দেশের বাজারে হঠাৎ বেড়ে যাওয়া পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে না এলে চলতি সপ্তাহেই আমদানির অনুমোদন দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি বলেছেন, দেশে পেঁয়াজের কোনো সংকট নেই, তবে অযৌক্তিকভাবে দাম বাড়ানো হয়েছে।
রোববার (৯ নভেম্বর) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, “পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়েছে, সংরক্ষণের জন্য সরকার ১০ হাজার হাই ফ্লো মেশিনও সরবরাহ করেছে। অথচ বাজারে হঠাৎ করে কেজিতে ৪০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে যাওয়া সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।”
তিনি জানান, ইতোমধ্যে পেঁয়াজ আমদানির জন্য ২ হাজার ৮০০টি আবেদন জমা পড়েছে। আগামী চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে দাম সহনীয় পর্যায়ে না এলে সরকার আমদানির অনুমোদন দেবে। “আমরা বাজার পর্যবেক্ষণ করছি। যদি এ সময়ের মধ্যে দাম না কমে, তবে আমদানির পথে যেতে হবে,” বলেন শেখ বশিরউদ্দীন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, “দেশে কোনো সংকট নেই, বরং যথেষ্ট মজুত রয়েছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসবে। তাই সিন্ডিকেট বা কৃত্রিম সংকট তৈরির চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত দেশে পেঁয়াজ এসেছে মাত্র ১৩ হাজার টন, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম। গত অর্থবছরের একই সময়ে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছিল ২ লাখ ৪৬ হাজার টন।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, এই আমদানির ঘাটতি ও বাজার তদারকির দুর্বলতাই মূলত দাম বৃদ্ধির কারণ। বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি) জানিয়েছে, প্রতিবছর অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর মাসে পেঁয়াজের দাম বাড়ে। এ অবস্থায় কমিশন সীমিত পরিমাণ আমদানির সুপারিশ করেছে, যাতে বাজারে সরবরাহ বাড়ে এবং মূল্য স্থিতিশীল থাকে।
ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান মইনুল খান বলেন, “বর্তমান বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৯০ টাকার মধ্যে থাকার কথা, কিন্তু বিক্রি হচ্ছে ১১৫ টাকার বেশি দামে। পার্শ্ববর্তী দেশে যেখানে দাম প্রায় ৩০ টাকা, সেখানে আমাদের দেশে এই বৃদ্ধি অযৌক্তিক। কৃষকও এর সুফল পাচ্ছেন না, বরং মধ্যস্বত্বভোগীরাই লাভবান হচ্ছেন।”
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমানও ওই সময় উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র: এফএনএস।