পাবনা প্রতিনিধিঃ
পাবনার সুজানগর উপজেলার ১০ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা বেড়েই চলেছে। উপজেলা হাটখালী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দলীয় ও বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার রাতে গুলাগুলি নির্বাচনী অফিস কক্ষ ভাংচুরের ঘটনায় ৫ জন গুলিবিদ্ধসহ উভয়পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ২ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় পাবনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে হাটখালী ইউনিয়নের বারভাগিয়া গ্রামে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধ আহতরা হলো: হাটখালী ইউনিয়নের বারভাগিয়া গ্রামের আজাহার আলী মোল্লা (৬৫), আজগর আলী মোল্লা (৬০), খাইরুল ইসলাম (৪০), রেহেনা খাতুন (৩৫) জুবায়ের হোসেন প্রমুখ।
উপজেলা কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ফিরোজ আহমেদ খান বলেন, গত ২৬ অক্টোবর মনোনয়ন প্রত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন থেকেই হাটখালী ইউনিয়নে দলীয় প্রার্থীর লোকজন মারমুখী আচরণ শুরু করেন। তারই জের ধরে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আট টার দিকে আমার ইউনিয়ন এলাকার বারভাগিয়া গ্রামে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা এসে হামলা ভাংচুর চালায়। রাতের আধারে অতর্কিত ভাবে সাধারন লোকজনের উপর গুলি করলে আমাদের প্রায় ৬/৭ জন গুলিবিদ্ধসহ ১৫ জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে ৪ জনকে পাবনায় চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। অন্যদের স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে আমাদেও লোকজন তাদেও ধাওয়া দিলে ভারাটে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। যাওয়ার সময় তারা একই ইউনিয়নের নুরুউদ্দিনপুর বাজারে একটি নির্বাচনী অফিস ভাংচুর করে চলে যায়। ছেলে-মেয়ের প্রেম ঘটিত বিষয় হলে আমার নির্বাচনী অফিস ভাংচুর করবেন কেন বলেও জানান তিনি।
নৌকার প্রার্থী আব্দুর রউফ বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, এ ধরনের ঘটনা হাটখালী ইউনিয়নে ঘটেনি। আমার জনপ্রিয়তা ও নিশ্চিত বিজয় দেখে আমার বিরুদ্ধে অপ্রচার চালাচ্ছেন। এটি মুলত বারভাগিয়া গ্রামের বিশ^াস ও মোল্লা গোষ্ঠি কেন্দ্রীক মেয়েলি বিষয় নিয়ে ঝামেলা হয়েছে। এই ঝামেলাটিকে নির্বাচনী সহিংসতা দেখানোর অপচেষ্টা করে নির্বচনী পরিবেশকে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন আনারস প্রতীক ও বিদ্রোহী প্রার্থী ফিরোজ আহমেদ খান।
সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, এটি নির্বাচন কেন্দ্রীক সহিংসতা নয়। হাটখালী ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী ফিরোজ আহমেদ খানের দুই গ্রুপের ঝামেলা হয়েছে। বারভাগিয়া গ্রামের দুটি পরিবারের ছেলে ও মেয়ের সম্পর্কের জের ধরে এই ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে ওই এলাকায়, পুলিশ টহল জোরদার করা হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। ঘটনার পরপরই পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মাসুদ আলম স্যারও ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন।
প্রসঙ্গত, হাটখালী ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী আব্দুর রউফ ছাড়াও উপজেলা কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফিরোজ আহমেদ খান আনারস প্রতীক ও সুজানগর উপজেলা আ. লীগের সদস্য আনছার আলী ঘোড়া প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করছেন। আগামী ১১ নভেম্বর ২য় দফায় জেলার সুজানগর উপজেলার ১০ ইউনিয়নে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।