গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেছেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের গত ১৫ বছরের দমনমূলক শাসনের মাধ্যমে রাষ্ট্রকে জনগণের বিরুদ্ধে অস্ত্রে পরিণত করা হয়েছিল। গুম ছিল নৈমিত্তিক ঘটনা। হাজারো রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বী, ছাত্রনেতা ও সাংবাদিককে অপহরণ, নির্যাতন বা স্থায়ীভাবে স্তব্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। বহু পরিবার আজও জানে না, তাদের সন্তান জীবিত নাকি অচেনা কোন কবরে শায়িত আছে।
তিনি বলেন, আমরা আজ এখানে একত্রিত হয়েছি স্মরণ করতে, চিন্তা করতে এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে। আর কখনো যেন বাংলাদেশে ভয় ও নিপীড়নের নামে এমন শাসন ফিরে না আসে। একটি দমন-পীড়নমূলক শাসন ব্যবস্থার পতনের পর ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হলে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে ১ম ‘আন্তর্জাতিক জুলাই বিপ্লব ২০২৪’ সম্মেলনে এসব কথা বলেন উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। এ সম্মেলনে কি-নোট স্পিকার ছিলেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদ, কূটনীতিক জন ড্যানিলোভিচ, তুরস্ক, মালয়েশিয়া ও যুক্তরাজ্যের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও গবেষকগণ।
উপদেষ্টা আরো বলেন, নির্বাচন, গণমাধ্যম ও ছাত্র আন্দোলনের কণ্ঠ রোধ করতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ নানা অপকৌশল ব্যবহৃত হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন চিন্তাকে অপরাধে রূপ দেয়। কারাগারগুলো ভরে গিয়েছিল অপরাধীদের নয়, দেশপ্রেমিকদের দিয়ে। ফেসবুক পোস্টই ডেকে আনত মাঝরাতের পুলিশি অভিযান। একটি স্বপ্ন দেখা ছাত্র, যিনি কেবল একটি ভালো বাংলাদেশের আশা করেছিলেন, তাকেও পিটিয়ে আহত কিংবা শহীদ করা হয়েছে, শুধুমাত্র মতপ্রকাশের দায়ে।
১ম আন্তর্জাতিক জুলাই বিপ্লব ২০২৪ সম্মেলনের আহ্বায়ক ছিলেন অধ্যাপক মো. শরিফুল ইসলাম এবং অধ্যাপক মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ। সম্মেলনের শুরুতেই শহিদ জাহিদুজ্জামান তানভীনের পিতা-মাতা তাদের বক্তৃতায় দ্রুত জুলাই হত্যার বিচার ও অপরাধীদের সাজার দাবি জানান। ছাত্রনেতা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে এ সম্মেলন দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, আন্তর্জাতিক অতিথি, কূটনীতিক, মানবাধিকার কর্মীবৃন্দ বক্তৃতা করেন। যৌথভাবে এই সম্মেলন আয়োজন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রিসার্চ অ্যান্ড ইন্টিগ্রেটেড থট (আরআইটি), ইউনিভার্সিটি অব রেজিনা (কানাডা), নানইয়াং টেকনোলজিকাল ইউনিভার্সিটি (সিঙ্গাপুর), কেন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটি (যুক্তরাষ্ট্র), জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা, সেন্টার ফর পলিসি অ্যান্ড সোশ্যাল রিসার্চ (সিপিএসআর), ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল’ অ্যান্ড ডিপ্লোম্যাসি, সোচ্চার এবং ইনসাফ।
সূত্র: আমার দেশ।