পাবনার ভাঙ্গুড়ায় শ্রবণ প্রতিবন্ধী (২৮) এক স্বামী পরিত্যক্তা নারীকে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের পুঁইবিল গ্রামে।
এ ঘটনায় গতকাল সন্ধ্যায় ভুক্তভোগী নারী নিজে বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। এর প্রায় সপ্তাহ খানেক আগে ভুক্তভোগী নারী থানায় হাজির হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
তবে পুলিশ বলছে, অচিরেই আসামীকে আটক করে আইনের আওতায় আনা হবে।
মামলা ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ভাঙ্গুড়ার পুঁইবিল গ্রামের হতদরিদ্র ব্যক্তির মেয়ে শ্রবণ প্রতিবন্ধী ও দুই সন্তানের জননী কয়েক বছর ধরে স্বামী পরিত্যক্তা হয়ে বাবার বাড়িতে বসবাস করেন। তার পিতা মা বৃদ্ধ হওয়ায় তাদের কাজে সহায়তা করার জন্য মাঠে ছাগল চড়ানোসহ গরুর ঘাস কাটার কাজ করেন তিনি। এর মধ্যে একই গ্রামের মৃত তোফাজ্জল প্রামাণিকের ছেলে শামছুল হকের কুনজরে পরেন শ্রবণ প্রতিবদ্ধী। প্রতিবদ্ধী ছাগল নিয়ে মাঠে যাওয়া আসার বিভিন্ন সময়ে তাকে শামছুল উত্যক্ত করতে থাকেন। বিষয়টি নিয়ে ওই প্রতিবন্ধী নারী তার পরিবারের লোকজনসহ এলাকার একাধিক ব্যক্তিকে জানান। প্রথম দিকে গ্রামপ্রধানরা অভিযুক্ত শামছুলকে নিষেধ করেন। কিন্তু শামছুল কারো কথায় কর্ণপাত না করে ওই নারীর ওপর ক্ষিপ্ত হন। গত সপ্তাহ খানেক আগে ওই নারী ছাগল নিয়ে মাঠে গেলে শামছুল সুযোগ বুঝে ঘাসের জমিতে তাকে ঝাপটে ধরে ধর্ষণ চেষ্টা চালায়। এ সময় ওই নারীর চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে শামছুল পালিয়ে যায়। পরে বাড়িতে এসে ওই প্রতিবন্ধী নারী তার মাকে সম্পূর্ণ ঘটনা খুলে বলেন। এরপর ভুক্তভোগী পরিবার বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ এলাকার প্রধানদের কাছে জানালে সালিশ বৈঠকে শামছুলকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে। সালিশে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ইউপি সদস্য হাবিবুর, গ্রামপ্রধান জিয়া ও সাহেব আলীসহ অনেকে। কিন্তু বিষয়টি ভুক্তভোগী পরিবার না মেনে ভাঙ্গুড়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
ঘটনার বিষয়ে অভিযুক্ত শামছুল বলেন, প্রতিবেশী সম্পর্কে ওই প্রতিবন্ধী নারী তার নাতনী হয় । তাই তার সাথে একটু আধটু ইয়ারকি করা হয়েছে মর্মে স্বীকার করেছেন।
তবে স্থানীয় ইউপি সদস্য হাবিবুর, গ্রামপ্রধান জিয়া ও সাহেব আলীর সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদেরকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশিদুল ইসলাম মামলার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এ ঘটনায় গতকাল সন্ধ্যায় ভুক্তভোগী নারী নিজেই বাদী হয়ে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন, মামলা নং-৫।
তবে অচিরেই আসামীকে আটক করে আইনের আওতায় আনা হবে।