ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ—ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে একজন ছাত্রীর মামলার নেপথ্যে ভূমিকা রাখার অভিযোগ নাকচ করেছেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিৎ চন্দ্র দাস। গতকাল শুক্রবার রাতে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘ওই মেয়ের সঙ্গে আমার বিন্দুমাত্র যোগাযোগ নেই।’
ভিপি নুরকে চরম মিথ্যাবাদী ও মানসিক বিকারগ্রস্ত অভিহিত করে সনজিৎ চন্দ্র বলেন, ‘কোনো মানসিক হাসপাতালে নুরের চিকিৎসা জরুরি।’ তিনি আরো দাবি করেন, নুরের সংগঠন ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের জন্ম দুর্ঘটনার মধ্য দিয়ে। মিথ্যা বলে দূতাবাসগুলো থেকে টাকা নেয় নুর।’
নুর ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর মামলার নেপথ্যে ভূমিকা রাখার অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে সনজিৎ বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো এমন ঐতিহ্যবাহী জায়গায় মানসিক বিকারগ্রস্ত একজন লোক কোনোভাবে দুর্ঘটনাবশত ছাত্র সংসদের ভিপি হয়ে গেছে। যে মেয়েটির কথা তারা বলছে, ওই মেয়েটি তাদের ছাত্র সংগঠন ছাত্র অধিকার পরিষদেরই সক্রিয় কর্মী। আমরা দেখেছি, সে বিভিন্ন প্রগ্রামে তাদেরকে রান্না করে খাইয়েছে। তাদের আশপাশে সব সময় থেকেছে। তাদের সংগঠনের সব কার্যক্রম করেছে।’
সনজিৎ বলেন, ‘ওই মেয়ের সঙ্গে আমার বিন্দুমাত্র যোগাযোগ নেই। কিন্তু বিভিন্ন সময় দেখা গেছে, কুৎসা রটনায় সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদ বিশ্বে অদ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে। গুজব রটনার ক্ষেত্রে ও মানুষকে বিভ্রান্ত করার ক্ষেত্রে যে একটা দুষ্ট রাজনীতি তারা শুরু করেছে সেটা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও গর্হিত।’
সনজিৎ চন্দ্র দাস বলেন, ‘যে ছাত্র সংগঠনের মহানায়ক বা মূলনায়ক মানসিক বিকারগ্রস্ত রোগী, সেখানে তাদের সমর্থকরা এমন হবে সেটাই যৌক্তিক। নুরের মানসিক কোনো হাসপাতালে চিকিৎসা করা জরুরি বলে আমি মনে করি।’
ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে নুরের অভিযোগ, তাঁর জনপ্রিয়তার কারণে ছাত্রলীগ তার বিরুদ্ধে নেমেছে। বিভিন্ন সময় হামলা করেছে। এখন মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। এসব অভিযোগের বিষয়ে সনজিৎ বলেন, ‘ছাত্রলীগ নুরুকে জনপ্রিয় কেউ মনে করে না। কারণ আমরা জানি, তারা তথাকথিত কিছু ফেক আইডির মাধ্যমে ফেসবুকে জনপ্রিয়। রাজপথে জনপ্রিয় নয়। এবং তারা ফায়দা লোটার রাজনীতি করে। অর্থ ও টাকা আদায় এবং বিভিন্ন কূটনৈতিক মিশনে গিয়ে কূটনীতিকদের কাছে ধরনা দেওয়ার রাজনীতি করে। সেই রাজনীতি ছাত্রলীগ করে না।’
তিনি বলেন, ‘কিন্তু বিভিন্ন সময় তারা (নুর ও তাঁর সমর্থকরা) যে ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়েছে সেটাও অস্বীকার করার সুযোগ নেই। কারণ ইতিহাসের শুরু থেকে বা বাংলাদেশ সৃষ্টির পর থেকে প্রতিটি আন্দোলন, সংগ্রামে দেশ বাঁচানোর কাজটি ছাত্রলীগ সব সময় করেছে। সেই ক্ষেত্রে তারা যদি দেশবিরোধী কোনো কাজ করে, যেমন এরই মধ্যে তারা একজন নারীর সম্ভ্রম নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে, একটি মেয়েকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার সঙ্গে যে ধরনের ন্যক্কারজনক কাজ করেছে সেটার তীব্র নিন্দা জানাই আমরা। এটার জন্য যারা জড়িত তাদের সবার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি আমরা কামনা করি।’
সনজিৎ বলেন, ‘আজকে যদি তারা একটি মেয়েকে ধর্ষণ করতে থাকে সে ক্ষেত্রে ছাত্রলীগের কেউ যদি দেখে, আমরা যদি দেখি আমরা তো অবশ্যই তাদের পেটাব। কারণ ধর্ষকদের তো আমরা কোনো প্রশ্রয় দেব না।’
ছাত্র অধিকার পরিষদের অভ্যন্তরীণ কোনো দ্বন্দ্বের কারণে ওই মামলা হয়েছে কি না জানতে চাইলে সনজিৎ বলেন, ‘তাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল ছিল কি ছিল না সেটা বিষয় না। ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণেও কেউ যদি ধর্ষণের শিকার হয় আমরা তো সেটারও বিচার চাই।’
ওই মেয়েটির বিচার পাওয়ার জন্য ছাত্রলীগ সহযোগিতা করবে কি না—প্রশ্নের জবাবে সনজিৎ বলেন, ‘আমি ফেসবুকে, বিভিন্ন জায়গায়, যেখানে যেখানে দরকার সরব ছিলাম। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ছোট বোন, সে যে ছাত্র সংগঠনই করুক সেটা করার তার স্বাধীনতা আছে। ওই মেয়ে চাইলে প্রয়োজনে তার সুবিচারের জন্য আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি দেব, প্রয়োজনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেব।’