করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘদিন ধরে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় ভাঙ্গুড়া উপজেলার স্কুল-কলেজের অসংখ্য শিক্ষার্থী লেখাপড়া ছেড়ে নানা পেশায় জড়িয়ে পড়ছে। কেউ অটোভ্যান, বাইক চালাচ্ছে, কেউ নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করছে, কেউ বা আবার কৃষি শ্রমিকের কাজ করছে। এতে এসব শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন সচেতন মহল।
সরজমিনে জানা যায়, ঝিনাইগাড়ি কলকতি গ্রামের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র তুহিন এখন ভাড়ায় অটোবাইক চালাচ্ছে। সে প্রতিদিন ৪০০ টাকা আয় করে। ভাঙ্গুড়া পৌরসভার মন্ডল মোড়ের বাসিন্দা কলেজছাত্র মুনজিল রংমিস্ত্রির কাজ করে। কলকতি গ্রামের কলেজছাত্র জুয়েল রাজমিস্ত্রির কাজ করছে। এরা সবাই দৈনিক ৪০০-৫০০ টাকা আয় করছে।
এসব শিক্ষার্থীরা জানায়, দিনে কাজ করায় তারা বাড়ির বাইরে থাকে। একারণে শিক্ষকদের অনলাইন ক্লাশে যোগ দেওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব হয়না।
মুনজিলের মা রহিমা খাতুন ও জুয়েলের মা জায়দা খাতুন বলেন, করোনা সংকটে পড়ায় ছেলেরা প্রায় এক বছর ধরে বিভিন্ন পেশায় যোগ দিয়ে আমাদের আর্থিক সহযোগিতা করছে। তবে তারা আক্ষেপ করে বলেন, কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে ছেলেরা একটি অনলাইন ক্লাসও করতে পারে নাই।
যেসব মেয়েরা গ্রামে থাকে তাদের বাড়িতে এনড্রয়েড ফোন থাকলেও বাবা অথবা বড় ভাই ওটা নিয়ে দিনে বাইরে থাকেন ফলে মেয়েরাও দিনে ক্লাশ করতে পারেনা। অথচ কর্তপক্ষ রাতে ক্লাশ নেওয়ার কোনো নির্দশনা দেননি বলে জানা গেছে।একাধিক শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বললে তারা জানায় ,রাতে অনলাইন ক্লাস হলে তাতে তারা অংশ নিতে পারতো। এতে এসব শিক্ষার্থীরা ঝরে পড়ার হাত থেকেও রক্ষা পেত।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম জানান, আমরা দিনে অনলাইন ক্লাশ নিতে বলেছি কিন্তু ওই সব শিক্ষার্থীদের কথা ভেবে ঈদের পর রাতেও ক্লাশ নেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুজ্জামান বলেন, অতিদরিদ্র শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন যেন স্থায়ীভাবে বন্ধ না হয় সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদি আমাদের কাছে কোনো শিক্ষার্থী এ ব্যাপারে আবেদন করে তাহলে তাদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।