ভাঙ্গুড়া প্রতিনিধি :
পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান পাবনা জেলার শ্রেষ্ঠ ইউএনও নির্বাচিত হয়েছেন। প্রাথমিক শিক্ষায় বিশেষ অবদানের জন্য জেলা বাছাই কমিটি তাকে শ্রেষ্ঠ উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসাবে নির্বাচন করেন। কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন ও সদস্য সচিব জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নিখিল চন্দ্র হালদার স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি তালিকা বুধবার প্রকাশ করা হয়।
জানাগেছে,জাতীয় পদক প্রদানের লক্ষ্যে জেলা পর্যায়ে বাছাই সম্পন্ন হওয়ায় পরবর্তীতে বিভাগীয় পর্যায়ে বাছাই অনুষ্ঠিত হবে। মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান পাবনা জেলার শ্রেষ্ঠ উপজেলা নির্বাহী অফিসার নির্বাচিত হওয়ায় রাজশাহী বিভাগীয় পর্যায়ে বাছাই কার্যক্রমের প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহনের সুযোগ পেলেন। বিভাগে শ্রেষ্ঠ হলে তিনি জাতীয় পর্যায়ে বাছাইয়ের জন্য নির্বাচিত হতে পারেন।
জানা যায়, ইউএনও নাহিদ হাসান খান একজন সৎ,অভিজ্ঞ ও দায়িত্ব কর্তব্যে নিষ্ঠাবান অফিসার। ভাঙ্গুড়া উপজেলায় দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকে তিনি এই এলাকার উন্নয়নে ব্যস্ত সময় পার করছেন। জেলা প্রশাসকের প্রতিটি নির্দেশনা ও মাননীয় সংসদ সদস্যের পরামর্শে তিনি প্রতিটি কাজ নিষ্ঠার সাথে সম্পন্ন করেন। এছাড়া উপজেলা পরিষদের শিশু পার্কেও শ্রী বৃদ্ধি ও ব্যক্তিগত খরচে এখানে উন্মুক্ত লাইব্রেরী স্থাপন করে ভুয়সী প্রসংশা কুড়িয়েছেন।
খানমরিচ ইউনিয়নে বিলুপ্ত প্রায় শহীদ মিনার উদ্ধার করে সংস্কার ও সেখানে জাতীয় দিবস উদযাপনের মাধ্যমে ইউনিয়নবাসীর মধ্যে ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব অনুধাবনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখেন।
উপজেলা অফিসারস ক্লাবের সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়নে তার অবদান অনস্বীকার্য। বাংলা-ইংরেজি ভাষা চর্চার জন্য ল্যাংগুয়েজ ক্লাব স্থাপন করেও তিনি আলোচিত হন।
শিল্পকলা একাডেমীর শিল্পীদের এক্যবদ্ধকরণ ও নিয়মিত ক্লাবে সঙ্গীত অনুশীলনের ব্যবস্থা করে তিনি শিল্পীদের আস্থাভাজন ব্যক্তিতে পরিণত হন।
রাষ্ট্রীয় ‘ক’ শেণিভুক্ত সকল কর্মসূচী যথাযথভাবে উদযাপনে তার আন্তরিকতার ব্যাপক প্রসংশা রয়েছে। এছাড়া বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর জন্মজয়ন্তী ও মৃত্যু বার্ষিকী পালনে সাজসজ্জা এবং অনুষ্ঠানমালা কবি,সাহিত্যিক,লেখক ও শিল্পীদের অনুপ্রাণিত করেছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রতিষ্ঠান,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,সরকারি প্রকল্প পরিদর্শনে তার জুরি নেই। এনজিও কার্যক্রম তদারকির ক্ষেত্রে তার ভুমিকা প্রসংশনীয়।
প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে তার ভুমিকা আরো উজ্জল। প্রতি মাসে তিনি ন্যূনতম ৫০টি স্কুল ভিজিট করেন। সেখানকার সমস্যা চিহ্নিতকরণসহ সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছেন।
করোনা পরবর্তী কালে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি শতভাগে উন্নীত করা ও ঝরে পড়ারোধে নানা প্রকার পরামর্শ প্রদান করায় অনেক সাফল্য আসে। বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বাগান বিলাস ও বৃক্ষ রোপণ,মাল্টিমিডিয়ায় ক্লাশ গ্রহন,রাসেল ডিজিটাল ক্লাবের মাধ্যমে ছাত্র- শিক্ষকদের কর্মমুখী প্রশিক্ষণ প্রভৃতিসহ তার নানা কর্মসূচীর মাধ্যমে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইতিবাচক পরিবর্তন এনে দিয়েছে।
পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি দেশে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে নৈতিক শিক্ষা কার্যক্রমের উপর গুরুত্বারোপ করায় শিশুদের মাঝে মানবিক বিকাশ ও উন্নয়ন পরিলক্ষিত হচ্ছে। শিশুরা ভালো কাজ করতে আগ্রহী হচ্ছে। সেই সঙ্গে তারা পাঠে মনোযোগী হচ্ছে। স্কুলে উপস্থিতির হার অনেক বেড়েছে। শিক্ষকদের আন্তরিকতাও অনেকাংশে বেড়েছে। তারা যথাসময়ে স্কুলে যাচ্ছেন এবং প্রস্থান করছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমন চিত্র লেখাপড়ার মান পাল্টে দিয়েছে। এমন কর্মকান্ডে ইউএনও নাহিদ হাসানকে বলা হচ্ছে ”চেঞ্জ”মেকার।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান বলেন,প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি উপজেলায় প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি,নৈতিক শিক্ষার প্রসার ও টেকসই উন্নয়নে তিনি নিয়মিত কাজ করছেন। কারণ প্রাথমিক শিক্ষার মাধ্যমেই একটি জাতিকে সুনাগরিক হিসাবে গড়ে তোলা সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।