‘সিনেমা হল বাঁচাতে হলে যত যাই বলেন শাকিব খানের ছবি লাগবে, না হলে সিনেমা হল বাঁচানো যাবে না। একমাত্র শাকিব খানই আছে যার ছবি মানুষজন, আমাদের হলে লোক হয়, তাছাড়া লোক হয় না। আমাদের হলের স্টাফ ১৪ জনের এখন এই যে প্রতি শো’তে ৪-৫ জন লোক হয় এটা দিয়ে খরচ কিভাবে উঠাই?’
কথাগুলো বলছিলেন উত্তরবঙ্গের বৃহৎ প্রেক্ষাগৃহ জয়পুরহাটে অবস্থিত পৃথিবী সিনেমা হলের মালিক এস এম সুমন। বুধবার বিকেলে কালের কণ্ঠের সঙ্গে আলাপকালে এভাবেই করোনা পরবর্তী সিনেমা হলের দর্শক উপস্থিতি প্রসঙ্গে বলছিলেন। সুমনরা তিন ভাই সমন্বিত ভাবে এই সিনেমা হল ব্যবসা করছেন। এছাড়াও শহরের নাজমা সিনেমা হলটিও তারা ভাড়া নিয়ে পরিচালনা করে থাকেন।
করোনার কারণে বন্ধের প্রায় সাত মাস পর খুলেছে দেশের প্রেক্ষাগৃহগুলো। অর্ধেক আসন খালি রাখা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে ১৬ অক্টোবর থেকে প্রেক্ষাগৃহগুলোতে সিনেমা দেখানোর অনুমতি দিয়েছে তথ্য মন্ত্রণালয়।
সুমন বলেন, ‘আসলে সিনেমা হল চালাতে হলে সেভাবেই চালাতে হবে, আমাদের উচিৎ হয়নি সিনেমা হল খোলা। শাকিব খানের নতুন ছবি এলে সিনেমা হল চলতো। এখন মনে হচ্ছে হল খুলে ভুল করছি। আশা করছি শিগগির শাকিব খানের ছবি আমরা হলে চালাতে পারবো, ঢাকার যারা সংশ্লিষ্ট রয়েছেন তারা হল বাঁচানোর জন্য হলেও শাকিবের ছবি মুক্তি দেবেন।’
নতুন ছবি মুক্তি না পাওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু কালের কণ্ঠকে বলেন, সিনেমা হল খোলার শুরু থেকেই চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিকে গতিশীল করার উপায় ছিল। প্রয়োজন ছিল প্রযোজক সমিতি, হল মালিক সমিতি ও সরকারকে নিয়ে একটি ত্রিপক্ষীয় মিটিং। নতুন নিয়ম অনুযায়ী অর্ধেকসংখ্যক আসন পূর্ণ করে সিনেমা হলগুলো চলবে। এতে করে যদি কোনো নতুন সিনেমা মুক্তি দেওয়া হয়, তাহলে তার রেন্টাল উঠবে না। হল মালিক উঠাতে পারবেন না খরচ, প্রযোজক উঠাতে পারবেন না তার লগ্নি। যার ফলে নতুন ছবি মুক্তি দিতে রাজি নন প্রযোজকরা।
এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণের উপায়ও বাতলে দিলেন বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির এই নেতা। তিনি বলেন, ‘ত্রিপক্ষীয় মিটিংয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিকে গতিশীল করা সম্ভব। যেহেতু অর্ধেক আসনে সিনেমা হলগুলো চলবে, সেহেতু বাকি অর্ধেক আসনের ভর্তুকি বা প্রণোদনা সরকারকে দিতে হবে। এতে করে নতুন নতুন ছবি প্রযোজকরা মুক্তি দিতে এগিয়ে আসবেন।’