ভাঙ্গুড়া(পাবনা)প্রতিনিধি : আবহমান গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা উপভোগ করতে বৃহস্পতিবার (০৮ অক্টোবর) বিকালে পাবনার ভাঙ্গুড়ায় বিল পাড়ে লাখো মানুষের ঢল নামে। উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের মাগুরা গ্রামের অধিবাসীরা এ নৌকা বাইচের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন ভুমি মন্ত্রণালয় সম্পকিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও পাবনা-৩ এলাকার সংসদ সদস্য আলহাজ মো: মকবুল হোসেন। তবে রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যস্ত থাকায় তিনি উপস্থিত থাকতে পারেননি।
চলনবিলের দিলপাশার ইউনিয়নের চারিদিকে শুধু পানি পানি আর পানি। দূর-দূরান্ত থেকে নৌকা বাইচ দেখতে মাগুরার বিলপাড়ে এসেছেন নানা বয়সী হাজার হাজার মানুষ। বিলের মধ্যে বড় একটি নৌকা দিয়ে বানানো হয়েছে মঞ্চ। সেখানে আমন্ত্রিত অতিথিরা বসে বাইচ উপভোগ করছেন। মঞ্চের দুই পাশে সারিবদ্ধ ভাবে কয়েকশ ইঞ্জিনচালিত ট্রলারসহ ছোট-বড় নৌকা রাখা হয়। বাইচ শুরু হলে টান টান উত্তেজনার মধ্যে আগত দর্শনার্থীরা তাদের পছন্দের নৌকাকে ঊৎসাহিত করে। বহুদিন পরে এমন প্রতিযোগিতা দেখতে পেয়ে খুশি সবাই।
মাগুরা গ্রামের মোঃ মোজাহার আলী সরদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভাঙ্গুড়া পৌর সভার মেয়র গোলাম হাসনাইন রাসেল, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আজিদা পারভীন পাখি,জেলা পরিষদের সদস্য আসলাম আলী ও গুলশাহানারা লিপি,উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি জাকির হোসেন ছবি,সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সাইদুল ইসলাম ও দিলপাশার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শ্রী অশোক কুমার ঘোষ প্রোণোসহ উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।
চুড়ান্ত প্রতিযোগিতায় ‘মাগুড়া সবুজ বাংলা’ চ্যাম্পিয়ন হয়। আর রানার্স আপ হয় নাসির এক্সপ্রেস। সোনার তরী’ তৃতীয় স্থান লাভ করে। পরে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। মাগুড়া সবুজ বাংল ‘র সত্তাধিকারী মো: আলাউদ্দিন সরদার চ্যাম্পিয়ন পুরস্কার হিসাবে ৮০ সিসি একটি মটর সাইকেল লাভ করেন। রানার্স আপ লাভ করেন একটি ফ্রিজ। এ ছাড়া অন্যান্য প্রতিযোগীকেও সান্তনা পুরস্কার দেওয়া হয়।
এর আগে সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা উপভোগ করেন ভাঙ্গুড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ মো: বাকি বিল্লাহ,ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম হাফিজ রনজু প্রমুখ।
নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার মুখপাত্র প্রভাষক মো: গিয়াস উদ্দিন বলেন,বিশাল আয়োজন ছিল এটি । লাখো মানুষের উপস্থিতি ঘটে এখানে। বিলের মধ্যে বাইচ হওয়ার কারণে দর্শকরা সবাই ছিল নৌকায়। এ কারণে হাজার হাজার নৌকার সমাগম ঘটেছিল। চলনবিলের বিশাল অংশে এ আয়োজন হওয়ায় সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করা সম্ভব হয়। আর সবকিছু অত্যন্ত শান্তিপুর্ন ভাবে সমাপ্ত হয়। একারণে সকলকে ওই মুখপাত্র ধন্যবাদ জানান। নৌকা বাইচের আয়োজন করেন মাগুড়া গ্রামের অধিবাসীরা।
এ প্রতিযোগিতায় মাগুড়া সবুজ বাংলা,বিজয় বাংলা ৭১,হিরার তরী,আল্লাহ ভরসাসহ মোট বারোটি নৌকা অংশ গ্রহণ করে।