বিশেষ প্রতিনিধি : ভুমি মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও পাবনা-৩(ভাঙ্গুড়া,চাটমোহর,ফরিদপুর)আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ মো: মকবুল হোসেন বলেছেন, বিএনপি নেতাদের সেই হুংকার কোথায় গেল ? তারা ঘোষনা করেছিলেন ১০ ডিসেম্বরের পরে দেশ চলবে খালেদা জিয়ার কথায় ! খালেদা জিয়া নিজেই তো জেল কয়েদি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দয়ায় তিনি বাড়িতে থাকার সুযোগ পেয়েছেন। তিনি আরো বলেন,খালেদা জিয়ার কথায় দেশ চলবে না। এখনো শেখ হাসিনাই দেশ চালাচ্ছেন। বিএনপির এটা দু:স্বপ্ন! দেশের উন্নয়নে দিশেহারা হয়ে বিএনপি এখন আবোল তাবল বকছে। জঙ্গী আর আগুন সন্ত্রাসী দল জামাত-বিএনপিকে বাংলাদেশের মানুষ ক্ষমতায় দেখতে চায়না। বাংলাদেশের মানুষের আস্থা আওয়ামীলীগের উপর,দেশ রত্ন শেখ হাসিনার উপর। তাই আগামীতেও দেশের মানুষের সমর্থন নিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই সরকার গঠিত হবে ইনশাল্লাহ।
রোববার(১৫ জানুয়ারি)পাবনার ভাঙ্গুড়া পৌরসভার “ছাঁয়া কু্ঞ্জ ” নামে আধুনিক পার্ক উদ্বোধন অনুষ্ঠান উপলক্ষে বড়ালব্রিজ খেলার মাঠে আয়োজিত এক নাগরিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আলহাজ মো: মকবুল হোসেন এমপি এসব কথা বলেন।
ভাঙ্গুড়া পৌরসভার মেয়র গোলাম হাসনাইন রাসেল এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন ভাঙ্গুড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো: বাকি বিল্লাহ ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান।
উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইমরান হাসান আরিফ এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আব্দুল জব্বার ছানা মাষ্টার,সিনিয়র সহসভাপতি জাকির হোসেন ছবি,সহসভাপতি অধ্যক্ষ সাইদুল ইসলাম,পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান ওসমান গনি প্রামানিক,জেলা পরিষদ সদস্য আসলাম আলী,উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আজিদা পারভিন পাখি,সরকারি হাজী জামাল উদ্দিন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রতাপ কুমার মন্ডল,ভাঙ্গুড়া বাজার বণিক সমিতির সভাপতি অধ্যক্ষ মো: শহিদুজ্জামান,পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি ওমর ফারুক প্রমুখ।
এমপি মকবুল হোসেন বলেন ১৯৭০ সালে ক্ষমতায় ছিলেন পশ্চিম পাকিস্তানিরা কিন্তু দেশ চলেছে বঙ্গবন্ধুর কথায় – এমন ঘটনা পৃথিবীতে বিরল। সেদিন ৭ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানের ঐতিহাসিক ভাষনে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতাকামী লাখো মানুষের স্বতস্ফুর্ত সমাবেশে বলেছিলেন, “আজ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,অফিস-আদালত সব অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ থাকবে। সরকারি কর্মচারীরা মাসের ২৮ তারিখে বেতন নিয়ে আসবেন ….। আমি যদি হুকুম দিবার নাও পারি , তোমরা সব বন্ধ করে দেবে…। তোমাদের যা কিছু আছে ,তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করবে …। এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম,এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম,।” সেদিন দেশের মানুষ পাকিস্তানি শাসকের কথা শোনেনি। বঙ্গবন্ধুর কথায় যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে এ দেশের ৩০ লক্ষ মানুষ জীবন দিয়েছে। তবেই এসেছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা। এমন ক্ষণজন্মা পুরুষ আর জন্মাবে না। তাঁর কন্যা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৪ বছর একটানা ক্ষমতায় রয়েছেন। এ সময় প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অভাবনীয় উন্নতি সাধন হয়েছে। চৌদ্দ বছর আগের ঢাকা আর বর্তমান ঢাকার মধ্যে পার্থক্য আকাশ-পাতাল। অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতির মডেল পৃথিবীতে আজ সমাদৃত হয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ অচিরেই স্মার্ট বাংলাদেশে রুপান্তরিত হবে ইনশাল্লাহ। তিনি বলেন বাংলাদেশের মানুষ আর ভুল করবেনা। এ দেশের স্বাধীন সত্তায় বিশ্বাসী মানুষ খালেদা নয়- বঙ্গবন্ধু আর তাঁর কন্যার কথায় চলবে।
ভাঙ্গুড়া পৌরসভার উদ্যোগে ছাঁয়া ক্ঞ্জ পার্ক স্থাপন প্রসঙ্গে আলহাজ মকবুল হোসেন তার বক্তব্যে বলেন,মানুষের মৌলিক চাহিদা পুরনের পাশাপাশি নাগরিকের বিনোদনের জন্য সরকার নানামুখি কর্মসূচী বাস্তবায়ন করছে। ছাঁয়া ক্ঞ্জ তারই দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে বলেন,পৌরসভার মেয়র গোলাম হাসনাইন রাসেল এর এসব কর্ম এখানকার মানুষের কাছে চীর স্মরণীয় হয়ে থাকবে। পৌরসভার সর্বস্তরে নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধি,রাস্তা-ঘাট নির্মাণ,শিশু কু্ঞ্জ ও ক্ঞ্জু পবনসহ বিনোদন পার্ক নির্মাণে মেয়রের ব্যাপক রুচিশীলতার পরিচয় মেলে।
আধুনিক ভাঙ্গুড়ার প্রাক ইতিহাস প্রসঙ্গে তিনি বলেন,১৯৮১ সালের আগ পর্যন্ত এটি ফরিদপুর থানার একটি ইউনিয়ন ছিল মাত্র। তাঁর পিতা হাজী মো: মহসীন আলীসহ এখানকার গুণি মানুষের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভাঙ্গুড়া ইউনিয়নকে থানায় রুপান্তরের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তার ফলশ্রুতিইে ভাঙ্গুড়া বর্তমান রুপ লাভ করে। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে বঙ্গবন্ধু কন্যা সেই ভাঙ্গুড়ার সাথে রাজধানীর আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ,স্বাস্থ্য,শিক্ষা,কৃষি প্রভৃতি ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করেছেন। একই সঙ্গে পাবনা-৩ এলাকার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে আওয়ামীলীগ সরকার ব্যাপক উন্নয়ন ঘটিয়েছেন।
তিনি বলেন ভাঙ্গুড়া,ফরিদপুর ও চাটমোহর উপজেলার মানুষ একাত্মা হয়ে শেখ হাসিনার প্রতি অবিচল আস্থাশীল থেকে আমাকে তারা জাতীয় সংসদে তিনবার প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ করে দিয়েছেন। তিনি আশা করেন ভবিষ্যতেও প্রতিনিধি নির্বাচনে এই এলাকার মানুষ বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌত্ব রক্ষায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামীলীগের প্রার্থীকেই ভোট দিবেন।
উল্লেখ্য হাজী গয়েজ উদ্দিন মহিলা মাদ্রাসা ও বড়ালব্রিজ রেল স্টেশন এর দক্ষিণ পাশে খেলার মাঠ সংলগ্ন পুকুর পারের মনোরম পরিবেশে “ছাঁয়া ক্ঞ্জু” নামে এই আধুনিক পার্কটি স্থাপন করেন ভাঙ্গুড়া পৌরসভার মেয়র গোলাম হাসনাইন রাসেল। এখানে শিশুদের বিনোদনের জন্য যেমন বিভিন্ন ইলেট্রিক রাইড রয়েছে। তেমনি পার্কে “বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ” শিরোনামের ওয়ালে মুক্তিযুদ্ধে জাতির জনকের ঐতিহাসিক ভুমিকার প্রমানাদির উৎকৃষ্ট উদাহরণ হিসাবে তৎকালিন নিরভিক-সাহসী দৈনিক ইত্তেফাকসহ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ,মুক্তিযুদ্ধের দলিল,বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর অবদান ও তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদর্শিত হয়েছে। এছাড়াও পার্কে সুদর্শন ওয়াকওয়ে, দর্শনার্থীদের বসার ব্যবস্থা ও রাতে আলোর স্থাপনা শৈলীতে হয়ে উঠেছে দর্শনীয়।
পরে প্রধান অতিথি পার্কের প্রধান ফটকে ফিতা কেটে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পরই এখানে মানুষের উপচে পড়া ভীড় লক্ষ্য করা যায়। পার্কটি স্থাপন করায় এটি মেয়র গোলাম হাসনাইন রাসেলের অসাধারণ কীতি বলে দর্শনাথীদের মুখে মুখে আলোচনা শোনা যায়।