পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছোট বোন শেখ রেহানা ও রেহানার মেয়ে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতার সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন জমার জন্য আগামী ১২ মে তারিখ নির্ধারণ করেছেন আদালত।
রোববার (২৭ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি প্রতিবেদন জমার নির্ধারিত তারিখ ছিল। তবে পুলিশ কর্তৃপক্ষ প্রতিবেদন দাখিল করতে না পারায় আদালত নতুন করে ১২ মে দিন ধার্য করেন। দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহম্মেদ সালাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, গত ১৩ এপ্রিল আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করে শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, টিউলিপ সিদ্দিকসহ ৫৩ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন। একইসঙ্গে গ্রেফতার সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমার জন্য ২৭ এপ্রিল তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল।
দুদকের উপপরিচালক সালাহউদ্দিনের দায়ের করা মামলায় অভিযোগ করা হয়, পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠা প্লট বরাদ্দের জন্য নির্ধারিত নিয়ম অনুসরণ না করে অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে সুবিধা আদায় করা হয়। শেখ রেহানার বিরুদ্ধে ১৩ জানুয়ারি মামলা করা হয়, যেখানে শেখ হাসিনা ও টিউলিপসহ আরও ১৫ জনকে আসামি করা হয়। তদন্ত শেষে ১৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেন দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া।
একই প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগে শেখ রেহানার মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক এবং ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের বিরুদ্ধেও পৃথক মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলাগুলোতে শেখ হাসিনা, টিউলিপসহ আরও একাধিক সরকারি কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে।
আজমিনা সিদ্দিকের মামলায় টিউলিপ ও শেখ হাসিনাসহ মোট ১৮ জন এবং রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের মামলায় মোট ১৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।
চার্জশিটে তদন্ত কর্মকর্তারা উল্লেখ করেছেন, শেখ রেহানা, আজমিনা ও রাদওয়ান কোনো আবেদনপত্র ছাড়াই পূর্বাচল প্রকল্পের প্লট বরাদ্দ নেন। তাদের পক্ষে অনিয়মের আশ্রয় নেওয়া হয় এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করা হয়েছে।
জাতীয় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব অলিউল্লাহ, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, মেজর (অব.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, সাবেক পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, উপ-পরিচালক নায়েব আলী শরীফ, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদসহ আরও অনেকে।
আগামী ১২ মে আদালতে গ্রেফতার সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের মধ্য দিয়ে মামলার পরবর্তী ধাপ শুরু হবে। দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন ও প্রশাসনিক মহলে এ মামলার অগ্রগতি গভীর নজরদারির সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
সূত্র: এফএনএস