আগামী ১৫/২০ দিনের মধ্যে চলনবিল এলাকার মাঠ থেকে বন্যার পানি নেমে যাবে। তখন শুরু হবে সরিষার আবাদ। এর তিন মাস পর ঐসব জমিতে কৃষক আবার বোরো ধানের আবাদ করবেন। যার ফলে কৃষকরা এখনই রাসনায়নিক সার সংগ্রহ করতে ব্যস্ত। ফলে বাজারে দেখা দিয়েছে সার সংকট। পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় ডিলারদের কাছে সার না পেয়ে কৃষক খোলা বাজারে বিভিন্ন দোকান থেকে বেশি দামে সার ক্রয় করছেন। এজন্য বস্তা প্রতি ৪০০ টাকা অতিরিক্ত মূল্য পরিশোধ করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ভাঙ্গুড়া উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের কেবল মাগুড়া মৌজায় ৩২০০ বিঘা জমিতে সরিষা ও বোরো ধানের আবাদ হয়। সরিষার এক বিঘা জমিতে গড়ে ৪০ কেজি সার প্রয়োগ করলেও এখানে ২৫২৬ বস্তা সার প্রয়োজন। সেখানে সংশিল্ট ইউনিয়নের ডিলার চলতি অক্টোবর মাসে বরাদ্দ পেয়েছেন মাত্র ৩৭০ বস্তা। একইভাবে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় মোট ৬৬০০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৭০৫০ হেক্টর। এই দু’টি ফসল আবাদের জন্য উপজেলায় কমপক্ষে ৪২০০০ বস্তা রাসায়নিক সার প্রয়োজন হবে।
উপজেলায় বিসিআইসি’র ৭ জন এবং বিএডিসি’র ১৩জন,মোট ২০জন ডিলার মিলে চলতি অক্টোবর মাসে রাসায়নিক সারের বরাদ্দ পেয়েছেন ৭৪০০ বস্তা। আগামী নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে এর অনুরুপ বরাদ্দ পেলে কোনোভাবেই ঘাটতি পূরণ হবে না। এজন্য এলাকার কৃষকরা আগাম সার সংগ্রহের জন্য হন্য হয়ে ছুটছেন।
মাগুড়া গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম ও মানিক হোসেন বলেন,সরিষা আবাদে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় ডিএপি সার কিন্তু বাজারে এই সারের সংকটের কারণে প্রতি ব্যাগে ৪/৫শ টাকা বেশি লাগছে। তিনি আরো বলেন,বাজারে সার আছে অথচ ডিলারের ঘরে নির্ধারিত মূল্যে পাওয়া যাচ্ছেনা। এজন্য কৃষকরা দু:শ্চিন্তায় পড়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কৃষক বলেন, বলা নিষেধ,তারপরও কষ্ট নিয়ে বলতে হচ্ছে ডিলারদের ঘরে সার রয়েছে কিন্তু নির্ধারিত মূ্ল্যের চেয়ে ৪ শ টাকা বেশি দিয়ে ডিএপি সার সংগ্রহ করা যাচ্ছে। উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি জেনেও না দেখার ভান করছেন বলেও কৃষকের ক্ষোভ রয়েছে বলে তিনি জানান।
দিলপাশার ইউনিয়নের বিসিআইসি’র ডিলার খাদিজা এন্টার প্রাইজের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধি নুরুল ইসলাম বলেন,তারা গত মাসের ডিওতে যে পরিমান সার বরাদ্দ পেয়েছেন তা অনেক পূর্বেই বিক্রি শেষ। তিনি আরো বলেন, সরকার নির্ধারিত মূল্যে প্রতি ব্যাগ ডিএপি সার ১০৫০টাকা,ইউরিয়া ১৩৫০টাকা,ফসফেট ১৩৫০টাকা ও পটাশ ১০০০টাকায় বিক্রি করা হয়। বর্তমানে বরাদ্দকৃত সার তাদের ঘরে নাই। এ সুযোগে কিছু ব্যবসায়ী বাইরে থেকে কিনে এনে বেশি দামে বিক্রি করছেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার শারমিন জাহান বলেন,সরিষার আবাদকে পূঁজি করে অসৎ ব্যবসায়ীরা ডিএপি সারের কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে বলে তিনি শুনেছেন। তবে বাজার মনিটরিং করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।।