1. admin@ddnnewsbd.com : admin : ddn newsbd
  2. mamahbubulalom@gmail.com : mahbubul alom : mahbubul alom
শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৩৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
মিয়ানমার হয়ে চীনের সঙ্গে ঢাকার নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ দরকার: তৌহিদ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়তে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠা করতে হবে : জোনায়েদ সাকি বেনাপোলে শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতের আমির: কবর জিয়ারত ক্ষমতা নয়, সুশাসন প্রতিষ্ঠায় জনগণের সমর্থন চান জামায়াত আমির ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আজমীর বরখাস্তের আদেশ প্রমার্জনা জার্মান প্রেসিডেন্ট পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়েছেন, ২৩ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন এক কার্গো এলএনজি ও এক লাখ ৩০ হাজার টন সার সংগ্রহ করবে সরকার সচিবালয়ে প্রবেশাধিকার বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা নাশকতাকারীরা কোনভাবেই দেশপ্রেমিক হতে পারে না : ধর্ম উপদেষ্টা গুম অবস্থায় ভারতের কারাগারে যাওয়ার লোমহর্ষক বর্ণনা সুখরঞ্জন বালির

দেড় লাখ বছর আগের’ মাথার খুলি নিয়ে যা বলছেন বিজ্ঞানীরা

অনলাইন ডেস্ক :
  • আপডেটের সময় : রবিবার, ২৭ জুন, ২০২১
  • ১৯৮ সময় দর্শন

চীনা গবেষকরা অত্যন্ত প্রাচীন একটি মাথার খুলির সন্ধান পেয়েছেন, যা সম্পূর্ণ নতুন প্রজাতির মানবের বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিজ্ঞানীদের এই দলটি দাবি করছে মানব বিবর্তন প্রক্রিয়ায় নিয়েন্ডারথাল এবং হোমো ইরেকটাসের মতো এই প্রজাতির মানব আমাদের সবচেয়ে নিকটতম আত্মীয়। এই মানব প্রজাতির নামকরণ করা হয়েছে ড্রাগন ম্যান। সূত্র: বিবিসি

বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই নমুনাটি এমন এক মানব গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করছে যা অন্তত এক লাখ ৪৬ হাজার বছর আগে পূর্ব এশিয়ায় বসবাস করতো। উত্তর-পূর্ব চীনের হারবিন শহরে এই খুলি পাওয়া গেছে ১৯৩৩ সালে, তবে খুব সম্প্রতি এটি বিজ্ঞানীদের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে।
মাথার এই খুলির একটি বিশ্লেষণ সম্প্রতি ‌‘দ্য ইনোভেশন’ নামের একটি জার্নালে প্রকাশিত হয়। বলা হচ্ছে, নতুন এই আবিষ্কার – হোমো স্যাপিয়েন্সের কোথা থেকে ও কীভাবে উদ্ভব হয়েছিল সে সম্পর্কে বর্তমান ধারণা বদলে দিতে পারে।

মানব বিবর্তনের বিষয়ে যুক্তরাজ্যে শীর্ষস্থানীয় একজন বিজ্ঞানী ও গবেষক, লন্ডনের ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের প্রফেসর ক্রিস স্ট্রিঙ্গার এই গবেষণা দলের একজন সদস্য ছিলেন।

তিনি বলেন, ‘গত সহস্রাব্দগুলোতে যেসব জীবাশ্ম পাওয়া গেছে, তার মধ্যে এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি আবিষ্কার। এটি মানবতার ভিন্ন একটি শাখা যা হোমো স্যাপিয়েন্স (আমাদের প্রজাতি) হওয়ার পথে ছিল না। তবে এটি এই অঞ্চলে কয়েক লাখ বছর ধরে বিবর্তিত হওয়া এক প্রজাতির প্রতিনিধিত্ব করে যা পরে বিলুপ্ত হয়ে গেছে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই আবিষ্কারের ফলে মানব বিবর্তনের ইতিহাস নতুন করে লিখতে হতে পারে। তাদের বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, এই প্রজাতির মানব নিয়েন্ডারথালের চেয়েও হোমো স্যাপিয়েন্সের অনেক বেশি ঘনিষ্ঠ।

গবেষকরা বলছেন, এই নতুন প্রজাতির মানব হচ্ছে হোমো লোঙ্গি। এই লোঙ্গি শব্দটি এসেছে চীনা শব্দ ‘লং’ থেকে যার অর্থ ড্রাগন।

চায়নিজ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস এবং শিজিয়াঝুয়াঙ প্রদেশে হেবেই জিও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জিজুন নি বলেন, এই আবিষ্কারের মাধ্যমে ‘আমরা বহু আগে হারিয়ে যাওয়া এক বংশধরকে খুঁজে পেয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘এটা যে এতো ভালোভাবে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে সেটা আমি বিশ্বাস করতে পারিনি। এই খুলির সবকিছু দেখা যাচ্ছে। এটা সত্যিই দারুণ এক আবিষ্কার!’

আমাদেরসহ অন্যান্য মানব প্রজাতির মাথার খুলির সঙ্গে তুলনা করলে এই খুলিটি আকারে বেশ বড়। তবে মস্তিষ্কের আকার প্রায় একই ধরনের। বলা হচ্ছে, এই খুলিটি প্রাপ্তবয়স্ক এক পুরুষের।

খুলি দেখে বোঝা যায় ড্রাগন ম্যানের চোখের কোটর বিশাল ও চতুর্ভুজ আকৃতির, ভ্রুর খাঁজ বিশাল আকারের, প্রশস্ত মুখ এবং বড় আকারের দাঁত।

হেবেই জিও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর কিয়াং জি বলেন, এখন পর্যন্ত মানুষের মাথার খুলির যত জীবাশ্ম পাওয়া গেছে, এর মধ্যে এটি সবচেয়ে সম্পূর্ণ। অন্যান্য সব মানব প্রজাতির চেয়ে এটি একেবারেই আলাদা।

বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন, ড্রাগন ম্যান ছিল খুব শক্ত সামর্থ্য মানুষ এবং কর্কশ। তবে তারা কীভাবে ও কেমন করে বসবাস করতো সে বিষয়ে খুব কমই জানা গেছে। কারণ, যে এলাকায় এই খুলিটি পাওয়া গিয়েছিল সেখান থেকে এটিকে সরিয়ে ফেলা হয়েছিল। এর অর্থ এই খুলি যেখানে পাওয়া গিয়েছিল সেখানকার প্রত্নতাত্ত্বিক দিক সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। যেমন- সেখানে পাথরের তৈরি কী ধরনের হাতিয়ার ব্যবহার করা হতো এবং ওই এলাকায় সাংস্কৃতিক আরও কী ধরনের উপাদান ছিল সেসব বিষয় অজ্ঞাত রয়ে গেছে।

নতুন প্রজাতির মানবের এই খুলিটি পাওয়া যায় ১৯৩৩ সালে। হারবিনের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত সঙ্গুয়া নদীর ওপর একটি সেতু তৈরির সময় একজন নির্মাণ শ্রমিক এর সন্ধান পান। যে সময় এই খুলিটি পাওয়া যায় সে সময়ে এই শহরটি ছিল জাপানের অধীনে।

চীনা শ্রমিকটি মনে করেছিলেন, এই খুলির সাংস্কৃতিক মূল্য অনেক এবং এ কারণে তিনি এটিকে লুকিয়ে বাড়িতে নিয়ে যান যাতে খুলিটি জাপানিদের হাতে চলে না যায়।

নিজের বাড়ির কূপের একেবারে তলায় তিনি খুলিটি লুকিয়ে রাখেন। সেখানে এটি ছিল প্রায় ৮০ বছর। লোকটি মারা যাওয়ার আগে তার পরিবারের সদস্যদের এই খুলির কথা বলে যান এবং পরে তাদের মাধ্যমেই এটি বিজ্ঞানীদের হাতে এসে পৌঁছায়।

এর আগেও চীনে প্রাচীনকালের আরও কিছু মানব দেহাবশেষের জীবাশ্ম পাওয়া যায়। ড্রাগন ম্যান এরকমই সবশেষ আবিষ্কার। আগে যেসব জীবাশ্ম পাওয়া গেছে সেগুলোকে আলাদা করে শ্রেণিভুক্ত করা কঠিন ছিল। এর আগে যেসব জীবাশ্ম পাওয়া গেছে সেগুলো দালি, জিন্নিওশান, হুয়ালংডং এবং তিব্বতীয় অঞ্চলের। এসব দেহাবশেষ হোমো স্যাপিয়েন্স, নিয়েন্ডারথালস কিম্বা ডেনিসোভান্স অথবা একেবারেই ভিন্ন কোনো প্রজাতির মানবের কি না, সে বিষয়ে তীব্র বিতর্ক হয়েছে।

রাশিয়ার ডেনিসোভা গুহায় ৩০৫০ হাজার বছর পুরনো একটি আঙ্গুল পাওয়া গিয়েছিল। সেই আঙ্গুলের ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে এই ডেনিসোভান্স প্রজাতি সম্পর্কে প্রথম ধারণা পাওয়া যায়।

কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মার্তা মিরাজন লাহর বিশ্বাস করেন এই ড্রাগন ম্যানই আসলে ডেনিসোভান। ‘অতীতের সবচেয়ে রহস্যময় জনগোষ্ঠী এই ডেনিসোভান্স। তিব্বতীয় মালভূমিতে যে চোয়ালের হাড় পাওয়া গেছে তার ডিএনএ থেকে মনে হয় সেটিও ছিল একজন ডেনিসোভানের’,- বলেন তিনি। ‘আর এখন চোয়ালের হাড় যেহেতু তিব্বতের এবং ড্রাগন ম্যানকে একই রকমের বলে মনে হচ্ছে- আমরা হয়তো এই প্রথমবারের মতো ডেনিসোভানের মুখ পেয়ে গেলাম।’

সম্প্রতি ইসরায়েলেও নিয়েন্ডারথালের সম্ভাব্য পূর্বসূরির কিছু দেহাবশেষ পাওয়া যায়। ওই জীবাশ্মটি নিয়ে যারা গবেষণা করছেন তারা বলছেন, লেভান্ত অঞ্চলের প্রথম মানবগোষ্ঠী থেকে এই ড্রাগন ম্যানের আবির্ভাব ঘটতে পারে।

তবে চীনা গবেষকরা বলছেন, পূর্বএশিয়ায় যেসব জীবাশ্ম পাওয়া গেছে সেগুলো শ্রেণিভুক্ত করা কঠিন, কিন্তু এসব জীবাশ্ম থেকে নতুন প্রজাতির মানবের ক্রমবিবর্তন সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

প্রফেসর নি বলেন, ‘এই ফলাফল প্রচুর বিতর্কের জন্ম দেবে এবং আমি নিশ্চিত যে অনেকেই আমাদের সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশ করবেন। তবেই এটাই বিজ্ঞান এবং এই মত-বিভেদের কারণেই বিজ্ঞান সামনের দিকে অগ্রসর হয়।’

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
২০২০© এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ*
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Smart iT Host