পাবনা প্রতিনিধি/
পাবনা শহীদ এম মনসুর আলী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুস সামাদ খানকে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে অব্যাহতি প্রদানের নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। গত ৫ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় এক পত্রের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
কিন্তু সেই আদেশ বাস্তবায়নে কলেজ পরিচালনা পর্ষদ গড়িমসি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ওই পত্রের মাধ্যমে জানা গেছে, শহীদ এম মনসুর আলী কলেজে অবৈধ ও বেআইনিভাবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব গ্রহণ ও পরবর্তীতে একই উপায়ে উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ এবং পুনরায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন আব্দুস সামাদ খান। প্রতিষ্ঠানটিতে নানা ধরনের অনিয়ম দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে শিক্ষার পরিবেশ ধ্বংস করা অভিযোগ তুলে এর প্রতিকার চেয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে আবেদন করেন উক্ত কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক আব্দুল কাদের বিশ্বাস।
আবেদনের প্রেক্ষিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত বেসরকারি কলেজ শিক্ষকদের চাকরির শর্তাবলী লংঘন করে ৫ বছরের অধিক সময় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করায় নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে তাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। একইসঙ্গে বিধি অনুযায়ী ৫ জন জ্যেষ্ঠতম শিক্ষকদের মধ্যে থেকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষর দায়িত্ব প্রদান করে বিশ্ববিদ্যালয়কে অবহিত করার জন্য কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতিকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
অভিযোগকারী প্রভাষক আব্দুল কাদের বিশ্বাস বলেন, আমাদের কলেজটি ডিগ্রি থেকে বর্তমানে অনার্স কলেজ। আব্দুস সামাদ খান কলেজের কারিগরি শাখার বাংলা বিষয়ের শিক্ষক। তিনি কখনই উপাধ্যক্ষ বা অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার যোগ্য নন। উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পেতে ডিগ্রি কলেজের একজন শিক্ষকের ১২ বছর এবং অধ্যক্ষ পদে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা প্রয়োজন। তিনি তার কোনো যোগ্যতার মধ্যেই পড়েন না। মূলত ৬ বছর আগে অনিয়ম-দুর্নীতি করে গোপনে অখ্যাত পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তিনি নিয়োগ নিয়েছেন।
প্রভাষক আব্দুল কাদের বিশ্বাস বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আব্দুস সামাদ খানতে অব্যাহতি দেওয়ার নির্দেশনা দিলেও গত ২১ দিনে তা বাস্তবায়ন হয়নি। তিনি এখনও বহাল তবিয়তে তার পদ ধরে রেখেছেন। কলেজ পরিচালনা পর্ষদ কেন তাকে অব্যাহতি দিতে গড়িমসি করছে তা বোধগম্য নয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শহীদ এম মনসুর আলী কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি সোহেল হাসান শাহীন। তিনি রবিবার ইত্তেফাককে বলেন, ‘আদেশে নির্দিষ্ট করে বলা নেই যে কতদিনের মধ্যে তাকে অব্যাহতি দিতে হবে। তিনি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বে ছিলেন, তার আগে তিনি উপাধ্যক্ষও রয়েছেন। এ বিষয়ে কীভাবে কোন প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নেওয়া যায় সেটি আলোচনা করতে ঢাকায় এসেছি। আশা করছি, খুব শিগগিরই এ বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ নিতে পারবো।’
অভিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুস সামাদ খান বলেন, ‘আমার পদ উপাধ্যক্ষ। অধ্যক্ষের অবর্তমানে আমি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছি। আমি এই কলেজের কারিগরি শাখার বাংলা বিষয়ের প্রভাষক ছিলাম ১৯৯৯ সাল থেকে। আমার বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ সঠিক নয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক অব্যাহতির আদেশের কোনো চিঠি পাইনি। কলেজ পরিচালনা পর্ষদও আমাকে অব্যাহতির বিষয়ে কিছু জানায়নি।’