বিশেষ প্রতিনিধি: পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় মাধ্যমিক শিক্ষায় কয়েকটি স্কুল ভালো করলেও কিছু বিদ্যালয়ের রেজাল্ট খুব করুণ। অথচ এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরকারি বেতন-ভাতা ও উন্নয়ন সহযোগিতার কমতি নেই। সরেজমিন দেখা যায়,এসএসসি পরীক্ষা-২০২৫ ফলাফলে সরকারি ভাঙ্গুড়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ ৯১.৯৬% , মমতাজ মোস্তফা আইডিয়াল স্কুল ৮৬.১৪% ও হাসিনা মোমিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ৮৩.৭৮% পাস করেছে। পুকুরপার আইডিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় ৭৪.৭১%,সুলতানপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ৭২.৫৫%,ভেড়ামারা উদয়ন একাডেমী ৭১.৩৩%,ভাঙ্গুড়া জরিনা রহিম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ৬৭.০৯%,করতকান্দি রোস্তম আলী উচ্চ বিদ্যালয় ৫৯.০২%,ময়দানদীঘী উচ্চ বিদ্যালয় ৫৮.৫১%,পাটুলিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় ৫৬.১০%,অষ্টমণিষা উচ্চ বিদ্যালয় ৫৪.৫৫%আদাবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় ৫০.৭৭%,দহপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় ৫০.০০%,বিবি স্কুল এন্ড কলেজ ৪৯.৬৪%,দিলপাশার উচ্চ বিদ্যালয় ৪৮.৭৮%,রুপসী উচ্চ বিদ্যািলয় ৪৭.৩৭%,মাদাবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয় ৪৫.১৯%,ছোট বিশাকোল উচ্চ বিদ্যালয় ৩৫.১৯% পাস করেছে।
এই উপজেলায় কারিগরি পরীক্ষা এসএসসি সমমানের ফলাফল আরো করুণ। করতকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ে ১০% পাস করলেও সিকেনি রোস্তম মিয়া আলিম মাদ্রাসা ও অষ্টমষিণা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে একজন শিক্ষার্থীও পাস করেনি। এসব স্কুলে কারিগরি শিক্ষা বন্ধ করা প্রয়োজন।
উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ ও অবকাঠামোর দিক থেকে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে বিবি স্কুল এন্ড কলেজ। অথচ এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়ার মান সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে গেছে। এরপর রয়েছে অষ্টমষিণা উচ্চ বিদ্যালয়। এর নিকটে হাসিনা মোমিন ভালো ফলাফল করলেও অষ্টমষিণা উচ্চ বিদ্যালয়ে ধ্বস নামতে দেখা যায়। শতকরা ৫০% এর নিচে উত্তীর্ণ স্কুলগুলোর বেশিরভাগ প্রত্যন্ত এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের দপ্তরে স্টাফ কম থাকায় তিনি এসব বিদ্যালয় কার্যকরি মনিটরিং করতে ব্যর্থ হন। এছাড়া তাকে অন্য উপজেলায় অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়ায় বিদ্যালয় দেখভাল করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
এদিকে বিদ্যালয়গুলো এমপিওভুক্ত হওয়ায় প্রতিমাসে সরকারি কোষাগার থেকে বেতন খাতে প্রচুর অর্থ ব্যয় হচ্ছে। কোনো কোনো বিদ্যালয়ে অবকাঠামো বৈষম্য রয়েছে,যেমন ছোট বিশাকোল উচ্চ বিদ্যালয় । কিন্তু বিবি স্কুল এন্ড কলেজ অবকাঠামোর দিক থেকে সেরা। এখানে শিক্ষার্থীদের খারাপ ফলাফল কোনো ভাবেই মেনে নেওয়া যায়না। প্রশ্ন হলো- এই দায় কার ? প্রশাসন এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নিয়েছে জানা নেই। তবে লেখাপড়ার মাননোন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ নিলে আগামীতে এই সংকট কেটে ওঠা সম্ভব বলে অভিজ্ঞমহল মনে করেন।
এ ক্ষেত্রে কর্মকর্তা ও শিক্ষানুরাগী ব্যক্তির সমন্বয়ে মনিটরিং টিম গঠন করে কার্যকর তত্তাবধান করতে পারলে ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে। সরকারি অফিসারের মধ্যে যিনি বা যারা এবং শিক্ষানুরাগী যিনি বা যারা (অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক) অতি আগ্রহী ও গুরুত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম তাদেরই কেবল এই দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে। মানটরিং টিমের সদস্যরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সংশ্লিষ্ট অফিসারের নিকট রিপোর্ট করবেন। ইউএনও’র সভাপতিত্বে মনিটরিং টিম মাসে অন্তত একটি মিটিং করবেন।
প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতেও এবার বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠানের আয়োজনের কথা বলা হয়েছে। বৃত্তি যেহেতু উপজেলার মেধা ও সম্মান বয়ে আনে তাই এই মনিটরিং টিমকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মানোন্নয়নে দায়িত্ব দিলে অনেক বেশি পজিটিভ রেজাল্ট পাওয়া যাবে বলে অভিজ্ঞমহলের ধারণা। কারণ প্রাথমিক শিক্ষায় লোকবল থাকলেও হাতে গোনা কয়েকটি বিদ্যালয় ছাড়া বেশিরভাগ স্কুলের অবস্থা করুণ। ভালো ফলাফল নিশ্চিত করতে তত্তাবধানের বিকল্প নেই।।