জননী সাহসিকা দেশে নারী জাগরণের অগ্রদূত কবি সুফিয়া কামাল। প্রগতিশীল সমাজ বিনির্মাণের এ স্বপ্নদ্রষ্টার ১১১তম জন্মদিন আজ।
এ মহীয়সী নারী আজীবন মুক্তবুদ্ধির চর্চার পাশাপাশি সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদের বিপক্ষে সংগ্রাম করেছেন।
সাহিত্যচর্চার পাশাপাশি গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন। কবির জন্মদিন উপলক্ষ্যে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেছেন, কবি বেগম সুফিয়া কামাল একদিকে ছিলেন আবহমান বাঙালি নারীর প্রতিকৃতি, অন্যদিকে বাংলার প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে ছিল তার আপসহীন ও দৃপ্ত পদচারণা।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার চিন্তাধারা ও প্রতিজ্ঞা কবি সুফিয়া কামালের জীবনে সঞ্চারিত হয় ও সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলে।
তার দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্রীনিবাসের নাম ‘রোকেয়া হল’ রাখা হয়। ১৯৬১ সালে পাকিস্তান সরকার বেতারে রবীন্দ্রসংগীত প্রচার নিষিদ্ধ করলে এর প্রতিবাদে আন্দোলন গড়ে তোলেন। শিশু সংগঠন ‘কচিকাঁচার মেলা’র তিনি প্রতিষ্ঠাতা।
১৯১১ সালের ২০ জুন বরিশালের শায়েস্তাবাদে সুফিয়া কামালের জন্ম। সাহিত্যচর্চার পাশাপাশি দীর্ঘ কর্মজীবনে সুফিয়া কামাল মহান মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচারবিরোধী গণআন্দোলন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলন, নারীমুক্তির আন্দোলনসহ বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় সাহসী ভূমিকা রেখেছেন।
১৯৫৬ সালে ‘কচিকাঁচার মেলা’ প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৬১ সালে ছায়ানটের সভাপতি, ১৯৬৯ সালে গণআন্দোলনের সময় মহিলা সংগ্রাম কমিটির সভাপতি, ১৯৭০ সালে মহিলা পরিষদ গঠন ও ওই সময় অসহযোগ আন্দোলনে নারী সমাজের নেতৃত্ব দেন।
১৯৯৯ সালের ২০ নভেম্বর সুফিয়া কামাল ঢাকায় মারা যান। সাহিত্য ও অন্যান্য ক্ষেত্রে অবদানের জন্য জীবিতকালে কবি সুফিয়া কামাল প্রায় ৫০টি পুরস্কার লাভ করেন।
যার মধ্যে রয়েছে-বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬২), লেনিন পদক (১৯৭০, সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে), একুশে পদক (১৯৭৬), নাসিরউদ্দিন স্বর্ণপদক, রোকেয়া পদক, জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কার (১৯৯৫) ও স্বাধীনতা দিবস পদক। ১৯৬৯ সালে পাকিস্তান সরকার তাকে ‘তমসা-ই-ইমতিয়াজ’ পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দিলে কবি সুফিয়া কামাল তা প্রত্যাখ্যান করেন।