পাবনা বেড়া উপজেলায় এক ক্লিনিক মালিকের বিরুদ্ধে ধর্ষনের অভিযোগ । এ ঘটনায় শুক্রবার বিকালে ধর্ষিতা সেতু ডিজিটাল ডায়াগণষ্টিক সেন্টারের মালিক ফয়সাল মোঃ আনিছের নামে ধর্ষণ মামলা করেছে। এজাহার ও ধর্ষিতার বক্তব্য পুলিশ সুত্রে জানা যায়, ধর্ষীতা ক্লিনিকের রিসিপশনিষ্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি । ক্লিনিকের মালিক ফয়সাল প্রায় মাসখানেক পুর্বে ধর্ষিতাকে বলে তার বাড়ির লোকজন সবাই বেড়াতে গেছে, বাড়িতে কেউ নেই, তাই তাঁকে রান্না করে দিতে হবে। এসব কথা বলে ফয়সাল রান্নার জন্য মেয়েটিকে তাঁর বাড়িতে নিয়ে যায়। পরে ক্লিনিকের মালিক ওই মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে জোর পুর্বক একাধিকবার ধর্ষণ করে। পরে ধর্ষণের ঘটনাকে সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হবে বলে ভয়ভীতি দেখিয়ে ক্লিনিকে আরো একাধিকবার ধর্ষণ করে। মেয়েটি ঘটনার প্রতিবাদ করলে তাঁকে বিভিন্ন প্রকার হুমকি দেওয়া হয়।
ঘটনা কাউকে জানানো হলে তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দেয় ধর্ষক । পরে বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে গত বৃহস্পতিবার সন্ধায় স্থানীয় কয়েকজন ব্যাক্তি ওই মেয়েকে ৪০ হাজার টাকা দিয়ে বিষয়টি চেপে যেতে বলেন। বেশি বাড়াবাড়ি করলে চরিত্রহীন বলে মেয়েটিকে বিচারের সম্মুখিন করা হবে বলে হুমকি দেন তারা । বিচারের ঘটনা’টি স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিকের কানে পৌছালে মেয়েটিকে দ্রুত থানায় গিয়ে মামলা করার পরামর্শ দেন। পরে মেয়েটি থানায় ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান ধর্ষনের ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে প্রভাবশালীরা ক্লিনিক মালিক ফয়সালের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা গ্রহণ করে। ৪০ হাজার টাকা মেয়েকে দিয়ে বাঁকি টাকা বিচারকগণ ভাগ বাটোয়ারা করে নেন বলে জানা যায়। তারা আরো জানান , বিচারকগণ প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশকে ম্যানেজ করে ধর্ষণের ঘটনা ১মাস আগে দেখানো হয়েছে। জাতে করে ধর্ষীতা ধর্ষণের ঘটনা প্রমান করতে না পারেন। স্থানীয় বিভিন্ন ব্যাক্তি ধর্ষণের ঘটনা তদন্তের জন্য পিবিআই বা ডিবিতে হস্তান্তর করার দাবি জানান ।
অভিযোগ দায়ের বিষয়ে বেড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোঃ আবুল কাশেম জানান, ধর্ষণের একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তবে আমি থানার বাইরে থাকায় বিস্তারিত জানতে পারিনি। রাতে থানায় পৌছে অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা অর্ন্তভুক্ত করবো। বেড়া থানার ডিউটি অফিসার এ.এস.আই কামাল হোসাইন জানান, বেড়া শানিলা গ্রামের একটি মেয়ে এসে ধর্ষণের অভিযোগ দিয়ে গেছে। ওসি স্যার এলে অভিযোগটি উপস্থাপন করা হবে। আরো জানা যায়, পাবনা’র বেড়াসহ জেলায় প্রায় দেড় শতাধিক ক্লিনিক রয়েছে। এর মধ্যে শতকরা ১৫ ভাগ অনুমতি নিয়ে পরিচালনা করছে। বেশিরভাগ অনুমোদনহীন ক্লিনিকে নিয়মবহির্ভুতভাবে অপরাশেনসহ নানা ভুল চিকিৎসার কারণে প্রায় সময় রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে।
বিশেষ করে সিজারের রোগীর মৃত্যুর ঘটনা বেশি ঘটছে। বেশিরভাগ ঘটনায় টাকা ও ক্ষমতার মাধ্যেমে আপোষ করা হয়ে থাকে। সে কারণে বাধাহীনভাবে এসব ক্লিনিক অবৈধভাবে পরিচালিত হচ্ছে। শুধুমাত্র বেড়া উপজেলায় গড়ে প্রতিমাসে ৩ থেকে ৪ জন রোগী ভুল চিকিৎসায় মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটছে । যথাযথ ভাবে কর্তৃপক্ষের নজর না থাকায় এসব ক্লিনিকে নানা অসামাজিক কার্যকলাপ প্রতিনিয়ত হয়ে থাকে। প্রশাসনের লোকজন বিশেষ কারণে এগুলো দেখেও দেখে না বলে অভিযোগ করেন । কয়েকজন ক্লিনিক মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানালেন, পাবনা’র সিভিল সার্জনের একজন প্রতিনিধি মাসিক ভাবে টাকা নিয়ে থাকেন বলে জানা যায়। তাই লাইসেন্স বা অনুমোদন না নিয়েই তারা অবাধে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। একদিকে যেমন রোগী ভুল চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে, সেই সাথে সরকার প্রতিবছর রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ক্লিনিকে অনিয়মের বিষয়ে নজর দিতে প্রকৃত ক্লিনিক মালিকগণ দ্রুত কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।