চাল, ভোজ্যতেল, পেঁয়াজ, আলু ও সবজির চড়া দামের মধ্যে ডালের বাড়তি দর বিপাকে ফেলছে মানুষকে। বৃহস্পতিবার ঢাকার কারওয়ান বাজারের খুচরা দোকানে ছোট দানার মসুর ডাল ১০০ থেকে ১১৫ টাকা ও মোটা দানা ৭০ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়। একই বাজারে প্যাকেটজাত মসুরের ডাল ১২৫ থেকে ১৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছিলেন বিক্রেতারা।
দেশে ডালের দাম বেশ কয়েক মাস স্থিতিশীল ছিল। নতুন করে মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে খুচরা বিক্রেতারা পাইকারি বাজারে দাম বৃদ্ধিকে দায়ী করছেন। পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারেই বাড়তে শুরু করেছে।
চট্টগ্রামের বড় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বিএসএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল বশর চৌধুরী বলেন, ভারত আমদানি বাড়াতে ডালে শুল্ক কমানোর মেয়াদ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারণ করেছে। তাদের বাড়তি চাহিদার কারণে কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার বাজার বাড়ছে। ৫০ ডলারের মতো বেড়ে মসুর ডাল টনপ্রতি ৬২৫ ডলার ছাড়িয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এদিকে দীর্ঘদিন ধরেই রাজধানীতে সবজির বাজার চড়া। এরই মধ্যে আগাম শীতকালীন সবজি বাজারে উঠতে শুরু করেছে। তবে এসব সবজি সাধারণ মানুষের নাগালে নেই। রাজধানীর তিনটি কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ সবজির প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৮০ টাকা। কোনো কোনো সবজির দাম আরও বেশি।
মালিবাগ বাজারে গতকাল টমেটো ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, মুলা ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা, শসা, ঝিঙে, ঢ্যাঁড়স ও পটোল ৬০ থেকে ৭০ টাকা, কাঁকরোল ও গাজর ৮০ টাকা, শিম ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা এবং বেগুন ৭০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। এই বাজারে ছোট আকারের ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতিটি ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি করেন বিক্রেতারা।
আলুর দাম আর কমেনি। সরকারনির্ধারিত দরেও আলু বিক্রি হচ্ছে না। মালিবাগ, খিলগাঁও রেলগেট ও কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি আলু আকারভেদে ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি করেন বিক্রেতারা। সরকারনির্ধারিত দর প্রতি কেজি ৩৫ টাকা। বাজারে নতুন আলু উঠতে শুরু করেছে। কেজি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা।
ডিমের দাম কিছুটা কমেছে। প্রতি ডজন (১২টি) ফার্মের বাদামি ডিমের দাম ১০০ থেকে ১০৫ টাকা এবং দেশি মুরগির ডিম ১৮০ টাকা ও হাঁসের ডিম ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়। মালিবাগ বাজারের ডিম বিক্রেতা মো. শরীফ হোসেন বলেন, ডিমের দাম ডজনপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
আমদানি করা পেঁয়াজের দাম তুলনামূলক কম। দাম বেশি দেশি পেঁয়াজের। বাজারে আমদানি করা পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৬০ টাকা ও দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৯০ টাকার আশপাশে বিক্রি হয়। তিনটি বাজারেই চীনা রসুনের দাম ছিল প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা এবং দেশি রসুন ১২০ থেকে ১৪০ টাকা।
মালিবাগ বাজারে কেনাকাটা করতে যাওয়া প্রকৌশলী সৈয়দ মুজতবা বলেন, বাজারে শীতের যতগুলো সবজি উঠেছে, সব কটির দাম বেশি। এত দাম দিয়ে তো সবাই কিনতেও পারবেন না। আসলে এখন সবকিছুর দামই বাড়তি।