২০২৫ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই)। দুপুর ২টায় আন্তঃশিক্ষা বোর্ড এই ফলাফল ঘোষণা করে। এবার মোট গড় পাসের হার হয়েছে ৬৮.৪৫ শতাংশ, যা গত বছরের তুলনায় ১৪.৫৯ শতাংশ কম। পাশাপাশি জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এ বছর পরীক্ষায় অংশ নেয় মোট ১৯ লাখ ২৮ হাজার ৯৭০ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ছাত্রী ৯ লাখ ৬৭ হাজার ৭৩৯ জন এবং ছাত্র ৯ লাখ ৬১ হাজার ২৩১ জন।
দেশের ৩ হাজার ৭১৫টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এই পরীক্ষাগুলো শুরু হয় ১০ এপ্রিল এবং শেষ হয় ১৩ মে। মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে ফল প্রকাশ করেছে শিক্ষা বোর্ডগুলো, যার ভিত্তি ছিল বাস্তব মূল্যায়ন নীতিমালা।
সারাদেশে মোট পাস করেছে ১৩ লাখ ৩ হাজার ৪২৬ জন শিক্ষার্থী। আর জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৩২ জন, যা গত বছরের তুলনায় ৪২ হাজার ১২৭ কম।
পাসের হারে এবারও শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড, যেখানে ৭৭.৬৩ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে যশোর বোর্ড (৭৩.৬৯ শতাংশ)। অন্যদিকে বরিশাল বোর্ডে পাসের হার সবচেয়ে কম—মাত্র ৫৬.৩৮ শতাংশ।
বোর্ডভিত্তিক ফল বিশ্লেষণে দেখা যায়,
• কারিগরি বোর্ডে পাসের হার ৭৩.৬৩ শতাংশ
• চট্টগ্রামে ৭২.০৭ শতাংশ
• মাদ্রাসা বোর্ডে ৬৮.০৯ শতাংশ
• সিলেটে ৬৮.৫৭ শতাংশ
• ঢাকায় ৬৭.৫১ শতাংশ
• দিনাজপুরে ৬৭.০৩ শতাংশ
• কুমিল্লায় ৬৩.৬০ শতাংশ
• ময়মনসিংহে ৫৮.২২ শতাংশ
ফলাফল জানতে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট (www.educationboardresults.gov.bd) এ গিয়ে নির্ধারিত তথ্য প্রদান করে ফলাফল দেখতে পারছে। এছাড়া মোবাইল ফোনের মেসেজ অপশনে গিয়ে SSC লিখে, বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর (ইংরেজিতে), রোল নম্বর এবং পরীক্ষার সাল দিয়ে ১৬২২২ নম্বরে পাঠিয়ে এসএমএসের মাধ্যমে ফলাফল জানা যাচ্ছে। উদাহরণ: SSC DHA 123456 2025।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানভিত্তিক ফলাফলও বোর্ডগুলোর নিজ নিজ ওয়েবসাইটে পাওয়া যাচ্ছে।
ফলে সন্তুষ্ট না হওয়া শিক্ষার্থীরা খাতা পুনঃনিরীক্ষণের জন্য আবেদন করতে পারবে ১১ থেকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত। টেলিটক মোবাইল নম্বর থেকে নির্ধারিত ফরম্যাটে এসএমএস পাঠিয়ে আবেদন করা যাবে। আবেদন করার নিয়ম: রোল নম্বর <স্পেস> বোর্ডের নাম (ইংরেজিতে) <স্পেস> বিষয় কোড লিখে ১৬২২২ নম্বরে পাঠাতে হবে। একাধিক বিষয় হলে কোডগুলোর মাঝে কমা দিতে হবে—যেমন: ১০১,১০২,১০৩।
এবারের ফলাফলের পরিসংখ্যান শিক্ষাব্যবস্থার বর্তমান চ্যালেঞ্জের দিকটিও সামনে এনে দিয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। শিক্ষার্থীদের শেখার মানোন্নয়ন, অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের স্বচ্ছতা এবং মানসম্পন্ন পাঠদান নিয়ে নতুন করে ভাবার সময় এসেছে বলেই অনেকে মনে করছেন।
সূত্র: এফএনএস।