে নির্বাচনসহ গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনেও কাজে লাগবে।
চীনের একজন কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশে সামরিক প্রশিক্ষণের মান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গ্রহণযোগ্য মান বজায় রাখছে। তার মতে, ২৩টি দেশের সহকর্মীদের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা বিনিময় তাদের বোঝাপড়া ও পেশাগত সম্পর্ক আরও দৃঢ় করেছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে নিজ নিজ দেশের নিরাপত্তা রক্ষায় কাজে আসবে।
প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে দেশব্যাপী আরেকটি বিষয়ও উঠে আসে। মঙ্গলবার ১৮ নভেম্বর ভারতকে হারিয়ে ২২ বছর পর ফুটবলে বড় সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ দল। এই জয়ের জন্য তিনি জাতীয় ফুটবল দলকে অভিনন্দন জানান। তার মতে, ভারতের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে জয় শুধু একটি ম্যাচের সাফল্য নয়, এটি জাতিকে নতুন অনুপ্রেরণা দেয়। ড. ইউনূস আশা প্রকাশ করেন, এই জয় বাংলাদেশের ফুটবলের গৌরবময় দিনগুলো ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করবে।
তিনি বলেন, খেলাধুলা জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এবং তরুণ প্রজন্মকে ইতিবাচক শক্তিতে উদ্বুদ্ধ করে। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ফুটবলকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে ভবিষ্যতের সরকারগুলোও এই সমর্থন ধরে রাখবে।
সূত্র: এফএনএস।