পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ঋণ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রায় তিন লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়েছে ফিয়ার বাংলাদেশ নামের একটি এনজিও। নগদ টাকা হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন প্রায় দেড় শতাধিক গ্রাহক।
ঘটনাটি ঘটেছে পাবনার ফরিদপুর উপজেলার বৃলাহিড়ীবাড়ী ইউনিয়নের এরশাদনগর গ্রামে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত সোমবার (২৩ জানুয়রি) সকালে তিনজন এনজিও কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিচয়ে ওই গ্রামে শাহিন উদ্দিনের বাড়িতে একটি শাখা অফিস খোলেন এনজিওর পরিচালক লিটন ও তার দুই সহকারী। কিন্তু তারা অফিসে না বসেই সেইদিন বেতুয়ান ও কৈডাঙ্গা নতুনপাড়াসহ আশেপাশের বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে ঋণ দেওয়ার কথা বলে প্রত্যেক গ্রাহককে জামানত হিসেবে ২০ হাজার টাকা দিতে বলে। টাকা জমা হলেই প্রত্যেক গ্রাহককে দুই লাখ করে টাকা ঋণ দেওয়া হবে তারা প্রতিশ্রুতি দেন। বেশি মুনাফার আশায় প্রায় দেড় শতাধিক গ্রাহক মোটা অঙ্কের টাকা জমা করতে শুরু করেন। সঞ্চয়ের টাকা নেওয়ার সময় তারা কোনো পাসবই তাদের দেননি। তারা তাদের এনজিওর নামে একটি শিটে সঞ্চয়ের টাকা তোলেন। ঋণ দেওয়ার সময় পাসবই দিয়ে টাকা লিখে দেবে বলে গ্রাহকদের জানান তারা।
কৈডাঙ্গা লাইনপাড়া গ্রামের দুধ ম্যানেজার বাবু বলেন, এনজিও ঋণ দেবে বলে আমার কাছ থেকে ২১ হাজার টাকা জমা নেয়। জমা দেওয়ার পরদিন ঋণ দেওয়ার কথা। কিন্তু এখন শুনছি তারা অফিস গুটিয়ে পালিয়েছে।
আরেক ম্যানেজার শাজাহান আলী বলেন, দ্রুত সময়ে ঋণ পাওয়ার আশায় আমি ২১ হাজার টাকা জমা দিয়েছি। মুদিদোকানি আবুল বাশার বলেন, আমার ১০ হাজার টাকা নিয়ে গেছে ফিয়ার বাংলাদেশ এনজিও।
কৃষক জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমি একজনের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে এই এনজিওতে সঞ্চয়ের টাকা জমা দিয়েছিলাম। অফিসে এসে দেখছি কেউ নেই। শুনছি তারা সবার টাকা নিয়ে পালিয়েছে।
বাড়ির মালিক শাহিন আহম্মদ বলেন, কয়েকদিন আগে আমার বাড়ির একটি রুমভাড়া নেওয়ার কথা বলেন তারা। এ কথা বলে ডেকোরেটার ডেকে ডেকোরেশনও তারা করে। তাদের কাছে পরিচয়পত্র এবং এনজিওর নথিপত্র চাওয়া হয়েছিল। পরে আর তারা আসেনি। এখন শুনছি তারা মানুষের কাছ থেকে সঞ্চয়ের নামে টাকা নিয়ে পালিয়েছে।
এ বিষয়ে এনজিওটির সহকারী ব্যবস্থাপক লিটন আহম্মেদের মুঠোফোনে (০১৯১৬-৭৬৫৮০২) বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও বন্ধ পাওয়া যায়।
ভাঙ্গুড়া থানার ওসি রাশিদুল ইসলাম বলেন, সাধারণ মানুষের সঞ্চয় নিয়ে এনজিও লাপাত্তার অভিযোগ নিয়ে কোনো ব্যক্তি থানায় আসেননি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি বলে জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান বলেন, ঘটনাটি তার জানা নেই। তবে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।