২০২৫ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে নতুন এক বাস্তবতা সামনে এনেছে। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুর ২টায় প্রকাশিত এ ফলাফলে দেখা গেছে, দেশের ১৩৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থী পাস করতে পারেনি। গত বছর এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ৫১টি। ফলে এক বছরের ব্যবধানে শূন্য পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়েছে ৮৩টি।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কনফারেন্স কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ফলাফল ঘোষণা করেন বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দকার এহসানুল কবীর। তিনি জানান, চলতি বছরে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১৯ লাখ ২৮ হাজার ৯৭০ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ১৩ লাখ ৩ হাজার ৪২৬ জন। পাসের হার দাঁড়িয়েছে ৬৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ১৪.৫৯ শতাংশ কম। ২০২৪ সালে পাসের হার ছিল ৮৩ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ।
শতভাগ ফেল করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি কমেছে শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও। এ বছর শতভাগ পাস করেছে ৯৮৪টি প্রতিষ্ঠান, যেখানে গত বছর এমন প্রতিষ্ঠান ছিল ২ হাজার ৯৬৮টি। ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মানের পার্থক্য আরও প্রকট হয়ে ধরা পড়েছে।
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, এবারও পাসের হারে এগিয়ে রয়েছে ছাত্রীরা। ছাত্রীদের পাসের হার ৭১ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ, আর ছাত্রদের পাসের হার ৬৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ। এ নিয়ে টানা ১০ বছর পাসের হারে এগিয়ে রয়েছে মেয়েরা।
ফলাফলে জিপিএ-৫ প্রাপ্তির হারেও ধস নেমেছে। ২০২৫ সালের পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৩২ জন শিক্ষার্থী। অথচ ২০২৪ সালে এই সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন। ফলে এক বছরে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে ৪২ হাজার ১২৭।
দেশের মোট ৩০ হাজার ৮৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয় ৩ হাজার ৭১৪টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায়। গত ১০ এপ্রিল শুরু হওয়া এই পরীক্ষা শেষ হয় ১৩ মে। ফলাফল প্রস্তুত করা হয়েছে ‘বাস্তব মূল্যায়ন’ নীতির ভিত্তিতে।
এবারের ফলাফল শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে ভাবনার অবকাশ তৈরি করেছে বলে মনে করছেন অনেকেই। বিশেষ করে শূন্য পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি হওয়া শিক্ষার মান ও পরিচালনাগত সীমাবদ্ধতার স্পষ্ট ইঙ্গিত বলে বিশ্লেষকদের অভিমত।
সূত্র: এফএনএস।