1. admin@ddnnewsbd.com : admin : ddn newsbd
  2. mamahbubulalom@gmail.com : mahbubul alom : mahbubul alom
শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:২৯ অপরাহ্ন

ভাঙ্গুড়ায় মাদ্রাসা সুপারের কান্ড: ৩ লাখ টাকা ব্যয়ে মুক্তিযুদ্ধ কর্নার! বাস্তবে নেই

প্রতিবেদকের নাম :
  • আপডেটের সময় : বৃহস্পতিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
  • ৩২৭ সময় দর্শন

ভাঙ্গুড়া  প্রতিনিধি:

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় একটি দাখিল মাদ্রাসায় ৩ লাখ টাকা ব্যয়ে মুক্তিযুদ্ধ কর্নার নির্মাণ করলেও বাস্তবে এর অস্তিত্ব নেই বলে অভিযোগ করেছে ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা। উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের বিবি দাখিল মাদরাসার সুপার শামসুল আলমের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে। এতে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা কর্নার নির্মাণের অজুহাতে টাকা আত্মসাতের বিষয়ে তদন্তের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন।

জানা যায়, উপজেলা শিক্ষা অফিস ২০১৯ সালে সকল বিদ্যালয় ও মাদ্রাসায় মুক্তিযুদ্ধ কর্নার নির্মাণের নির্দেশনা দেয়। এর কয়েক মাস পর বিবি দাখিল মাদ্রাসার সুপার শামসুল আলম ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের নিয়ে মিটিং করে মুক্তিযুদ্ধ কর্নার নির্মাণের জন্য তিন লাখ টাকা বরাদ্দ নিয়ে নগদ টাকা নিজের কাছে রেখে দেন। এর কিছুদিন পর করোনা ভাইরাসের কারণে মাদ্রাসা বন্ধ হয়ে গেলে কর্নার তৈরির কাজ আর এগোয়নি।

এরপর পরবর্তী ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা বিষয়টি জানতে পেরে গত বছরের শেষের দিকে মুক্তিযুদ্ধ কর্নার স্থাপনের টাকা খরচের বিষয়টি জানতে চায় সুপারের কাছে। তখন সুপার এই টাকা খরচ নিয়ে নানা তালবাহানা শুরু করেন। পরে মাদ্রাসার বাইরে মার্কেটের একটি কক্ষে স্থাপিত মুক্তিযুদ্ধ কর্নার ভেঙে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ করে সুপার স্থানীয় বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা আফজাল হোসেন ও তার পরিবারের তিন সদস্যের নামে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই দোকান ঘরে দীর্ঘদিন ধরে মুক্তিযোদ্ধা আফজাল হোসেন ও তার ছেলে সজীব কম্পিউটার ও ইলেক্ট্রনিক্সের ব্যবসা পরিচালনা করছেন।

মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মাসুদ প্রামানিক বলেন, মাদরাসার সুপারের এখনো মুক্তিযুদ্ধ কর্নার নির্মাণ করা‌ দেখিনি। কিন্তু কেন তিনি এ বিষয়টি নিয়ে মিথ্যাচার করছেন তা জানিনা।

এর আগের কমিটির সদস্য ওয়াজের তরফদার বলেন, মাদ্রাসায় মুক্তিযুদ্ধ কর্ণার করা হয়নি। এখন সদস্যদের উল্টাপাল্টা বুঝাতে একজনের দোকানে মুক্তিযুদ্ধ কর্নার নির্মাণের পর ভাঙ্গা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে সুপার।

আরেক সদস্য উজ্জল শাহ বলেন, বরাদ্দ নিয়েও মুক্তিযুদ্ধ কর্নার করেনি মাদ্রাসার সুপার। করোনার কারণে মাদ্রাসার পাঠদান বন্ধ থাকলেও মুক্তিযুদ্ধ কর্নার নির্মাণ হলে কমিটির লোকজন উদ্বোধন করতো। এখন মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে টাকা আত্মসাৎ করে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছেন সুপার।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আজিজ খান বলেন, মাদ্রাসার সুপার তিন লাখ টাকা আত্মসাৎ করতে মুক্তিযুদ্ধ কর্নার নিয়ে মিথ্যাচার করেছেন। এটা মেনে নেওয়া যায় না।

মুক্তিযোদ্ধা আফজাল হোসেন মিলিটারি বলেন, মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে মিথ্যাচার করেছেন সুপার। তাই তার কঠিন শাস্তি হওয়া দরকার।

এদিকে সুপারের দায়ের করা মামলার প্রথম সাক্ষী আব্দুল কাদের বলেন, মাদ্রাসার বাইরে দোকানের ভেতর মুক্তিযুদ্ধ কর্নার করার কথা বলা হলেও বাস্তবে সেখানে কখনোই করা হয়নি। বিষয়টি সকলে বসে সমাধান করা প্রয়োজন।

সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হারুনুর রশীদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধ কর্নার নির্মিতি হলে অবশ্যই আমরা জানতাম। মাদ্রাসার সুপার টাকা আত্মসাৎ করতে মিথ্যাচার করছে।

মাদ্রাসার পাশের বিবি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাইদুল ইসলাম বলেন, মাদ্রাসার সামনে কখনোই মুক্তিযুদ্ধ কর্নার দেখি নাই। কিন্তু শুনেছি এর জন্য নাকি ৩ লাখ টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে সুপার শামসুল আলমের কাছে কতদিন আগে মুক্তিযুদ্ধ কর্নার বানিয়েছিলেন জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ২০১৬, ২০১৭ অথবা এরপরে কোনো এক সময় মাদ্রাসার সামনে একটি দোকানের ভেতর তিন লাখ টাকা ব্যয়ে মুক্তিযুদ্ধ কর্নার স্থাপন করেছিলেন। সেই কর্নার কোথায় জানতে চাইলে তিনি ভেঙে ফেলা হয়েছে বলে জানান। এ নিয়ে তিনি মামলা করেছেন। এসময় মুক্তিযুদ্ধ কর্নার উদ্বোধন কিংবা কোনো কর্মসূচি পালনের ছবি আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি তা দেখাতে পারেননি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ হাসান খান বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পরেই তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যেহেতু মুক্তিযুদ্ধ কর্নার। তাই বিষয়টি অনেক গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
২০২০© এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ*
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Smart iT Host