সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন দুই পুলিশ কর্মকর্তা। চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল ভবনে হামলার ঘটনা কেন্দ্র করেই মামলা করেছেন তারা। সে সময় সহিংসতার ঘটনায় বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যসহ অনেকেই আহত হয়। এছাড়া এক পুলিশ সদস্যসহ পাঁচজন নিহত হয়।
গত ৬ জানুয়ারি আইন প্রণেতারা নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেনের জয় আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন করার জন্য অধিবেশনে বসেছিলেন ঠিক সে সময়ই ট্রাম্পের শত শত সমর্থক দেশটির আইনসভা কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটলে ঢুকে পড়েন। অধিবেশন চলাকালে হঠাৎ করেই ট্রাম্প সমর্থকরা সেখানে তাণ্ডব শুরু করে। ভাঙচুরের পাশাপাশি সেখানে গোলাগুলির ঘটনাও ঘটে।
এদিকে, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে পুলিশ কর্মকর্তা জেমস ব্লেসিংগেম এবং সিডনি হেমবি বলেন, তারা শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের অভিযোগ, ট্রাম্প সে সময় সহিংসতাকে উস্কে দিয়েছিলেন।
ট্রাম্পের ক্ষমতা হস্তান্তরের একেবারে শেষের দিকে এমন বিশৃঙ্খল ঘটনার সাক্ষী হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ১৮১২ সালে যুদ্ধের পর এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবন এমন আগ্রাসনের সাক্ষী হয়েছে।
১৮১৪ সালে ওয়াশিংটনে অভিযান চালানের সময় ভাইস অ্যাডমিরাল স্যার আলেক্সান্ডার ককবার্ন ও মেজর জেনারেল রবার্ট রোসের নেতৃত্বে নির্মাণাধীন ক্যাপিটল ভবনে আগুন জালিয়ে দেয় ব্রিটিশ বাহিনী।
ওয়াশিংটনে ফেডারেল কোর্টে দায়ের করা মামলায় ওই কর্মকর্তারা বলেন, সহিংসতায় জড়িত ব্যক্তিদের ট্রাম্পের সমর্থক। তিনি তাদেরকে এই ভ্রান্ত অভিযোগ বিশ্বাস করাতে সমর্থ হয়েছিলেন যে, নির্বাচনে জালিয়াতির কারণে হোয়াইট হাউস থেকে তিনি সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
বিদ্রোহী জনতা ট্রাম্পের কাছ থেকে উৎসাহিত হয়েছিলেন। তিনি তাদের সহিংসতার দিকে ঠেলে দিয়েছেন, পরিচালিত করেছেন এবং সহায়তা করেছেন। তিনি উস্কে দেয়ার কারণেই তারা এভাবে হামলা চালানোর সাহস পেয়েছে।
১৭ বছর ধরে ক্যাপিটল পুলিশের সঙ্গে আছেন ব্লেসিংগেম। তিনি বলেন, ওই সহিংসতার ঘটনায় তিনি মাথায় এবং পেছনে আঘাত পেয়েছেন এবং মানসিকভাবেও তিনি বেশ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
আফ্রিকান-আমেরিকান এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, কৃষ্ণাঙ্গ হওয়ায় তিনি বর্ণবাদের শিকার হয়েছেন। তার ওপর হামলায় চালায় ট্রাম্প সমর্থকরা।
ক্যাপিটল পুলিশে ১১ বছর ধরে কর্মরত আছেন হেমবি নামের এক কর্মকর্তা। তিনি হাত এবং হাঁটুতে আঘাত পেয়েছেন। সহিংসতার সময় তার মুখ এবং শরীরে রাসায়নিক স্প্রে করা হয়। ওই দুই কর্মকর্তারা প্রত্যেকে সর্বনিম্ন ৭৫ হাজার ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।