জামালপুরে গ্রাম্য সালিশে ৮৫ বছরের বৃদ্ধের সাথে ১২ বছর বয়সী এক শিশুর বিয়ের ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ২৬ নভেম্বরের মধ্যে এ বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে। জামালপুরের ডিসি, এসপি ও দেওয়ানগঞ্জ থানার ওসির প্রতি আদালত এ আদেশ দেন।
এ বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত কয়েকটি প্রতিবেদন নজরে নিয়ে মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি শাহেদ নূর উদ্দীনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতের আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জামালপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক।
গত ২০ নভেম্বর বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকা ও অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জের চরআমখাওয়া ইউনিয়নের বয়রাপাড়া গ্রামে ৮৫ বছরের বৃদ্ধ মহির উদ্দিনের সঙ্গে ১২ বছরের এক শিশুর বিয়ে দিয়েছেন গ্রাম্য মাতব্বররা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, গ্রাম্য সালিশে ওই বৃদ্ধের নাতি শাহিনের (১৮) অপরাধের দায়ভার দাদার ওপর চাপিয়ে গ্রাম্য সালিশে বৃদ্ধ মহির উদ্দিনকে ১০ দোররা মেরে তার সঙ্গে শিশুটির বিয়ে দেওয়া হয়।
জানা যায়, ভুক্তভোগী শিশুটি স্থানীয় একটি কওমী মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। একই গ্রামের বৃদ্ধ মহির উদ্দিনের নাতি শাহিনের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমের সম্পর্ক রূপ নেয় শারিরীক সম্পর্কে। শাহীনের নিয়মিত ধর্ষণে শিশুটি অন্তঃসত্ত্বা হলে গর্ভপাত ঘটানো হয়। বিষয়টি ফাঁস হলে স্থানীয় মাতব্বররা সালিশ করে নাতি শাহিনের অপরাধের দায় ৮৫ বছরের বৃদ্ধ মহির উদ্দিনের ওপর চাপিয়ে দেন।
মহিরের প্রতিবেশীরা জানান, অনেক আগেই ৭ সন্তানের জনক বৃদ্ধ মহির উদ্দিনের প্রথম ও দ্বিতীয় স্ত্রী মারা যায়। তিনি তৃতীয় বিয়েও করেছেন ২৭ বছর আগে। ওই শিশুটি তার চতুর্থ স্ত্রী। বৃদ্ধ মহির বয়সের ভারে ঠিকমত কথাও বলতে পারেন না, দৃষ্টিও ঝাপসা। ১২ বছর বয়সী চতুর্থ স্ত্রীকে নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন তিনি।
জামালপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক বলেছেন, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিয়া সুলতানাকে প্রধান করে ওসি মাঈনুল ইসলাম ও উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ফাতেমা নার্গিসকে সদস্য করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্তের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তদন্ত শেষে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।