ধর্মের নামে অপব্যাখ্যা ও উগ্রবাদ ছড়ানোর অভিযোগে আলোচিত ইসলামি বক্তা মুফতি আমির হামজাকে খুঁজছে পুলিশ।
পুলিশের দাবি, এই বক্তা ওয়াজ-মাহফিলে ইসলামের নামে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়েছেন। ইউটিউবে অবমুক্ত তার বেশ কিছু বক্তব্য উগ্রবাদ ছড়াচ্ছে। যা শুনে কোমলমতি কিশোর-তরুণরা জঙ্গিবাদে আকৃষ্ট হচ্ছে।
সাম্প্রতিক হেফাজতের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার অভিযানের কারণে আত্মগোপনে রয়েছেন আমির হামজা। তবে খুব শিগগিরই তাকে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশের একটি সূত্র।
সম্প্রতি তলোয়ার নিয়ে সংসদভবনে হামলা চালানোর চেষ্টায় গ্রেফতার এক যুবকের মোবাইল ফোনে মুফতি আমির হামজাসহ আরো কয়েকজন বক্তার ভিডিও পায় পুলিশ।
এরপর থেকেই গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছেন মুফতি আমির হামজা। একই তালিকায় রয়েছেন মাওলানা মাহমুদুল হাসান গুনবী নামের আরেক বক্তা। ইউটিউবে জিহাদ বিষয়ক বেশ কিছু বক্তব্য এখনও ঘুরপাক খাচ্ছে।
ঢাকার কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, গত ৫ মে তলোয়ার নিয়ে সংসদভবনে হামলা চালানোর চেষ্টারত সাকিব নামে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই যুবক জানায় এক ইসলামি বক্তার নির্দেশে সে এই পরিকল্পনা করেছিল। কয়েকজনের ওয়াজ ও বক্তব্য শুনে জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত হয় বলে জানায় সে। আমরা সেসব বক্তাদের চিহ্নিত ও গ্রেফতারের চেষ্টা করছি।
কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট সূত্রে জানা গেছে, আটকের পর সাকিবের মোবাইল ফোনে মাহমুদুল হাসান গুনবী, আমির হামজা, হারুন ইজহার প্রমুখ ব্যক্তির উগ্রবাদী জিহাদি হামলার বার্তা সংবলিত ভিডিও পাওয়া যায়। শেরেবাংলা নগর থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় সাকিবসহ আলী হাসান উসামা ও মাওলানা মাহমুদুল হাসান গুনবীকে আসামি করা হয়।
উল্লেখ্য, ওয়াজ-মাহফিল ও ইউটিউবে উগ্রবাদ প্রচার করার অভিযোগে ২০১৯ সালের মার্চে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক অধিশাখা-২ থেকে ১৫ জন ইসলামি বক্তার একটি তালিকা তৈরি করে প্রতিবেদন দেওয়া হয়। এসব বক্তাদের অনেকেই গ্রেফতার হয়েছেন ইতোমধ্যে।
এবার সেই তালিকায় উঠেছে মাহমুদুল হাসান গুনবী ও মুফতি আমির হামজার নাম। তাদেরকে আইনের আওতায় আনার জন্য গোয়েন্দা নজরদারি করা হচ্ছে।
কুষ্টিয়ার আঞ্চলিক ভাষায় ওয়াজকারী মুফতি আমির হামজা দ্রুত জনপ্রিয়তা পাওয়া ইসলামি বক্তাদের মধ্যে অন্যতম। ১৯৯১ সালে কুষ্টিয়া জেলায় তার জন্ম। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া থেকে “আল-কুরআন” এর উপর অনার্স ও মাস্টার্স করেছেন তিনি।